ডেস্ক রির্পোট:- প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে উদ্দেশ্য করে বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব প্রফেশনালসের বঙ্গবন্ধু চেয়ার, অধ্যাপক ও ইতিহাসবিদ ড. সৈয়দ আনোয়ার হোসেন বলেছেন, আপনি জানিয়েছেন বঙ্গবন্ধুর দেখানো পথে হাঁটছেন। তাহলে বঙ্গবন্ধুর দেশে আমি হাসতে, খেতে, ওষুধ কিনতে পারছি না কেন? গতকাল শুক্রবার জাতীয় প্রেস ক্লাবের আব্দুস সালাম হলে এডুকেশন রিসার্চ অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট ফোরাম অব বাংলাদেশ (ইআরডিএফবি)-এর আয়োজনে ‘শেখ হাসিনার স্বদেশ প্রত্যাবর্তন-যোগাযোগ ব্যবস্থার অভাবনীয় সাফল্য’ শীর্ষক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। দেশে ওষুদের দাম অস্বাভাবিক ভাবে বেড়ে যাওয়ায় উদ্বেগ প্রকাশ করে তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু ১৯৭২ সালের ৯ মে রাজশাহীতে মাদরাসা ময়দানে পাঁচবার বলেছিলেন, ‘আমি চাই বাংলার মানুষ খেতে পারবে, পরতে পারবে, মুক্ত হাওয়ায় বসবাস করবে, প্রাণ খুলে হাসতে পারবে।’ প্রশ্ন হলো আমি কি হাসতে পারি এখন? বাজারে গেলে বাজার করতে পারি না কেন? আমিতো মোটামুটি মধ্যবিত্ত, সামাজিক পরিচিতি আমার আছে। আমি ওষুধ কিনতে পারি না কেন? ওষুধের দাম কত ভাগ বেড়েছে? বাড়বেই? বাজরে পণ্যের যে দাম তাকে মধ্যবিত্তরা কি প্রয়োজনীয় পণ্য কিনতে পারছেন?
ড. সৈয়দ আনোয়ার হোসেন বলেন, শেখ হাসিনা দেশে আসার পরে আমাদের অনেক কিছু হয়েছে, আমরা অনেক কিছু পেয়েছি। দেশ বিশ্বের দরবারে উন্নত মর্যাদার দেশ হিসেবে পরিচিতি পেয়েছে। কিন্তু তার প্রত্যাশা এবং প্রাপ্তির সমীকরণ এখনো এক হয়নি। তিনি আরও চান। কারণ তিনি বঙ্গবন্ধুর কন্যা, তার ধমনীতে বঙ্গবন্ধুর রক্ত। তিনি বলেন, পদ্মা সেতুর ফলে যোগাযোগ ব্যবস্থায় বৈপ্লবিক পরিবর্তন হয়েছে, এটি অনস্বীকার্য। কিন্তু বাংলাদেশে এখনো উন্নয়ন হয়নি কারণ বৈষম্য রেখে উন্নয়ন হয় না। সাম্প্রতিক বাজেটে অর্থাৎ আমলাতান্ত্রিক বাজেটে বৈষম্য কমানোর কোন উদ্যোগ নেই।
অধ্যাপক আনোয়ার বলেন, এফবিসিসিআই এর সভাপতি বৃহস্পতিবার বললেন, বিশ্ব ব্যাংক আমাদের কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নিয়মনীতি বারবার পাল্টানোর ফলে ব্যবসা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। কেন? তিনি বলেন,আমি সপ্তাহে ৫ দিন আমার অফিসে যাই। মিরপুর ১২ নম্বরে সেনানিবাসে। যে পথ দিয়ে আমি যাই, মাটিকাটা ভাঙ্গাচোরা। সেখানে গেলে আপনারা দেখবেন হারুণ মোল্লা (আওয়ামী লীগের এমপি) উড়াল সড়ক। আবার নিচ দিয়ে পথও আছে। দুটো কার (প্রাইভেট কার) একই সঙ্গে ছেড়েছে। আমার প্রশ্ন হলো, নিচ দিয়ে যদি আমি যাই, আড়াই মিনিট কম সময় লাগে। উপর দিয়ে গেলে আড়াই মিনিট সময় বেশি লাগে। এই অর্থ জনগণের অর্থ, কেন খরচ করা হয়? প্রধানমন্ত্রী, আপনার হাতেই প্রকল্পগুলো অনুমোদিত হয়েছে। আপনি উত্তর দিন।
প্রধানমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করে অধ্যাপক আনোয়ার বলেন, আপনি কয়দিন আগে বলেছেন, অপ্রয়োজনীয় প্রকল্প আর অনুমোদন দেবেন না। তাহলে কি এতদিন আপনি অপ্রয়োজনীয় প্রকল্প অনুমোদন করেছেন? আপনি বঙ্গবন্ধুর দেখানো পথে হাঁটছেন। তাহলে সেই বাংলাদেশে আমি কেন খেতে পারবো না, বাজার করতে পারবো না, ওষুধ কিনতে পারবো না? মুক্তিযুদ্ধের মধ্য দিয়ে অর্জিত আমাদের এই দেশ, ৩০ লাখ শহীদ, চার লাখ মা- বোনের সম্ভ্রমের বিনিময়ে এই দেশ। এই দেশতো ছিনতাই হয়েছিল। শেখ হাসিনা এসে উদ্ধার করেছেন।
অধ্যাপক আনোয়ার হোসেন বলেন, সাগর-রুনি হত্যাকা-ের প্রতিবেদন কেন ১০৮ বার পিছিয়েছে। মহামান্য আদালত কেন মানলো! নারায়ণগঞ্জের ত্বকি হত্যার মূল আসামি আমার চোখের সামনে চলাফেরা করছে। প্রধানমন্ত্রী আপনার কাছে বিচার চাই। মিতু হত্যার একটু নাড়াচাড়া হয়। তনু কুমিল্লা সেনানিবাসে হত্যা হয়েছিল। আমি চাই আপনি খুনের বিচার করুন। আমি সাগর-রুনি, ত্বকি, তনু, মিতু হত্যার বিচার চাই। আপনি দেশটাকে অনেক দূরে এগিয়ে নিয়েছেন। আমি আমার প্রত্যাশা প্রাপ্তির সমীকরণ চাই।