ডাচদের হারিয়ে সুপার এইটের পথে বাংলাদেশ, বিদায় শ্রীলঙ্কার

রিপোর্টার
  • আপডেট সময় শুক্রবার, ১৪ জুন, ২০২৪
  • ৫১ দেখা হয়েছে

ডেস্ক রির্পোট:- সেন্ট ভিনসেন্টে নেদারল্যান্ডসকে ২৫ রানে হারিয়ে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের সুপার এইটের পথে আরও এগিয়ে গেল বাংলাদেশ দল। ব্যাট হাতে রানে ফিরেছেন সাকিব আল হাসান। বল হাতে লেগ স্পিনের ভেলকি দেখিয়েছেন রিশাদ হোসেন। বাংলাদেশ অর্জন করল দুটি পয়েন্ট। শান্তদের জয়ে বিশ্বকাপ থেকে বিদায় নিশ্চিত হয়ে গেল শ্রীলঙ্কার।

শুরুতে দুই ওপেনারকে হারালেও মিডল অর্ডারে কার্যকর দুটি জুটিতে জয়ের সম্ভাবনাই জাগিয়ে তুলেছিল নেদারল্যান্ডস। ৩ উইকেটে তাদের স্কোর ছিল ১১১ রান। জিততে প্রয়োজন ছিল ৩৩ বলে ৪৯ রান। দলের সামনে হারের চোখ রাঙানি। তখন দায়িত্বটা যেন নিজের কাঁধে তুলে নিলেন রিশাদ হোসেন। পর পর দুই ওভারে ৩ উইকেট নিয়ে লণ্ডভণ্ড করে দেন ডাচদের ব্যাটিং অর্ডার। এর পরই ৬ রানে তারা হারিয়েছে ৪ উইকেট। ১৬০ রানের লক্ষ্য তাড়ায় নেমে ৮ উইকেটে ১৩৪ রানে থেমে যায় নেদারল্যান্ডসের ইনিংস।

২৩ রানে দুই উইকেট হারিয়েছে নেদারল্যান্ডস। পাওয়ার-প্লের প্রথম ৪ ওভারে ৪ বোলারকে ব্যবহার করেছে বাংলাদেশ। সফল হননি কেউই। নিজের দ্বিতীয় ওভারে প্রথম ব্রেকথ্রু এনে দেন তাসকিন আহমেদ। কাভারে তাওহিদ হৃদয়কে ক্যাচ দিয়ে লেভিট ফেরেন ১৬ বলে ১৮ রানে। ষষ্ঠ ওভারে ফিরতি ক্যাচে ম্যাক্স ও’ডাউডকে (১২) ফেরান তানজিম হাসান সাকিব।

দ্রুত দুই ওপেনার মাইকেল লেভিট ও ম্যাক্স ও’ডাউডকে ফিরেয়েও স্বস্তিতে ছিল বাংলাদেশ দল। বাংলাদেশের বোলারদের ওপর পাল্ট আক্রমণ চালিয়ে চাপ সামলে তৃতীয় উইকেটে ২৩ বলে ৩৭ রানের দারুণ এক জুটি গড়েন বিক্রমজিৎ সিং ও সাইব্র্যান্ড এঙ্গেলব্রেখট। ১০ম ওভারে বিক্রমজিৎকে ফিরিয়ে দলকে ব্রেক-থ্রু এনে দেন মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ।

চতুর্থ উইকেটে স্কট এডওয়ার্ডস ও এঙ্গেলব্রেখটের জুটিতে জয়ের আশা জাগায় নেদারল্যান্ডস। ২২ বলে ৩৩ রান করা এঙ্গেলব্রেখটকে ফিরিয়ে ৪২ রানের জুটি ভাঙেন রিশাদ। একই ওভারে ফেরান বাস ডি লিডকেও। পরের ওভারে মোস্তাফিজুর রহমান আউট করেন এডওয়ার্ডসকে (২৫)। তারপর আর ঘুর দাঁড়াতে পারেনি ডাচরা। রিশাদ ৩৩ রান দিয়ে ৩ উইকেট, তাসকিন নিয়েছেন ৩০ রান খরচ করে ২টি উইকেট।

তার আগে সাকিব আল হাসানের ফিফটিতে ডাচদের ১৬০ রানের রেকর্ড লক্ষ্য ছুড়ে দেয় বাংলাদেশ। সেন্ট ভিনসেন্টে টি-টোয়েন্টি সর্বোচ্চ ১৫৯ স্কোর জমা করে তারা। ২০১৩ সালে পাকিস্তান করেছিল ১৫৮ রান।

সর্বশেষ ২০২২ সালের অক্টোবরে গত টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের আগে ক্রাইস্টচার্চে পাকিস্তানের বিপক্ষে ফিফটি করেছিলেন সাকিব। তারপর টি-টোয়েন্টিতে আরেকটি ফিফটি পেতে সাকিবের অপেক্ষা ২০ মাস, ২০ ইনিংসের। শেষ পর্যন্ত অপরাজিত থেকে ৪৬ বলে ৯টি চারে ৬৪ রান করেন সাকিব। ১৩তম টি-টোয়েন্টি ফিফটি করে ফেরিয়ে গেছেন আড়াই হাজার রানও।

টস জিতে বাংলাদেশকে আগে ব্যাটিংয়ের আমন্ত্রণ জানান নেদারল্যান্ডসের অধিনায়ক স্কট এডওয়ার্ডস। ব্যাটিংয়ে বাংলাদেশের শুরু ছিল ভালো-মন্দে মিশ্র। চলতি টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে পাওয়ার-প্লেতে নিজেদের সর্বোচ্চ রানই আজ তোলে তারা। ৯.০০ ইকনোমিতে তুলেছে ৫৪ রান। স্কোরে ভালো রান জমা হলেও দলকে চাপে ফেলে গেছেন নাজমুল হোসেন শান্ত ও লিটন দাস।

যুক্তরাষ্ট্রের উইকেট ধীরগতির হওয়ায় ব্যাটাররা একদমই সহায়তা পাননি। ওয়েস্ট ইন্ডিজের সেন্ট ভিনসেন্টে অবশ্য আজ ব্যাটাররা ভালো সাহায়তাই পাচ্ছেন উইকেট থেকে। সেই সুযোগ লাগাতে ব্যর্থ হয়েছেন শান্ত-লিটন। দুজনই ফিরেছেন ব্যক্তিগত ১ রান করে।

প্রথম দুই ম্যাচের মতো নেদারল্যান্ডসের বিপক্ষেও বাংলাদেশের ওপেনিং জুটি দুই অঙ্কের রানে পৌঁছাতে পারেনি। আজ ওপেনিং জুটি ভেঙেছে ৩ রানে। তিন নম্বর থেকে পজিশন বদলে ওপেনিংয়ে ব্যাটিং করলেও ভাগ্য বদলায়নি শান্তর। দ্বিতীয় ওভারেই ফিরেছেন ড্রেসিংরুমে।

দুই ওপেনার বাঁহাতি হওয়ায় স্পিনার আরিয়ান দত্তকে বোলিং আক্রমণে নিয়ে আসে নেদারল্যান্ডস। প্রথম দুই ম্যাচে যিনি দলের একাদশেই সুযোগ পাননি। তাঁর প্রথম ওভারের দ্বিতীয় বল রিভার্স সুইপ করতে গিয়ে স্লিপে বিক্রমজিত সিংকে ক্যাচ দেন বাংলাদেশ অধিনায়ক। ফিরেছেন ৩ বলে ১ রান করে।

নিজের দ্বিতীয় ওভারে আরিয়ান ফেরান লিটন দাসকে। ২ বলে রান করা লিটন স্লগ সুইপে ছক্কা মারতে গিয়ে ক্যাচ তুলে দেন মিডউইকেটে। স্কয়ার লেগ থেকে মিডউইকেটে ছুটে গিয়ে ডাইভ দিয়ে অসাধারণ ক্যাচ নিয়েছেন সাইব্র্যান্ড এঙ্গেলব্রেখট।

২৩ রানে দুই উইকেট হারিয়ে বিপর্যয়ে পড়ে বাংলাদেশ। তৃতীয় উইকেটে তানজিদ তামিম ও সাকিব আল হাসানের দারুণ ব্যাটিংয়ে শুরুর বিপর্যয় সামলে উঠছিল তারা। এর মধ্যেই নিজের উইকেট যেন অনায়াসে দিয়ে ফেরেন তামিম! লেংথ থেকে কাঁধ পর্যন্ত লাফিয়ে ওঠা বলটা পুল করে ডিপ ব্যাকওয়ার্ড স্কয়ার লেগে বাস ডি লিডকে ক্যাচ দেন এ বাঁহাতি ওপেনার। দলীয় ৭১ রানে তৃতীয় উইকেট হারায় বাংলাদেশ। ভাঙে ৩২ বলে ৪৮ রানের জুটি। ৫টি চার ও একটি ছক্কায় তামিম খেলেছেন ২৬ বলে ৩৫ রানের ইনিংস।

প্রথম দুই ম্যাচে দারুণ দুটি ইনিংস খেলা তাওহিদ হৃদয় আজ আর ইনিংস বড় করতে পারেননি। টিম প্রিঙ্গেলর ঘূর্ণিতে বোল্ড হয়েছেন ১৫ বলে ৯ রানে। পঞ্ম উইকেটে মাহমুদউল্লাহ রিয়াদকে নিয়ে ৩২ বলে ৪১ রানের আরেকটি কার্যকর জুটি গড়েন সাকিব। ২টি করে চার ও ছক্কায় ২১ বলে ২৫ রানে ফেরেন মাহমুদউল্লাহ।

শেষ পর্যন্ত অপরাজিত থেকে ৪৬ বলে ৯টি চারে ৬৪ রান করেন সাকিব। ১৩ তম টি-টোয়েন্টি ফিফটি করে সাকিব ফেরিয়ে গেছেন আড়াই হাজার রানও। ৭ বলে ১৪ রান আসে জাকের আলী অনিকের ব্যাট থেকে। ৫ উইকেটে বাংলাদেশ তোলে ১৫৯ রান। নেদার‍ল্যান্ডসের আরিয়ান দত্ত ও পল ফন মিকেরেন ২টি করে উইকেট নিয়েছেন।

পোস্টটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরো
© All rights reserved © 2023 Chtnews24.net
Website Design By Kidarkar It solutions