শিরোনাম
রাঙ্গামাটির লংগদুতে সন্তু গ্রুপ কর্তৃক ইউপিডিএফ সদস্যসহ ২ জনকে গুলি করে হত্যার নিন্দা ও প্রতিবাদ রাঙ্গামাটিতে ব্রাশ ফায়ারে ২ জন পাহাড়ি নিহত এমপিওভুক্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পদ ৯৬,০০০ আবেদন ২৪,০০০ রিজার্ভ নিয়ে তিন হিসাব, চাপ বাড়ছে বিরোধী রাজনীতিতে নতুন মেরূকরণ! এক মঞ্চে আসছে বিএনপি-জামায়াত পাহাড়ে অস্ত্রধারীদের গোপন আস্তানা,দেড় বছরে ৮০ খুন গ্রেফতার ১১০ * অপরাধীদের শনাক্ত করতে চলছে অনুসন্ধান মেয়াদোত্তীর্ণ সিন্ডিকেট সদস্য দিয়ে চলছে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় সারা দেশে ১৭৩ কিশোর গ্যাং ইসরায়েলে ৭৫টি রকেট হামলা করেছে হিজবুল্লাহ মহাসড়ক যেন মৃত্যুকূপ,২২টিতে থ্রি-হুইলারের দাপট ♦ বাড়ছে সড়ক দুর্ঘটনা ♦ চাঁদায় বৈধ অবৈধ যান

অসহনীয় গরমে পাঠদান,স্কুলে স্কুলে অসুস্থ হয়ে পড়ে শিক্ষার্থী-শিক্ষক,ঢাকার বাইরে অসুস্থ ৩৫

রিপোর্টার
  • আপডেট সময় সোমবার, ২৯ এপ্রিল, ২০২৪
  • ২৭ দেখা হয়েছে

ডেস্ক রির্পোট:- আবহাওয়া অধিদপ্তরের জারি করা চতুর্থ দফা হিট অ্যালার্টের মধ্যেই রাজধানী ঢাকাসহ সারা দেশে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়া হয়েছে। রোববার তীব্র তাপপ্রবাহের মধ্যে স্কুলে গিয়ে অনেক শিক্ষক-শিক্ষার্থী অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। রাজধানীর স্কুলগুলোতে সকালের শিফটে শিক্ষার্থী উপস্থিতির হার ভালো থাকলেও তাপমাত্রা বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে ডে-শিফটে উপস্থিতির হার কমতে থাকে। দীর্ঘদিন পর স্কুল খোলায় সহপাঠীদের পেয়ে শিক্ষার্থীদের উচ্ছ্বসিত হতে দেখা যায়। তবে অসহনীয় গরমে ক্লাস করা নিয়ে শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের মাঝে মিশ্র প্রতিক্রিয়া লক্ষ করা গেছে। এদিন ঢাকার বাইরে বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে বেশ কয়েকজন শিক্ষক ও শিক্ষার্থী অসুস্থ হয়ে পড়ে। নোয়াখালীর হাতিয়া ও বেগমগঞ্জ উপজেলার দুটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ১৮ জন শিক্ষক-শিক্ষার্থী, ফরিদপুরের সালথায় প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ১৩ শিক্ষক-শিক্ষার্থী, পিরোজপুরের ভাণ্ডারিয়ায় এক শিক্ষক ও দুই শিক্ষার্র্থী এবং মুন্সীগঞ্জের টঙ্গীবাড়ীতে এক শিক্ষার্থী অসুস্থ হয়ে পড়ে।

ঢাকার মতিঝিল আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজে মর্নিং-শিফটে শিক্ষার্থী উপস্থিত বেশ ভালো হলেও ডে-শিফটে ১৫-২০ শতাংশ শিক্ষার্থী কমে যায়। আইডিয়াল স্কুলের সহকারী প্রধান শিক্ষক রোকনুজ্জামান শেখ বলেন, এমন সময় কোনো শিক্ষার্থী স্কুলে না এলেও কোনো চাপ দিচ্ছি না। যারা অনুপস্থিত থাকবে তাদের জরিমানাও মওকুফ করা হয়েছে। তিনি বলেন, তাপমাত্রার বৃদ্ধির কারণে সকালের চেয়ে বিকালের শিফটে শিক্ষার্থীদের উপস্থিতি কম ছিল। তবে অনুপস্থিত শিক্ষার্থীদের কাছে হোমওয়ার্ক পাঠানোর ব্যবস্থা করা হয়েছে।

রাজধানীর উইলস লিটল ফ্লাওয়ার স্কুল অ্যান্ড কলেজেও সকালের শিফটের চেয়ে বিকালের শিফটে ২০ শতাংশ শিক্ষার্থীর উপস্থিতি কম ছিল। প্রতিষ্ঠানটির অধ্যক্ষ (ভারপ্রাপ্ত) আ ন ম সামশুল আলম খান বলেন, অনেক দিন পর স্কুল খোলা পেয়ে সকালে শিক্ষার্থীরা এসেছিল। কিন্তু ডে-শিফটে শিক্ষার্থীদের সংখ্যা কমেছে।

এমন অবস্থা দেখা গেছে রাজধানীর গভর্নমেন্ট ল্যাবরেটরি হাইস্কুল, গভর্নমেন্ট সায়েন্স হাইস্কুল, মতিঝিল সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়, ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজের বসুন্ধরা শাখাসহ বেশ কয়েকটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে।

অভিভাবকরা বলছেন, সকালের দিকে যাদের ক্লাস, তারা কিছুটা স্বস্তিতে ফিরেছে। তবে দুপুর ১২টা থেকে বিকাল পর্যন্ত যাদের ক্লাস তাদের মধ্যে অনেকেই স্কুলে যাওয়ার পথেই ক্লান্ত হয়ে পড়ে। অসুস্থবোধ করায় অনেকে বাড়ি ফিরেও গেছে। অনেক অভিভাবক সন্তানদের নিয়ে স্কুলে যান। আবার ছুটি শেষে বাসায় ফেরেন। বাইরে রোদের মধ্যে তারা অপেক্ষমাণ ছিলেন। অভিভাবকরাও অসুস্থ হয়ে পড়েন। এ কারণে আরও এক সপ্তাহ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখার দাবি তাদের। ভিকারুননিসা বসুন্ধরা শাখার ৬ষ্ঠ শ্রেণির এক ছাত্রীর অভিভাবক কাজী জেবেল জানান, আমার মেয়ে স্কুল থেকে বাসায় ফিরে অসুস্থ হয়ে পড়েছে। এ বিরূপ আবহাওয়ায় অন্তত আরও এক সপ্তাহ স্কুল বন্ধ রাখার দাবি জানান তিনি।

এদিকে তীব্র গরমে স্কুল-কলেজ খোলা রাখায় যাতায়াত ও ক্লাসে অবস্থানকালে শিক্ষার্থীদের কোনো ক্ষতি হলে তার দায় সরকার ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানকে বহন করতে হবে বলে জানিয়েছে অভিভাবক ঐক্য ফোরাম। শনিবার গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে এ কথা জানায় সংগঠনটি। চলমান পরিস্থিতিতে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ না করে অনলাইনে ক্লাস চালু করার দাবি জানিয়েছে অভিভাভাবক ঐক্য ফোরাম। এর আগে চলমান পরিস্থিতিতে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ না করে অনলাইনে ক্লাস চালু করার দাবিও জানান তারা।

ঈদুল ফিতরের ছুটি শেষে ২১ এপ্রিল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার কথা ছিল। তীব্র তাপপ্রবাহের কারণে ছুটি বাড়ানো হয়। এতে আরও এক সপ্তাহ বন্ধ থাকে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। ২৫ এপ্রিল শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে জারি করা প্রজ্ঞাপনে রোববার থেকে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে যথারীতি ক্লাস শুরুর কথা বলা হয়।

সালথা (ফরিদপুর) প্রতিনিধি জানান, তীব্র দাবদাহের মধ্যে টিউবওয়েলের পানি পান করে তিন শিক্ষক ও ১০ শিক্ষার্থী অসুস্থ পড়েছে। তিন শিক্ষার্থীকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। বেলা ১১টার দিকে সালথা উপজেলার রামকান্তপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে এ ঘটনা ঘটে। তবে উপজেলা স্বাস্থ্য বিভাগের দাবি, পানি পান করে নয-গরমে তারা অসুস্থ হয়ে পড়েছে। সহকারী শিক্ষক রবিউল ইসলাম বলেন, ক্লাস রুম ও মাঠে জমে থাকা ময়লা-আবর্জনা পরিষ্কার করার কিছু সময় পর স্কুলের টিউবওয়েলের পানি সবাই পান করি। কিন্তু কিছুক্ষণ পর একে একে সবাই বমি করতে থাকে এবং অসুস্থ হয়ে পড়ে। এর মধ্যে রানিতা নামে এক শিশুর অবস্থা বেশি খারাপ হওয়ায় তাকে ফরিদপুর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. আব্দুল মমিন বলেন, টিউবওয়েলের পানিতে কোনো ধরনের বিষক্রিয়া পাওয়া যায়নি। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে-গরমে তারা অসুস্থ হয়ে পড়েছেন।

হাতিয়া (নোয়াখালী) প্রতিনিধি জানান, স্কুল খোলার প্রথম দিন তীব্র গরমে হাতিয়া উপজেলায় ১০ শিক্ষক ও শিক্ষার্থী অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। হরণী ইউনিয়নের হাতিয়া জনকল্যাণ শিক্ষা ট্রাস্ট হাইস্কুলে এ ঘটনা ঘটে। প্রধান শিক্ষক আলী মানসুর বলেন, তীব্র গরমে ক্লাস করানো কঠিন। সবারই হাঁসফাঁস অবস্থা। গরমে শিক্ষক-শিক্ষার্থী মিলে ১০ জন অসুস্থ হয়েছে। বিদ্যুৎ চলে যাওয়ায় ক্লাস করানো আরও কঠিন হয়ে পড়েছে। সহকারী জ্যেষ্ঠ শিক্ষিকা ফাতেমা ইসরাত জানান, পাঠদান কার্যক্রম শুরুর পর বিভিন্ন শ্রেণিতে শিক্ষার্থীরা অসুস্থ হয়ে পড়ে। এক পর্যায়ে ষষ্ঠ শ্রেণির ১১ জন, অষ্টম শ্রেণির দুজন, নবম শ্রেণির দুজন ও দশম শ্রেণির দুজন শিক্ষার্থী অসুস্থ হয়ে পড়ে। কারও পেটব্যথা, কারও মাথাব্যথা শুরু হয়। এক পর্যায়ে পল্লি চিকিৎসককে ডেকে এনে শিক্ষার্থীদের প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে বাড়িতে পাঠিয়ে দেওয়া হয়।

অন্যদিকে বেগমগঞ্জের আমান উল্যাপুরের জয়নারায়ণপুর ইসলামিয়া ফাজিল মাদ্রাসার শিক্ষার্থী আফিফা গরম সহ্য করতে না পেরে জ্ঞান হারিয়ে ফেলে। মাদ্রাসার সহকারী অধ্যাপক জামাল উদ্দিন বলেন, আফিফা অজ্ঞান হয়ে পড়েছিল। মাথায় পানি ঢালার পর সে সুস্থবোধ করে।

তাকে বাড়িতে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। আফিফা ছাড়াও বেশ কয়েকজন শিক্ষার্থী অসুস্থবোধ করলে তাদেরও বাড়ি পাঠিয়ে দেওয়া হয়।

ভাণ্ডারিয়া (পিরোজপুর) প্রতিনিধি জানান, প্রচণ্ড গরমে সংজ্ঞা হারিয়ে ফেলেছেন ভাণ্ডারিয়া উপজেলার নয়াখালী মাটিভাংগা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক রফিকুল ইসলাম। এ সময় দশম শ্রেণির শিক্ষার্থী মো. রাসেল অসুস্থ হয়ে পড়ে। তাদের দুজনকে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। এদিকে ভাণ্ডারিয়া শাহাবুদ্দিন কামিল মাদ্রাসার ৮ম শ্রেণির শিক্ষার্থী মারিয়া অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে বাড়িতে পাঠিয়ে দেওয়া হয়।

টঙ্গীবাড়ী (মুন্সীগঞ্জ) প্রতিনিধি জানান, তীব্র দাবদাহে বিদ্যালয়ে পাঠদানের সময় শ্রেণিকক্ষে ৬ষ্ঠ শ্রেণির ছাত্রী সুমি আক্তার অজ্ঞান হয়ে পড়ে। টঙ্গীবাড়ী উপজেলার হাসাইল বানারী ইউনিয়নের বানারী বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয়ে এ ঘটনা ঘটে। প্রধান শিক্ষক মোহাম্মদ কায়েসুর রহমান জানান, ওই ছাত্রী অসুস্থ হয়ে পড়লে সঙ্গে সঙ্গে তাকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যাওয়া হয়। প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে তাকে বাড়ি পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে।যুগান্তর

পোস্টটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরো
© All rights reserved © 2023 Chtnews24.net
Website Design By Kidarkar It solutions