শিরোনাম

আন্দোলনের নতুন রোডম্যাপের চিন্তা বিরোধীদের

রিপোর্টার
  • আপডেট সময় মঙ্গলবার, ২৩ এপ্রিল, ২০২৪
  • ২১ দেখা হয়েছে

ডেস্ক রির্পোট:- আন্দোলনের নতুন রোডম্যাপ তৈরি করছে বিএনপিসহ সমমনা দল ও জোটগুলো। এবার নতুন পর্যায়ের আন্দোলনের সূচনা করতে চায় তারা। এজন্য পরিকল্পনামাফিক সামনে এগোচ্ছে দলগুলো। নীতি-নির্ধারকরা মনে করছেন, রাজপথে আন্দোলন ছাড়া অন্য কোনো পথ সামনে এখন আর খোলা নেই। আন্দোলনের মাধ্যমে দাবি আদায় করে সুষ্ঠু নির্বাচনের পথ তৈরি করতে হবে। ৭ই জানুয়ারির নির্বাচনে আগে আন্দোলনে কিছুটা ছন্দপতন ঘটলেও এবার আর সেই ভুল করতে চাইছে না দলগুলো। তাই তারা আন্দোলনের নতুন রোডম্যাপ তৈরি করে নেতাকর্মীদের চাঙ্গা রাখতে চায়। আবারো রাজপথের কর্মসূচিতে ফিরতে চাইছেন নেতারা। আন্দোলনকে একটি কাঠামোগত রূপ দেয়ার চিন্তা মাথায় রেখে কর্মসূচি চূড়ান্ত করা হচ্ছে। তবে এখন আপাতত যুগপৎ আন্দোলনে থাকা দল ও জোটগুলো দলগতভাবে কর্মসূচি পালন করবে।

পরে যুগপৎভাবে কর্মসূচি দেয়া হবে।

দীর্ঘ পাঁচ মাস পর ঢাকায় দুই সমাবেশ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিএনপি। এরমধ্যে একটি আগামী মে দিবসে বড় শোডাউনের শ্রমিক সমাবেশ করার পরিকল্পনা করছে দলটির হাইকমান্ড। এজন্য প্রস্তুতিও গ্রহণ করছেন তারা। ঘরোয়া বৈঠক এবং মতবিনিময় সভাসহ প্রস্তুতি সভাও করছেন নেতারা। আর আগামী মাসের যেকোনো সময় ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপি’র উদ্যোগে রাজধানীতে সমাবেশ করবে দলটি। এ ছাড়া আগামী ৩০শে মে বিএনপি’র প্রতিষ্ঠাতা সাবেক প্রেডিডেন্ট জিয়াউর রহমানের মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে মাস জুড়ে নানা ধরনের কর্মসূচি পালন করা হবে বলে জানা গেছে।

এদিকে উপজেলা পরিষদ নির্বাচনকে ঘিরে নতুন কর্মসূচির কথাও ভাবছে বিএনপি। কর্মসূচির মধ্যে জনসাধারণকে ভোট বর্জনের আহ্বানে লিফলেট বিতরণ এবং পথসভাসহ বিভিন্ন কর্মিসভা কর্মসূচি দেয়ার পক্ষে মতামত দিয়েছেন দলটির নেতারা। পাশাপাশি নির্বাচনে দলের যেসব নেতা মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন তাদের কাউন্সেলিং করানো হবে। খুব শিগগিরই এই কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে একটি নির্ভরযোগ্য সূত্রে জানা গেছে। সূত্র জানায়, গত বৃহস্পতিবার রাতে দলের সাংগঠনিক সম্পাদক এবং সহ-সাংগঠনিক সম্পাদকের সঙ্গে ভার্চ্যুয়ালি বৈঠক করেছেন বিএনপি’র ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। ওই বৈঠকে উপজেলা নির্বাচন নিয়ে তারেক রহমান নেতাদের মতামত জানতে চান। পাশাপাশি তিনি আরও জানতে চান যে, বিএনপি কী শুধু ভোট বর্জন করবে, না কী নির্বাচন চলাকালীন সময়ে কর্মসূচি নিয়ে রাজপথেও থাকবে। এই প্রসঙ্গে দলটির সাংগঠনিক সম্পাদক ও সহ-সাংগঠনিক সম্পাদকরা কর্মসূচি দেয়ার পক্ষে তাদের মতামত দেন।

সূত্রটি আরও জানায়, বৈঠকে উপস্থিত সব নেতাই কর্মসূচিতে যাওয়ার পক্ষে মতামত দিয়েছেন। তবে এখন কঠোর কোনো কর্মসূচি নয়। নেতারা জনসাধারণকে ভোট বর্জনের আহ্বানে লিফলেট বিতরণ এবং পথসভাসহ বিভিন্ন কর্মসূচির দেয়ার পক্ষে মতামত দিয়েছেন। আর উপজেলা নির্বাচনে দলের যেসব নেতারা মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন তাদের কাউন্সেলিং করানোর কথা বলেছেন তারা। এরপরে গত শুক্রবার বিকালে রাজধানীর নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে ঢাকায় উপস্থিত দলটির সাংগঠনিক সম্পাদক এবং সহ-সাংগঠনিক সম্পাদকদের বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। ওই বৈঠকে কর্মসূচি নিয়ে পর্যালোচনা করা হয় এবং কী কী কর্মসূচি দেয়া যেতে পারে, সে বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেন নেতারা। জানা গেছে, বৈঠকে নেতারা কর্মসূচির বিষয়ে তাদের মতামত তুলে ধরেন। সেই মতামত বিএনপি’র সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী কাগজে নোট করেন। বৈঠকে আলোচনার বিষয়বস্তু লিখিত আকারে বিএনপি’র স্থায়ী কমিটির সদস্যদের কাছে দেয়া হবে। পরে স্থায়ী কমিটির বৈঠকে আলোচনা করে কর্মসূচির বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেয়া হবে। আর দলের প্রার্থীদের কাউন্সেলিং করানো হবে। এরপরও যদি তারা দলের সিদ্ধান্ত অমান্য করে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেন তাহলে তখন তাদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেয়া হবে।

বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, অনেকে ভাবতে পারে বিএনপি ও বিরোধী দলের আন্দোলন শেষ হয়ে গেছে। কিন্তু আমরা সংগ্রাম আরও বেগবান করবো। আর আন্দোলনের মাধ্যমেই এই সরকারের পরাজয় হবে। বিএনপি’র সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী মানবজমিনকে বলেন, এই সরকারের অধীনে সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন সম্ভব নয়। এজন্য নির্দলীয় ও নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবিতে বিএনপি আন্দোলন করছে। এই আন্দোলন চলমান। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চলবে। আর নতুন কর্মসূচি নিয়ে দলে আলাপ-আলোচনা চলছে। কর্মসূচি চূড়ান্ত হলে আপনাদের জানিয়ে দেয়া হবে।

বিএনপি’র যুগ্ম মহাসচিব ও লিয়াজোঁ কমিটির সদস্য সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল বলেন, খুব শিগগিরই যুগপৎ আন্দোলনের দল ও জোটগুলোর সঙ্গে আমরা আলাপ, আলোচনা এবং মতবিনিময় করবো। সেখানেই পরবর্তী কর্মসূচি নির্ধারণ করা হবে।

ওদিকে এ সময়ে যুগপৎ আন্দোলনের বিভিন্ন দল ও জোটগুলোও পৃথক পৃথকভাবে বিভিন্ন কর্মসূচি নিয়ে রাজপথে থাকবে। এরমধ্যে আগামী ২৯শে এপ্রিল থেকে ৮ই জুন পর্যন্ত বিভাগীয় প্রতিনিধি সভা করবে গণতন্ত্র মঞ্চ। এই কর্মসূচি শেষে বিভাগীয় ও জেলা পর্যায়ে সমাবেশ ও সভা করার চিন্তা করছে তারা। এরপরে বিভিন্ন জনসম্পৃক্তমূলক ইস্যুতে ঢাকায় কর্মসূচি করবে গণতন্ত্র মঞ্চ। আর যৌথভাবে কর্মসূচি নির্ধারণে বিএনপি’র সঙ্গে যুগপৎ আন্দোলনের দল ও জোটগুলোর অনানুষ্ঠানিক বৈঠক হচ্ছে। খুব শিগগিরই আনুষ্ঠানিক বৈঠক হবে। ওই বৈঠকে চূড়ান্ত কর্মসূচি ঠিক করা হবে।
নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না মানবজমিনকে বলেন, ৭ই জানুয়ারি কোনো নির্বাচন হয়নি। প্রতারণা করা হয়েছে। মানুষ আমাদের সঙ্গে ছিল এবং এখনো আছে। আর দাবি আদায়ে আমাদের আন্দোলন করতে হবে। আমরা আন্দোলনে আছি এবং সামনেও আন্দোলন করবো।

গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক জোনায়েদ সাকি বলেন, আন্দোলন নিয়ে আলাপ-আলোচনা চলছে। নতুন পর্যায়ের আন্দোলনের সূচনা করা হবে। এখন দলগতভাবে কর্মসূচি চলছে। সামনে এই কর্মসূচিকে আরও জোরদার করা হবে।মানবজমিন

পোস্টটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরো
© All rights reserved © 2023 Chtnews24.net
Website Design By Kidarkar It solutions