ডেস্ক রির্পোট:- আমি চাইলে আমেরিকার স্টাইলে পুলিশ দিয়ে বিরোধীদের আন্দোলন থামিয়ে দিতে পারি মন্তব্য করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, আমাকে উৎখাত করলে পরবর্তীতে কে আসবে, কারা আসবে, কে আসবে ক্ষমতায়? কে দেশের জন্য কাজ করবে, কাকে তারা আনতে চায় সেটা কিন্তু স্পষ্ট নয়। আর সেটা স্পষ্ট নয় বলেই তারা জনগণের সাড়া পাচ্ছে না। গতকাল বৃহস্পতিবার থাইল্যান্ড সফরের অভিজ্ঞতা জানাতে গণভবনের সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এমন প্রশ্ন রাখেন। এ সময় সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন প্রধানমন্ত্রী।
দেশের অতি বাম, অতি ডান সবই এখন ‘এক হয়ে গেছে’ বলে দুদিন আগে মন্তব্য করেছিলেন শেখ হাসিনা। সে বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করে একজন সাংবাদিক প্রধানমন্ত্রীর উদ্দেশে বলেন, ‘দুই মেরু এক হয়ে সরকারকে উৎখাত করার কথা বলছে। এ অবস্থায় আপনি জাতিকে কী বার্তা দিতে চান?’
জবাবে শেখ হাসিনা বলেন, বাম চলে গেছে নব্বই ডিগ্রি ঘুরে, তারা নব্বই ডিগ্রি ঘুরে গেছে আর কি। আমি একটা প্রশ্ন করতে চাই, বিশেষ করে আমরা যাদের অতি বাম মনে করি, তারা সব সময় প্রগতিশীল দল, তারা খুবই গণমুখি দল ইত্যাদি ইত্যাদি। সেখানে আমার প্রশ্ন হল, ঠিক আছে, তারা আমাকে উৎখাত করবে, পরবর্তীতে কে আসবে তাহলে? সেটা কি ঠিক করতে পেরেছেন? কারা আসবে? কে আসবে? কারা দেশের জন্য কাজ করবে? তারা কাকে আনতে চায়?
সরকার পতনের আন্দোলন দমন করতে বাংলাদেশ পুলিশ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পুলিশের স্টাইলে ব্যবস্থা নিতে পারে বলে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন,ম বিরোধীদের আন্দোলনের দমাতে ‘নতুন পথ নিয়ে নেয়ার সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। আমার মনে হয়, আমাদের পুলিশ আমেরিকার পুলিশের স্টাইলে আন্দোলন দমানোর ব্যবস্থা নিতে পারে। আমি চাইলে পুলিশ দিয়ে তাদের আন্দোলন দমন করতে পারতাম। আমার মনে হয়, সাংবাদিকরা এ ব্যাপারে আমাকে সমর্থন করবেন।
উল্লেখ্য, সম্প্রতি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে ফিলিস্তিনপন্থি আন্দোলনকারীদের দমন করতে ব্যাপক বল প্রয়োগ করে সে দেশের পুলিশ। প্রধানমন্ত্রী এ সময় সরকারবিরোধী আন্দোলনকারীরা ব্যর্থ হওয়ার কারণ নিয়ে নিজের ধারণাও ব্যাখ্যা করেন। শেখ হাসিনা বলেন, তাঁকে (শেখ হাসিনা) সরিয়ে কাকে ক্ষমতায় আনতে চায় আন্দোলনকারীরা, সে বিষয়ে বিরোধীরা নিজেরাও জানে না, আর এটা তাদের রাজনীতির বড় দুর্বলতা। তিনি বলেন, আন্দোলন করে যাচ্ছে, কেউ রিফিউজি হয়ে বিদেশে বসে। আবার ডিজিটাল বাংলাদেশ করেছি, সেই ডিজিটাল বাংলাদেশে বদৌলতে প্রতিদিন অনলাইনে আন্দোলন, সংগ্রাম করেই যাচ্ছে। নির্দেশ দিয়েই যাচ্ছে। সেখানেও তো প্রশ্ন আছে।
বিরোধীদের আন্দোলনের বিষয়ে শেখ হাসিনা আরো বলেন, যারা আন্দোলন করে করুক, আমরা তো বাধা দিচ্ছি না। অবশ্য, আমার মনে হয়, আমাদের নতুন পথ নিয়ে নেয়ার সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে, আমরা যদি আমেরিকার স্টাইলে আন্দোলন…., আমরা যদি পুলিশকে বলে দেই, আমেরিকার পুলিশ যেভাবে আন্দোলন থামায়, সেটা অনুসরণ করতে পারে। সেটা করতে পারি। আমাদের পুলিশ, আমেরিকার পুলিশকে অনুসরণ করতে পারে, কারণ আমরা তো ধৈর্য্য ধরতে বলেছিলাম। ২৮ অক্টোবরের (২০২৩) কথা মনে আছে, আমি তো বলেছিলাম তাদেরকে (পুলিশ) পিটিয়ে হত্যা করেছে, মেরেছে এবং সেই সঙ্গে তাদের হাসপাতালে আক্রোমণ..। প্রধানমন্ত্রী আবারো বলেন, আমার মনে হয়, আমাদের পুলিশ আমেরিকার পুলিশের মত আন্দোলন দমানোর ব্যবস্থাটা নিতে পারে। আমার মনে হয়, সাংবাদিকরা এ ব্যাপারে আমাকে সমর্থন করবেন। এ সময় দেশের বাম রাজণৈতিকদের প্রসঙ্গে শেখ হাসিনা বলেন, বাম চলে গেছে নব্বই ডিগ্রি ঘুরে, তারা নব্বই ডিগ্র্রি ঘুরে গেছে আর কি।
এর আগে আমেরিকায় যেভাবে ফিলিস্তিনপন্থি আন্দোলনকারীদের দমন করা হয়েছে সে বিষয়টির সমালোচনাও করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। শেখ হাসিনা বলেন, তাদের (যুক্তরাষ্ট্র) কাছ থেকে মানবাধিকারের কথা শুনতে হয়, সবক নিতে হয়, এটাই হচ্ছে সত্যিকারের দুর্ভাগ্যের। ফিলিস্তিনের পক্ষে বাংলাদেশের দৃঢ় অবস্থানের কথা পুনর্ব্যক্ত করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা সবসময় ফিলিস্তিনের পক্ষে আছি। আমি যেখানে যাই সেখানে আমার কথা আমি বলব। কারণ যেভাবে গণহত্যা চলছে, এটা অমানবিক। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে আন্দোলনরতদের ফিলস্তিনপন্থিদের গ্রেপ্তারের প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেন, সবচেয়ে বড় কথা আজকে ৯০০ শিক্ষার্থী থেকে শুরু করে প্রফেসর গ্রেপ্তার হয়েছেন আন্দোলন করার জন্য। এটা একমাত্র আমেরিকায়… আর এটা নাকি গণতন্ত্রের একটা অংশ, সেটাও আমাদের শুনতে হয়। একজন প্রফেসরকে কীভাবে মাটিতে ফেলে গ্রেপ্তার করা হলো।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ২ বাংলাদেশীর মৃত্যু নিয়ে অপর এক প্রশ্নের জবাবে শেখ হাসিনা বলেন, আমেরিকায় তো প্রতিনিয়ত শুধু প্রবাসী বাংলাদেশি শুধু না…, ঘরের ভেররের বাচ্চা ছেলে, মা ধরে রাখছে তাকে গুলি করে ফেলে দিলো। তার অপরাধটা কি ছিল। তার হাতে একটা কাঁচি ছিল, সেই কাঁচির ভয়ে তাকে গুলি করে মারা হলো। তিনি আরো বলেন, একজন পঙ্গু যে হাঁটতেও পারে না, সে প্রেসিডেন্টকে নাকি হুমকি দিয়েছে। ওই অবস্থায় তাকে গুলি করে হত্যা করলো। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিনিয়ত মানবাধিকার লঙ্ঘন হচ্ছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, তাদের সে দিকে নজর দেয়া উচিত। তাদের নিজের ঘর আগে সামলানো উচিত।
বিদেশের নির্বাচনে বাংলাদেশ পর্যবেক্ষন টিম পাঠাবে বলে এ সময় জানান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, আরো অনেক দেশে তো নির্বাচন হচ্ছে, আমরা দেখবো, আমরা পর্যবেক্ষক টিমও পাঠাবো। দেখি কেমন নির্বাচন হয়। সেখানকার মানুষ কেমন ভোট দেয় আমরা দেখবো।
উপজেলা নির্বাচনে আওয়ামী লীগের অনেক প্রার্থী দলীয় নির্দেশনা না মানা নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে শেখ হাসিনা বলেন, পারিবারিক ফর্মুলা কী? নিজের ছেলে মেয়ে- স্ত্রী, এই তো। তার পর হিসাব করে দেখেন কয়জন ছেলেমেয়ে, কয়জন স্ত্রী দাঁড়িয়েছে। এর বাহিরে তো পরিবার ধরা হয় না। আমাদের কথা হচ্ছে, নির্বাচনটা যেন প্রভাবমুক্ত হয়। মানুষ যেন স্বাধীনভাবে ভোটটা দিতে পারে, সেটাই আমাদের লক্ষ্য।
দলীয় নেতাদের উদ্দেশ্যে কর্মীদের মূল্যায়ণ করা উচিত এমন নির্দেশনা দিয়ে তিনি আরো বলেন, আওয়ামী লীগের অনেক নেতা-কর্মীর পরিবার দীর্ঘদিন ধরে রাজনীতি করছেন। তারা আগে নির্বাচন করেছেন। কেউ ইউনিয়ন চেয়ারম্যান, কেউ উপজেলা চেয়ারম্যান। তাদের তো রাজনৈতিক ঐতিহ্য আছে। তাদেরকে আমরা মানা করি কী করে? তবে এটা ঠিক, হয়তো এক জায়গায় বউকে দিল আর এক জায়গায় ছেলেকে দিলো, এগুলো আসলে ঠিক না। কর্মীদেরও মূল্যায়ণ করা উচিত, আমি সেটাই আমাদের নেতা-কর্মীদের বলতে চেয়েছি। সবকিছু নিজেরা নিয়ে নেব, আমার নেতা-কর্মীদের জন্য কিছু রাখব না, এটাতো হয় না। সেই কথাটা আমি বলতে চেয়েছি। উপজেলা নির্বাচনে দলীয় নেতা- সংসদ সদস্যদের উদেশ্যে তিনি বলেন, আর যেন বেশি প্রভাব না ফেলে। সবাই দাঁড়িয়েছে, নির্বাচন করছে, সেটার লক্ষ্যটা হল নির্বাচনটা অর্থবহ করা।
বিভিন্ন দেশের সঙ্গে নতুন বানিজ্য সম্পর্ক নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমরা একটি চমৎকার ভৌগলিক অবস্থানে আছি। সে হিসেবে এই যে দক্ষিন এশিয়া, জিসিসি দেশ, মধ্যপ্রাচ্য, আফ্রিকার দেশ, দ্বীপ দেশগুলোর সঙ্গে আমরা সম্পর্ক বাড়াচ্ছি। পাশাপাশি পূর্ব এশিয়া ও পূর্ব ইউরোপের দেশগুলোর সঙ্গে আমরা সম্পর্ক বাড়াচ্ছি। তিনি আরো বলেন, ব্যবসা-বানিজ্যের ক্ষেত্রে নতুন বাজার খুঁজে বের করা ও উৎপাদনের ক্ষেত্রে নতুন পণ্যের চাহিদা কোথায় কেমন এবং সেই অনুসারে উৎপাদনের সুযোগ করা এ বিষয়ে আমরা বিশেষ দৃষ্টি দিচ্ছি।
বাজার মনিটরিং ও পণ্যমূল্য নিয়ে এক সাংবাদিকদের অপর প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, কিছু ব্যবসায়ী অধিক মুনাফার জন্য পণ্যমূল্য বাড়ায়। এটা নিয়ে আমাদের মনিটরিং থাকবে। তিনি আরো বলেন, তবে পণ্যের মূল্য সামান্য একটু বাড়লেই বেশি করে দেখানো এটাও বেশি দেখানো হয়।
বৃক্ষরোপণ নিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বনায়ন-বৃক্ষরোপণ আমাদের দলের একটা কর্মসূচি। এটা আমরা ১৯৮৪ সাল থেকে শুরু করেছিলাম, কৃষক লীগের ওপর দায়িত্ব, তারা এটার উদ্যোগ নেয়। দলের অন্য সহযোগী সংগঠনগুলোও বৃক্ষরোপণ করে উল্লেখ করে তিনি বলেন, আমাদের সহযোগী সংগঠনগুলোকে নির্দেশ দেওয়া আছে, যে যেখানে পারে বৃৃক্ষরোপণ করবে। তিনি বলেন, প্রতি বছর ১লা আষাঢ় কৃষক লীগের ওপর দায়িত্ব থাকে বৃক্ষরোপণ করার। এ বছর এটা বিশেষভাবে নিচ্ছি। এ জন্য দেশবাসীকে ব্যাপকভাবে গাছ লাগানোর আহŸান জানান প্রধানমন্ত্রী।
আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন ১৪ দলীয় জোট প্রসঙ্গে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে জোট নেত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা বলেন, ১৪ দল তো অবশ্যই আছে, থাকবে না কেন? তাদের সঙ্গে আমাদের সব সময় যোগাযোগ আছে। যোগাযোগ নেই তা তো না। দুই-চার (জোটের নেতা) জন্য বিক্ষিপ্ত কি বলেছে আমি জানি না। কিন্তু যিনি সমন্বয় করেন, আমির হোসেন আমু সাহেবের উপরই দায়িত্বটা আছে, দলের পক্ষ থেকে তিনিই যোগাযোগ করেন। তিনি আরো বলেন, আমি খুব শীঘ্রই তাদের সঙ্গে বৈঠক (১৪ দলের) করবো। আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, আমার সঙ্গে অনেকের (১৪ দলের) নিজেরও সরাসরি যোগযোগ আছে, আমাদের দলের সাধারণ সম্পাদকও যোগাযোগ রাখেন। ১৪ দলীয় জোট শরিকদের নির্বাচন করেছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, তাদের অনেকে তো নির্বাচনে প্রার্থী দিয়েছে। নির্বাচনে জেতা-না জেতা আলাদা কথা। আমাদের এই জোট আছে, এবং থাকবে।
ঢাকার যানজট নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে এক সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ট্রাফিক আইন কেউ মানে না। এটা যানজটের জন্য একটি সমস্যা। এখন মানুষ যদি নিজেই সচেতন না হয়, তাহলে এখানে কত আর সচেতন করা যেতে পারে। বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্প রক্ষনাবেক্ষন নিয়ে তিনি বলেন, এটা জনগণের দায়িত্ব।
এক প্রশ্নে জবাবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, থাইল্যান্ড চাইলে আমাদের দীর্ঘ ৮০ মাইল সমুদ্র সৈকতে জায়গা দেবো। কারণ থাইল্যান্ড পর্যটনের দিক থেকে অনেক অগ্র্রগামী। সে অভিজ্ঞতাটাও আমরা নিতে পারি। এজন্য তারা আমাদের বালুময় সমুদ্র সৈকতে বিনিয়োগ করতে চাইলে তাদের জায়গা দেওয়া হবে।
শেখ হাসিনা বলেন, এ সফরের ফলে থাইল্যান্ডের কাছ থেকে সহযোগিতা পাওয়ার এবং সার্বিক উন্নয়নের একটা নতুন দুয়ার খুলে গেল। সেখানে একটা ভালো সুযোগ সৃষ্টি হলো। আপনারা জানেন যে, আমাদের দক্ষিণ এশিয়া ও দক্ষিণপ‚র্ব এশিয়ার দেশগুলোর সঙ্গে সহযোগিতা, যোগাযোগ, মতবিনিময় এবং অভিজ্ঞতা বিনিময়ের ওপর গুরুত্ব দিয়ে থাকি। কারণ, সার্বিকভাবে আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের জন্য এই বন্ধনটা অত্যন্ত গুরুত্বপ‚র্ণ।
তিনি আরো বলেন, থাইল্যান্ডের ফল ও খাদ্য উৎপাদনে অনেক গবেষণা আছে। আমরা এসব ক্ষেত্রে মতবিনিময় করেছি। দুই দেশের মধ্যে এইসব অভিজ্ঞতা ভাগাভাগি করার বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। ইতোমধ্যেই আমাদের চট্টগ্রাম থেকে থাইল্যান্ডের বন্দরের সাথে সরাসরি কার্গো নেওয়ার ব্যবস্থা আছে।
তিনি বলেন, আমি মনে করি, এই সফরের মধ্য দিয়ে দুই দেশের ব্যবসা-বাণিজ্য ও অভিজ্ঞতা বিনিময়ের ভালো সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে। যা ভবিষ্যতে কাজে লাগবে। যেহেতু থ্যাইল্যান্ড আশিয়ানভুক্ত দেশ এবং বর্তমানে বিমসটেকের সভাপতি। বিমসটেক আমরাই প্রতিষ্ঠা করেছিলাম এবং আমি এর প্রতিষ্ঠাতা সদস্য হিসেবে আছি। আমি আঞ্চলিক সহযোগিতাকে বেশি গুরুত্ব দেই। বৈশ্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় প্রতিবেশি দেশগুলোর সাথে সম্পর্ক আরো সুদৃঢ় করাই আমাদের প্রধান লক্ষ্য।
নিজ দেশ থেকে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসনে থাইল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রীর সাথে আলোচনা হয়েছে বলে সংবাদ সম্মেলনে জানান প্রধানমন্ত্রী। বাস্তুচ্যুত এই রোহিঙ্গাদের নিজ দেশে ফেরাতে থাইল্যান্ডের সরকার প্রধান সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছেন বলেও জানান তিনি। শেখ হাসিনা বলেন, মিয়ানমার থেকে যেসব রোহিঙ্গা আমাদের এখানে আশ্রয় নিয়েছে, তাদের প্রত্যাবাসনের বিষয়ে থাইল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রীর সাথে আলোচনা করেছি। মিয়ানমারের ওপরে থ্যাইল্যান্ডের একটা প্রভাব আছে। সে ক্ষেত্রে থাইল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী বলেছেন বিষয়টি তিনি আরো গভীরভাবে দেখবেন এবং প্রত্যাবাসনে সহযোগিতা করবেন। তিনি আরো বলেন, মিয়ানমারের এই বিষয়টা নিয়ে সবাই উদ্বিগ্ন। বিশেষ করে বর্তমানে যে অবস্থাটা চলছে, সেটা নিয়ে তারাও উদ্বিগ্ন। তারপরও প্রত্যাবাসনের চেষ্টা চলবে বলেই তারা আশ্বস্ত করেছেন। তার সাথে অত্যন্ত আন্তরিকতার সাথে আলোচনা হয়েছে।
ইতিহাসের ‘সব থেকে সুন্দর নির্বাচন’ ২০২৪ সালে হয়েছে দাবি করে আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, জনগণের অধিকার নিশ্চিত করেই আমরা নির্বাচন করেছি। বাংলাদেশের পুরো নির্বাচনের ইতিহাসটা দেখেন, সেই পঁচাত্তরের পর থেকে যতগুলো নির্বাচন হয়েছে, ৭৭ সালের হ্যাঁ/না ভোট থেকে যতগুলো নির্বাচন, প্রত্যেকটা নির্বাচনের যদি তুলনা করেন, তাহলে দেখবেন যে ২০২৪ সালের ৭ জানুয়ারী নির্বাচন প্রত্যেক নির্বাচনের তুলনায় সবচেয়ে বেশি অবাধ, নিরপেক্ষ, সুষ্ঠু এবং জনগণের ভোটের অধিকার নিশ্চত করার নির্বাচন হয়েছে। তিনি আরো বলেন, যেটা আমাদের দীর্ঘ দিনের লক্ষ্য ছিল, আমরা সংগ্রাম করেছি এই দেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করার জন্য, ভোটের অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য আমরাই আন্দোলন সংগ্রাম করেছি, সেটা ভুলে গেলে তো চলবে না।
সংবাদ সম্মেলনের সময় সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ বিষয়ক উপদেষ্টা সালমান ফজলুর রহমান, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান, আওয়ামী লীগের সভাপতিমন্ডলীর সদস্য শেখ ফজলুল করিম সেলিম, বেগম মতিয়া চৌধুরী, বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী আহসানুল ইসলাম টিটু, তথ্য-প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন।