ডেস্ক রির্পোট:- দেশে চলমান তীব্র দাবদাহের কারণে প্রাথমিক, মাধ্যমিক স্কুল ও মাদ্রাসার ক্লাস আগামী বৃহস্পতিবার (২ মে) পর্যন্ত বন্ধ রাখার নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট।
সোমবার (২৯ এপ্রিল) বিচারপতি কে এম কামরুল কাদের ও বিচারপতি খিজির হায়াতের হাইকোর্ট বেঞ্চ স্ব-প্রণোদিত হয়ে এ আদেশ দেন।
আদেশে বলা হয়- তবে সেসব স্কুলে এসির ব্যবস্থা আছে, পরীক্ষা চলমান আছে, ও লেভেল, এ লেভেল পরীক্ষা ও কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য এই আদেশ প্রযোজ্য হবে না।
আদালতে চলমান তাপপ্রবাহে ১৮ জনের মৃত্যুর ঘটনা নিয়ে বিভিন্ন পত্রিকায় প্রকাশিত প্রতিবেদন আদালতের নজরে আনেন আইনজীবী মনির উদ্দিন।
এ সময় রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল শেখ মো. সাইফুজ্জামান, সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল রেহেনা সুলতানা, মো. সামিউল সরকার ও আশিক রুবায়েত।
ঈদের ছুটির পর এক সপ্তাহ বন্ধ রেখে গত শনিবার থেকে স্কুল-কলেজ খুলেছে। দেশব্যাপী তীব্র তাপপ্রবাহের মধ্যে স্কুল খোলায় বিপাকে পড়েছেন শিক্ষার্থীরা। বহু শিক্ষার্থী গরমে অসুস্থ হয়ে পড়ছেন। বেশ কয়েকজন মারাও গেছেন। এমতাবস্থায় দাবদাহের মধ্যে স্কুল-কলেজ ও মাদ্রাসা খোলা রাখা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।
এর আগে, গতকাল রোববার শিক্ষামন্ত্রী বলেছেন, বর্তমানে আমাদের দেশে যে তাপমাত্রা, এটা বাংলাদেশের ইতিহাসের সর্বোচ্চ নয়। সুতরাং এবার কেন এত আলোচনা হচ্ছে বিদ্যালয় বন্ধ রাখার জন্য, সেটা আমাদের ভাবতে হবে। বিদ্যালয় বন্ধ রেখে আসলে কী অর্জন করতে পারি? বিদ্যালয় বন্ধ, তার মানে এ শিক্ষার্থীরা কি ঘরে থাকবে?
তিনি বলেন, এ মুহূর্তে আবহাওয়া অধিদপ্তরের যে পূর্বাভাস, তাতে রাজধানী ঢাকার যে তাপমাত্রা সেটার সঙ্গে তো আমি সারা দেশের তাপমাত্রা মেলাতে পারি না। এ মুহূর্তে ৪০ (ডিগ্রি) পর্যন্ত ওঠার সম্ভাবনা আছে পাঁচ জেলায়। আমাদের ৬৪ জেলার মধ্যে মাত্র পাঁচ জেলায় সেখানে পূর্বাভাস হচ্ছে ৪০ ডিগ্রিতে পৌঁছানোর। সেক্ষেত্রে সব বিদ্যালয় বন্ধ করে রাখাটা তো যুক্তিযুক্ত নয়। সেটা হচ্ছে আমাদের অবস্থান।
তিনি আরও বলেন, নির্দিষ্ট কোনো জেলাতে যদি অতিমাত্রায় তাপপ্রবাহ হয়, সেখানে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর, মন্ত্রণালয় থেকে সেখানে নির্দেশনা দেওয়া আছে শিশুদের ক্ষেত্রে যাতে তাদের কষ্ট না হয়, সেটাও বলা আছে। এখন সবকিছুতেই বিদ্যালয়, আলিয়া মাদ্রাসা বন্ধ করে দেওয়ার প্রবণতা কিন্তু আসলে সঠিক নয়। আর রাজধানীকে কেন্দ্র করে আমরা যাতে সারা দেশকে বিচার না করি, সেটা আমি অনুরোধ রাখব।
হাইকোর্টের আদেশের বিরুদ্ধে আপিল বিভাগে যাবেন শিক্ষামন্ত্রী——–
এদিকে গরমের মধ্যে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ করা নিয়ে হাইকোর্টের এমন আদেশের বিষয়ে শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল বলেছেন, সারা দেশের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধে এক ধরনের মানসিকতা তৈরি হচ্ছে। সবকিছুতেই কেন শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের ওপর আদালতের নিদের্শনা নিয়ে আসতে হবে? হাইকোর্টের আদেশের বিরুদ্ধে আপিল বিভাগে যাবেন বলেও জানান তিনি।
সোমবার (২৯ এপ্রিল) রাজধানীর আগারগাঁওয়ে বিজ্ঞান কমপ্লেক্সে এক অনুষ্ঠান শেষে গণমাধ্যমকর্মীদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এসব কথা বলেন।
এ সময় সাংবিধানিকভাবে যার যা দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে তা পালন করাই বাঞ্ছনীয় বলেও মন্তব্য করেন শিক্ষামন্ত্রী।
যেসব শিক্ষক-শিক্ষার্থী অসুস্থ হয়েছেন তাদের বিষয়েও প্রশ্ন তোলেন শিক্ষামন্ত্রী। তিনি বলেন, যারা অসুস্থ হয়েছেন, তারা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে নাকি অন্যত্র ছিলেন, তাও দেখার বিষয়।
মন্ত্রী বলেন, স্কুল গরমের জন্য বিপজ্জনক, আর মাঠ-ঘাট নয়? যেসব জেলায় তাপমাত্রা কম সেখানে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ করে দেওয়ার তো কোনো কারণ নেই।
এরআগে, সোমবার দুপুরে বিচারপতি কে এম কামরুল কাদের ও বিচারপতি খিজির হায়াতের হাইকোর্ট বেঞ্চ স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে তাপপ্রবাহের মধ্যে প্রাথমিক, মাধ্যমিক স্কুল ও মাদ্রাসার ক্লাস বৃহস্পতিবার (২ মে) পর্যন্ত বন্ধ রাখার নির্দেশ দেন।
আদেশে বলা হয়- তবে সেসব স্কুলে এসির ব্যবস্থা আছে, পরীক্ষা চলমান আছে, ও লেভেল, এ লেভেল পরীক্ষা ও কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য এই আদেশ প্রযোজ্য হবে না।
আদালতে চলমান তাপপ্রবাহে ১৮ জনের মৃত্যুর ঘটনা নিয়ে বিভিন্ন পত্রিকায় প্রকাশিত প্রতিবেদন আদালতের নজরে আনেন আইনজীবী মনির উদ্দিন।
এ সময় রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল শেখ মো. সাইফুজ্জামান, সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল রেহেনা সুলতানা, মো. সামিউল সরকার ও আশিক রুবায়েত।
এদিকে দেশে চলমান তীব্র দাবদাহের কারণে ঢাকাসহ দেশের ২৭টি জেলার সব মাধ্যমিক স্কুল, কলেজ, মাদ্রাসা ও কারিগরি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান আগামীকাল মঙ্গলবার (৩০ এপ্রিল) বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে।
সোমবার বিকেলে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের জনসংযোগ কর্মকর্তা আবুল খায়ের স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
এর মধ্যে রয়েছে রাজশাহী ও খুলনা বিভাগের সব জেলা অর্থাৎ ১৮টি জেলা। ঢাকা বিভাগের ৬টি (ঢাকা, নারায়ণগঞ্জ, গাজীপুর, টাঙ্গাইল, মুন্সীগঞ্জ ও মানিকগঞ্জ) জেলা, রংপুর বিভাগের দুটি (কুড়িগ্রাম ও দিনাজপুর) এবং বরিশালের একটি (পটুয়াখালী) জেলা রয়েছে।