শিরোনাম
শৃঙ্খলাভঙ্গের দায়ে সারদায় পুলিশের ২৫০ এসআইকে অব্যাহতি আন্তর্জাতিক সংস্থা কানেক্ট বাংলাদেশ ইন্টারন্যাশনাল(সিবিআই) ইউকে এর কার্যকরি কমিটি গঠিত বিতর্কে জড়ালেন রাষ্ট্রপতি, বাড়ছে পদত্যাগের চাপ কক্সবাজারের রোহিঙ্গা ক্যাম্পে একই পরিবারের তিন সদস্যকে গুলি করে হত্যা চট্টগ্রামের বাঁশখালীতে কাপড় ইস্ত্রি করতে গিয়ে বিদ্যুৎস্পৃষ্টে শিক্ষার্থীর মৃত্যু দিল্লি থেকে মীরাটের সেনানিবাসে শেখ হাসিনা? পদত্যাগপত্রের খোঁজ শাজাহান খানের ২৪ হাজার কোটি টাকার চাঁদাবাজি দুর্নীতির টাকায় ব্যাংক বানিয়েছেন আনিসুল,অবৈধ উপার্জনের প্রধান উৎস ছিল নিয়োগ-বাণিজ্য মিরপুরে ঘুরে দাঁড়াতে পারবে তো বাংলাদেশ!

এমপি আনার হত্যা নিয়ে ‘গা শিউরে ওঠা’ তথ্য পাওয়া গেল

রিপোর্টার
  • আপডেট সময় বৃহস্পতিবার, ২৩ মে, ২০২৪
  • ৭১ দেখা হয়েছে

ডেস্ক রির্টোট:- ভারতে চিকিৎসা করাতে গিয়ে খুন হয়েছেন সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজিম আনার। বিষয়টি সামনে এলে শুরু হয় নানা আলোচনা। বেরিয়ে আসতে থাকে একের পর এক গা শিঁউরে ওঠা তথ্য।

আনার হত্যার ঘটনা নিয়ে ভারতের পুলিশের একটি দল কাজ করছে। সেই সঙ্গে কাজ করছে ঢাকা মহানগর পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগও (ডিবি)। তদন্তে এখন পর্যন্ত অনেক তথ্য জানা গেছে বলে জানিয়েছেন ডিবিপ্রধান মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ।

বৃহস্পতিবার (২৩ মে) দুপুরে রাজধানীর মিন্টো রোডে নিজ কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এ কথা জানান তিনি।

হারুন অর রশীদ বলেন, এমপি আনারকে হত্যার পর খুনিরা তার দেহের মাংস হাড় থেকে আলাদা করে ফেলে। এরপর মাংসে হলুদের গুঁড়া ও মসলা মিশিয়ে ফ্রিজে রাখা হয়। পরে মাংস হিসেবে বাজারের ব্যাগে ভরে তা ট্রলিতে বাইরে নেওয়া হয়।

এর আগে এ হত্যাকাণ্ডের বিষয়ে আরও নানা তথ্য জানায় ডিবি। তারা বলে, পরিকল্পনা করেই হত্যা করা হয় এমপি আনারকে। ১৩ তারিখে তাকে হত্যা করা হয়। তবে ১৬ মে আনারের ফোন থেকে তার ব্যক্তিগত সহকারীর ফোনে ফোন করা হয়, কিন্তু ব্যক্তিগত সহকারী তার ফোনটি রিসিভ করতে পারেননি। পরে মোবাইলে যোগাযোগ করার চেষ্টা করে সফল হননি।

তদন্ত সূত্র বলছে, এমপি আনার নিখোঁজ থাকার পরও তার হোয়াটসঅ্যাপ নম্বর থেকে ভারতে তার ঘনিষ্ঠ বন্ধু গোপাল বিশ্বাসের মোবাইল ফোনে একটি বিশেষ বার্তা আসে।

তাতে লেখা ছিল, তিনি বিশেষ কাজে দিল্লি যাচ্ছেন। তিনি দিল্লি পৌঁছে গোপাল বিশ্বাসকে জানাবেন বলে জানান। তারপর গোপাল বিশ্বাসের মোবাইল ফোনে আরেকটি বার্তা আসে, তার সঙ্গে ভিআইপিরা রয়েছেন, ফোন করার দরকার নেই। ঠিক একই রকমের বার্তা এমপি আনারের পরিবার এবং ব্যক্তিগত সহকারী রউফের মোবাইল ফোনে পাঠানো হয়।

জানা যায়, পরিকল্পনা অনুযায়ী কলকাতার নিউ টাউনের সঞ্জীবনী গার্ডেনে ট্রিপ্লেক্স ফ্ল্যাট ভাড়া করেন মূল পরিকল্পনাকারী এমপির বন্ধু ও ব্যবসায়িক পার্টনার আক্তারুজ্জামান শাহীন। আগে থেকেই ভারতে অবস্থান করা কয়েক সন্ত্রাসীর সঙ্গে চুক্তি করেন তিনি। এরপর ৫ কোটি টাকার চুক্তিতে বাংলাদেশ থেকে ওই ফ্ল্যাটে ডেকে নিয়ে যান মূল কিলার চরমপন্থি নেতা আমানুল্লাহকে।

ঢাকার তদন্তসংশ্লিষ্ট সূত্র বলছে, শাহীন গত ৩০ এপ্রিল আমানুল্লাহকে নিয়ে কলকাতায় যান। সংসদ সদস্য আনার হত্যার ছক কষেন ওই ফ্ল্যাটে বসেই। এরপর সেখান থেকে ১০ মে দেশে ফেরেন শাহীন। তখন ওই ফ্ল্যাটে অবস্থান করেন শাহীনের বান্ধবী শিলাস্তি রহমান, মূল কিলার আমানুল্লাহ, জিহাদ, সিয়াম, মোস্তাফিজ ও ফয়সাল শাহীনের ভাড়া করা ফ্ল্যাটে অবস্থান করেন।

১৩ মে রাতে হত্যা মিশন বাস্তবায়ন করে আমানুল্লাহ, শিলাস্তি ও ফয়সাল দেশে ফেরেন। তাদের আটকের পর হত্যারহস্য উদ্ঘাটন হয়। তাদের কাছে পাওয়া যায় এমপি আনার হত্যার লোমহর্ষক কাহিনি।

তদন্তসংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, ওই ফ্ল্যাটে যাওয়ার পর আনারকে শাহীনের টাকার জন্য চাপ দেন আমানুল্লাহ ও তার সহযোগীরা। একপর্যায়ে আনারের গলায় চাপাতি ধরেন আমানুল্লাহ। এ নিয়ে ধস্তাধস্তি হয়। পরে বালিশ চাপা দিয়ে শ্বাসরোধে তাকে হত্যা করা হয়।

ঢাকা মহানগর পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগের (ডিবি) এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, কলকাতার ওই ফ্ল্যাট থেকে সব তথ্য দেশে অবস্থানকারী মূলহোতা শাহীনকে জানানো হয়। হত্যার পর আমানুল্লাহ ঘটনা জানান শাহীনকে। তখন শাহীন লাশ গুম করার নির্দেশ দেন।

আমানুল্লাহকে জিজ্ঞাসাবাদের বরাতে ডিবির ওই কর্মকর্তা বলেন, শাহীন আমানকে নির্দেশ দেন লাশ গুম করতে। সেই নির্দেশ পেয়ে আমান এমপি আনারের লাশটি কেটে টুকরো টুকরো করেন। এরপর বাইরে থেকে কিনে আনা হয় সাদা পলিথিন, ব্লিচিং পাউডার ও দুটি বড় সাইজের ট্রলি ব্যাগ। লাশ টুকরো করার পর তা ঢোকানো হয় পৃথক দুটি ট্রলিতে। লাশের টুকরোগুলো ব্যাগে ঢোকানোর পর বাইরে থেকে আনা ব্লিচিং পাউডার দিয়ে ওই ফ্ল্যাটের মেঝে পরিষ্কার করে ফেলা হয়।

সূত্র বলছে, এমপি আনোয়ারুল আজিমকে ১৩ মে হত্যা করা হলেও তার মরদেহের টুকরো ভর্তি প্রথম ট্রলিটি ওই বাসা থেকে বের করে সরানো হয় পর দিন ১৪ মে। ফ্ল্যাট কম্পাউন্ডের বাইরে নিয়ে পাশের একটি শপিংমলের সামনে দাঁড়ায় কিলার গ্রুপের দুই সদস্য। এরপর কিলার গ্রুপের সদস্য সিয়ামকে এই ট্রলি তুলে দেওয়া হয়। সিয়াম একটা গাড়িতে উঠে কিছুদূর যাওয়ার পর সেটি নিয়ে নেমে যান। এরপর এই ব্যাগ কোথায় নিয়ে গেছেন, তা আর জানাতে পারেননি আমানুল্লাহ। আরেকটি ব্যাগ ফ্ল্যাটে রেখেই ১৫ মে আমানুল্লাহ ও শাহীনের বান্ধবী শিলাস্তি আকাশপথে ঢাকায় চলে আসেন। অন্য ট্রলি ব্যাগটি মোস্তাফিজ, ফয়সালসহ অন্যরা সরিয়ে ফেলেন।

ডিবি সূত্র জানিয়েছে, আমানুল্লাহর নেতৃত্বে কিলার গ্রুপের সদস্য মোস্তাফিজ, ফয়সাল, জিহাদ ও সিয়াম হত্যামিশনে অংশ নেন। আমানুল্লাহ ও শিলাস্তি ঢাকায় ফেরার পর ১৭ মে মোস্তাফিজুর এবং পরের দিন দেশে ফেরেন ফয়সাল। সিয়াম ও জিহাদ অবৈধ পথে বাংলাদেশ থেকে ভারতে গিয়েছিল। তাদের অবস্থান শনাক্তের কাজ চলছে।

সূত্র জানায়, আমানুল্লাহ, শাহীন ও এমপি আনার পূর্বপরিচিত। তবে আমানুল্লাকে আনার হত্যায় বড় অঙ্কের টাকার বিনিময়ে কাজে লাগান শাহীন। চুক্তিবদ্ধ হয়ে আমানুল্লাহ ভাড়া করেন মোস্তাফিজুর ও ফয়সাল সাহাজিকে। আর শাহীন আগে থেকেই ভারতে জিহাদ ও সিয়ামকে ভাড়া করে রাখেন।

আনোয়ারুল আজিম হত্যার তদন্তের বিষয়ে ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার (ডিবি) মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ বলেন, ‘ঘটনাটি মর্মান্তিক। তিনি (আনার) ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ এলাকার জনপ্রিয় জনপ্রতিনিধি। তার হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় এলাকার মানুষ স্তম্ভিত। আমরা গুরুত্ব দিয়ে কাজ করছি। এটি নিষ্ঠুর হত্যাকাণ্ড, এটা মনে করেই তদন্ত কর্মকর্তারা কাজ করছেন। নিবিড়ভাবে ভারতীয় পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছি। কয়েকজন আমাদের কাছে আছে, তাদের কাছ থেকে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পাচ্ছি। তদন্তের স্বার্থে আমরা সবকিছু বলতে পারছি না।’

তিনি আরও বলেন, ‘কয়েকজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। বাকি যারা আছে, তাদের প্রত্যেককে আমরা আইনের আওতায় আনব। তদন্তের স্বার্থে নাম প্রকাশ করতে চাচ্ছি না।’

ডিবির অন্য এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, আনারের লাশের টুকরোগুলো কোথায়, তা জানার চেষ্টা চলছে। এ জন্য আমানুল্লাহকে প্রাথমিকভাবে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। তিনি দাবি করেছেন, ফ্ল্যাট থেকে লাশের টুকরো ভর্তি ট্রলি বের করার পর কয়েক ব্যক্তির হাত ঘুরে গুম করা হয়েছে। এ বিষয়ে তিনি জানেন না।

পোস্টটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরো
© All rights reserved © 2023 Chtnews24.net
Website Design By Kidarkar It solutions