ডেস্ক রির্পোট;- বছরের ৫ মাস অতিক্রান্ত। আর নতুন বছরের ভর্তি সম্পন্ন হয়েছে ৬মাস হয়ে গেল। ডিসেম্বরের মধ্যে সরকারি নির্দেশে ভর্তি সম্পন্ন হওয়ায় ৬ মাস পরে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান কর্তৃক গৃহীত ভর্তি ফি চার কর্মদিবসের মধ্যে সরকারি কোষাগারে জমা দেয়ার নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
বুধবার মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের একটি চিঠি ওয়েব সাইটে প্রকাশ করা হয়। সহকারী পরিচালক এস এম জিয়াউল হায়দার হেনরি স্বাক্ষরিত ঐ পত্রে উল্লেখ করা হয়েছে, মাধ্যমিক স্তুরের সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ২০২৩-২৪ অর্থ বছরের গৃহীত ভর্তি ফি সংশ্লিষ্ট শিক্ষা প্রতিষ্ঠান কর্তৃক সরকারি কোষাগারে জমাদান সংক্রান্ত চালানের কপি গ্রহন পূর্বক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের তালিকা আগামী চার কর্মদিবসের মধ্যে অধিদপ্তরে প্রেরণের জন্য নির্দেশ ক্রমে অনুরোধ করা হল।
স্কুলে ভর্তির বিপুল পরিমান অর্থ এরই মধ্যে শিক্ষা সামগ্রী, শিক্ষকদের বেতন, ঈদে বোনাস এবং জাতীয় অনুষ্ঠানে আয়োজনে ব্যয় হয়ে গেছে বলে প্রধান শিক্ষকদের দাবি। কেউ কেউ মনে করছেন, বেসরকারি বিদ্যালয় জাতীয় করণের জন্য প্রাথমিক ধাপ এটি হতে পারে। তবে এ নিয়ে আলোচনা ছাড়া এতবড় সিদ্ধান্ত কিভাবে সম্ভব তা তারা ভেবে পাচ্ছেন না।
হালিমা খাতুন বালিকা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো, ফকরুজ্জমান জানান, দুই মাস আগেই সরকার অবসর ও কল্যান তহবিলের কথা বলে নতুন ছাত্রদের ভর্তির টাকা থেকে ১০০ টাকা করে নিয়েছে। এখন হঠাৎ করে ভর্তি ফি সরকারি কোষাগারে জমা দেয়ার এ সিদ্ধান্ত বজ্রপাতের সামিল। ৬ মাস আগে প্রাপ্ত ভর্তি ফি থেকে শিক্ষকদের বেতন, বোনাস, জাতীয় কর্মদিবস পালন, শিক্ষা সামগ্রীতেই ব্যয় হয়ে গেছে। কোন প্রকার পূর্ব নোটিশ ছাড়াই, শিক্ষক নেতৃবৃন্দকে পাস কাটিয়ে এমন পরিপত্রে বিস্মিত হয়েছেন তিনি।
শিক্ষক সমিতি ফেডারেশন বরিশাল জেলা শাখার সভাপতি মো. রেজাউল হক জানান, শিক্ষা বছরের ৫ মাস পর কোন প্রকার আলোচনা ছাড়া ভর্তি ফি সরকারী কোষাগারে জমাদানের পরিপত্রটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে অস্থিরতা সৃষ্টি করবে। এ মুহুর্তে কোন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের পক্ষেই এ অর্থ জমা দান প্রায় অসম্ভব বলে তিনি মনে করেন।
এ ছাড়াও ভর্তি ফি বলতে কোন সীমা রেখা উল্লেখ করা হয়নি। তিনি বলেন ভর্তি ফিতে সেশন চার্জ, খেলাধুলা ফি, বিদ্যুৎ- পানি চার্জসহ বিভিন্ন খাত থাকে। চিঠিটি সম্পূর্ন অস্পষ্ট বলেও তিনি দাবি করেন।
বাংলাদেশ শিক্ষক সমিতি বরিশাল জেলা শাখার সভাপতি সুনিল বরণ হালদার বলেন, এ ধরনের চিঠির সত্যতা নিয়ে প্রশ্ন আছে। কেন্দ্রীয় শিক্ষক নেতাদের পাস কাটিয়ে এত বড় একটি সিদ্ধান্ত নেয়ায় এর বাস্তবায়ন নিয়ে তিনি সন্দেহ প্রকাশ করেন। অচিরেই এ বিষয়টি সংগঠনের সভায় আলোচনা হবে বলে তিনি জানান।
বরিশালে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের সাবেক ডিডি বর্তমানে ঢাকায় একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে প্রধান হিসাবে কর্মরত আছেন। তিনিও চিঠিটি পেয়েছেন বলে জানান। তার মতে এ চিঠিটি অস্পষ্ট। স্পষ্টিকরণের জন্য দ্রুত আর একটি চিঠি আসতে পারে বলে তিনি মনে করেন।
মাউশির সহকারি পরিচালক ও চিঠিতে স্বাক্ষারকারী জিয়াউল হায়দার হেনরী বলেন, স্কুলগুলোর বেতনের টাকা সরকারি কোষাগারে রাখতে হয়। স্কুলের থাকে সেশন ফি। সরকারি স্কুলগুলো বেতনের টাকা সরকারি কোষাগারে রাখে কিন্তু বেসরকারি স্কুল সেটি রাখছে না।
তিনি আরও বলেন, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা অনুযায়ী এই বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হয়েছে।