শিরোনাম
ইসকন নিষিদ্ধের দাবিতে উত্তাল সারা দেশ চট্টগ্রামে আইনজীবী হত্যা : যৌথ বাহিনীর অভিযানে আটক ২০ পাঠ্যবই ছাপায় ‘সিন্ডিকেট দর’সরকারের গচ্চা ৮০০ কোটি বান্দরবানে চাঁদের গাড়ির সঙ্গে মুখোমুখি সংঘর্ষে মোটরসাইকেল আরোহী ম্রো যুবক আহত বান্দরবানে ইসলামী শিক্ষা কেন্দ্রের পরিচালকের অপসারণের দাবিতে সংবাদ সম্মেলন রাঙ্গামাটিতে পৌর সেবা সপ্তাহে ৩ শতাধিক রোগীকে বিনামূল্যে চিকিৎসা সেবা পার্বত্য চট্টগ্রাম মন্ত্রণালয় বিলুপ্তর দাবি তিন পার্বত্য জেলা পরিষদে পাহাড়ি-বাঙালি সমান সংখ্যক সদস্য চেয়ে হাইকোর্টে রিট, রুল জারি চট্টগ্রামে আইনজীবী হত্যার বিচার ও ইসকনকে নিষিদ্ধের দাবিতে রাঙ্গামাটিতে বিক্ষোভ মিছিল চিন্ময় ইস্যুতে ভারতকে কড়া বার্তা দিল বাংলাদেশ

আজ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের ৪৩তম শাহাদাতবার্ষিকী, সারাদেশে ১৫ দিনব্যাপী কর্মসূচি

রিপোর্টার
  • আপডেট সময় বৃহস্পতিবার, ৩০ মে, ২০২৪
  • ১০৯ দেখা হয়েছে

ডেস্ক রির্পোট:- আজ ৩০ মে। বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল-বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা, সাবেক প্রেসিডেন্ট ও বহুদলীয় গণতন্ত্রের পুনঃপ্রবর্তক জিয়াউর রহমানের ৪৩তম শাহাদাতবার্ষিকী। ১৯৮১ সালের এই দিবাগত রাতে চট্টগ্রাম সার্কিট হাউসে একদল বিপথগামী সৈনিকের হাতে তিনি শাহাদাত বরণ করেন। সেই থেকেই তার প্রতিষ্ঠিত দল বিএনপি দিবসটিকে জিয়াউর রহমানের শাহাদাৎবার্ষিকী হিসেবে পালন করে আসছে। প্রতিবছরই দিবসটি উপলক্ষে তাঁর মাজারে পুষ্পার্ঘ অর্পন, ফাতেহা পাঠ, দোয়া-মোনাজাতে অংশ নেন বিপুল সংখ্যক নেতাকর্মী। অনুষ্ঠিত হয় আলোচনা সভা, থাকে কয়েকদিন ব্যাপী কর্মসূচি। এবারও দলের প্রতিষ্ঠাতার শাহাদাতবার্ষিকী উপলক্ষে বিএনপি ২৮ মে থেকে ১১ জুন পর্যন্ত এক পক্ষকালব্যাপী সারাদেশে কর্মসূচি পালন করছে।
জিয়াউর রহমান তার ঘটনাবহুল কর্মময় জীবনের কারণেই মানুষের হৃদয়ে স্থান করে নিয়েছেন। তার সততা, নিষ্ঠা, দেশপ্রেম, পরিশ্রমপ্রিয়তা ও নেতৃত্বের দৃঢ়তাসহ প্রভৃতি গুণাবলী এদেশের গণমানুষের হৃদয় স্পর্শ করেছিল। জিয়াউর রহমান ১৯৩৬ সালের ১৯ জানুয়ারি বগুড়ার গাবতলীর বাগবাড়িতে মাতুলালয়ে জন্মগ্রহণ করেন। পিতা মনসুর রহমান কলকাতায় একজন কেমিস্ট হিসেবে সরকারি চাকরিতে নিয়োজিত ছিলেন। শৈশব ও কৈশোরের একটি সময় গ্রামে কাটিয়ে জিয়া পিতার সঙ্গে কলকাতায় এবং দেশ বিভাগের পর করাচিতে চলে যান। শিক্ষাজীবন শেষে ১৯৫৩ সালে পাকিস্তান মিলিটারি একাডেমি কাবুলে অফিসার ক্যাডেট হিসেবে ভর্তি হন। ১৯৫৫ সালে তিনি কমিশন লাভ করেন। ১৯৬৫ সালে পাক-ভারত যুদ্ধে খেমকারান সেক্টরে অসীম সাহসিকতার সঙ্গে একটি কোম্পানির অধিনায়ক হিসেবে যুদ্ধ পরিচালনা করেন। তার কোম্পানি যুদ্ধে সবচেয়ে অধিক খেতাব লাভ করে। সৈনিকজীবনে তিনি যেমন চরম পেশাদারিত্ব দেখিয়েছেন ঠিক জাতীয় সকল সঙ্কটকালেও শক্ত হাতে হাল ধরেছেন। ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ পাকিস্তানি বাহিনী যখন নিরস্ত্র জনতার ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ে। বিএনপির দাবি জিয়াউর রহমানই তখন চট্টগ্রাম কালুরঘাট বেতার কেন্দ্র থেকে স্বাধীনতার ঘোষণা দেন। নয় মাসের মুক্তি সংগ্রামে তিনি একটি সেক্টরের অধিনায়ক হিসেবে সমরনায়কের দায়িত্ব পালন করেন। বীরত্বের স্বীকৃতিস্বরূপ তিনি বীরোত্তম খেতাব লাভ করেন।
১৯৭৫ সালে তৎকালীন প্রেসিডেন্ট জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান নিহতের পর এক বিশেষ প্রেক্ষাপটে জিয়াউর রহমান রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্ব গ্রহণ করেন। ৩ নভেম্বর ব্রিগেডিয়ার খালেদ মোশাররফের নেতৃত্বে সামরিক অভ্যূত্থানে খন্দকার মোশতাক আহমদ ক্ষমতাচ্যুত হন এবং সেনাবাহিনীর তৎকালীন উপপ্রধান মেজর জেনারেল জিয়াকে গৃহবন্দী করা হয়। সেনাবাহিনীতে বিশৃঙ্খলা ছড়িয়ে পড়ে। চারদিকে এক অনিশ্চয়তার মধ্যে আধিপত্যবাদের শ্যেন দৃষ্টিতে উৎকণ্ঠিত ছিল সারা জাতি। এমসয় সিপাহি-জনতার মিলিত প্রয়াসে জিয়াকে মুক্ত করা হয় এবং নেতৃত্বের হাল ধরেন তিনি।
গভীর দেশপ্রেমের গুণাবলি দিয়ে জিয়াউর রহমান জাতির মধ্যে নতুন করে জাগরণের সৃষ্টি করেন। দেশের মানুষের উপযোগী একটি স্বতন্ত্র জাতীয়তাবাদী আদর্শের বাস্তবায়ন ঘটান। দেশে ঐক্যের রাজনীতি চালু করে সবাইকে এক কাতারে নিয়ে আসেন তিনি। তার প্রতিষ্ঠিত রাজনৈতিক দল বিএনপিতে একদিকে যেমন চরম বামপন্থীরা স্থান পায় তেমনি চরম ডানপন্থীরাও জায়গা করে নেন। তিনি বহুদলীয় গণতন্ত্র প্রবর্তন, বাক ও ব্যক্তি স্বাধীনতা ফিরিয়ে দেন। মাত্র ছয় বছরের জন্য রাষ্ট্র পরিচালনার সুযোগ পেয়ে ৫৪ বছরের জিয়া বিপুল জনপ্রিয়তা অর্জন এবং তলাবিহীন ঝুঁড়ির অপবাদ থেকে দেশ-জাতিকে মুক্ত করেন। বিশ্ব দরবারে বাংলাদেশ মাথা উঁচু করে দাঁড়ানোর সাহস জোগান। বাংলাদেশের সামরিক বাহিনীকে নতুনভাবে ঢেলে সাজিয়েছিলেন। মৃত্যুর পর ঢাকায় মানিক মিয়া এভিনিউয়ে অনুষ্ঠিত তাঁর স্মরণকালের নামাজে জানাজায় প্রমাণিত তিনি কত জনপ্রিয় ছিলেন।
শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে রাজধানীতে দুস্থদের মাঝে খাবার বিতরণ করা হবে। প্রতিবছর বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া শহীদ প্রেসিডেন্টের মাজারে শ্রদ্ধা নিবেদন ও নগরীর পথে পথে দুঃস্থদের মাঝে খাবার বিতরণ করতেন কিন্তু ২০১৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি কারাবন্দি হওয়ার পর থেকেই তিনি এসব কর্মসূচিতে অংশ নিতে পারছেন না। যদিও ২০২০ সালের ২৫ মার্চ থেকে তার বাসভবন ফিরোজাতে থাকলেও শর্ত সাপেক্ষে জামিন থাকায় তিনি এই কর্মসূচিতে থাকতে পারছেন না।
কর্মসূচি
জিয়াউর রহমানের ৪৩তম শাহাদাত বার্ষিকী উপলক্ষে ১৫ দিনের কর্মসূচি ঘোষণা করেছে বিএনপি। ঘোষিত কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে- শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের কবরে পুস্পমাল্য অর্পন, আলোচনা সভা, সেমিনার, আলোকচিত্র প্রদর্শনী, বিনামূল্যে মেডিকেল ক্যাম্প, রুহের মাগফেরাত কামনা করে দোয়া মাহফিল। দিবসটি উপলক্ষে আজ বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়সহ সারাদেশে দলীয় কার্যালযে দলীয় পতাকা অধনমিত এবং কালো পতাকা উত্তোরণ করা হবে। বিএনপিসহ অঙ্গসংগঠনগুলো জিয়াউর রহমানকে নিয়ে পোস্টার প্রকাশ ও বিভিন্ন দৈনিকে বিশেষ ক্রোড়পত্র প্রকাশিত হয়েছে। জিয়াউর রহমান শাহাদাত বার্ষিকী উপলক্ষে আজ ঢাকা মহানগর উত্তর-দক্ষিণের উদ্যোগে বিভিন্ন থানা ও ওয়ার্ডে ২৬টি স্পটে দুঃস্থদের মধ্যে খাবার ও বস্ত্র বিতরণ করবে। এর মধ্যে- আগাঁরগাও, হাইকোর্ট মাজার, সেগুনবাগিচা, নয়াপল্টন, শাজহাজানপুরে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, পল্লবীতে স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আব্দুল মঈন খান, শাহজাদপুরে ভাইস চেয়ারম্যান মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দিন আহমেদ বীর বিক্রম, মহাখালীতে উত্তরে আহ্বায়ক ডা. ফরহাদ হালিম ডোনার, কল্যাণপুর ও মিরপুর শাহী মসজিদে ভাইস চেয়ারম্যান আব্দুল আউয়াল মিন্টু, শাহ আলী মাজারে চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আতাউর রহমান ঢালী, নয়াবাড়ীতে স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান, কাফরুলের পুলপাড়, হারমান মাইনার কলেজ, জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে, সাদেক হোসেন খোকা সড়কে সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী দুঃস্থদের মাঝে খাবার ও বস্ত্র বিতরণ করবেন। এছাড়াও কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ অন্যান্য স্পটে একই কর্মসূচিতে অংশ নেবেন। ধারাবাহিক কর্মসূচির অংশ হিসেবে গতকাল রাজধানীর রমনা ইঞ্জিনিয়ার্স ইন্সটিটিউশন মিলনায়তনে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।

পোস্টটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরো
© All rights reserved © 2023 Chtnews24.com
Website Design By Kidarkar It solutions