বান্দরবান:- বান্দরবানের রুমা উপজেলায় রুমা খাল, প্রাংসা, পাইন্দু ও রাঙ্গামাটি জেলার বিলাইছড়ি উপজেলার বড়থলি সীমান্ত এলাকায় তুমুল গোলাগুলির সংবাদ পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় বাসিন্দাদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। গতকাল শুক্রবার বিকেলে গোলাগুলির শব্দ পায় স্থানীয়রা। তবে তারা নির্দিষ্ট করে বলতে পারছে না কার সঙ্গে কার গোলাগুলি হয়েছে।
বিভিন্ন সূত্র এই সংঘাতে হতাহতের তথ্য দিয়েছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক রুমা বাজারের একজন ব্যবসায়ী জানান, আতঙ্কে বাজারের সব দোকানপাট বন্ধ করে দিয়েছেন ব্যবসায়ীরা।
জানা গেছে, যৌথ বাহিনীর সন্ত্রাসবিরোধী চিরুনি অভিযানের মধ্যেই বান্দরবানের রুমা উপজেলার রেমাক্রি-প্রাংসা ও রাঙ্গামাটির বিলাইছড়ি উপজেলার বড়থলির দুর্গম এলাকায় নিরাপত্তা বাহিনীর একটি ক্যাম্পে সশস্ত্র হামলা চালিয়েছে স্থানীয় বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠন কুকি-চিন ন্যাশনাল ফ্রন্ট (কেএনএফ)। গতকাল বিকেল ৪টার দিকে এ ঘটনা ঘটে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বান্দরবান জেলা পুলিশের একজন জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা জানান, ক্যাম্পে দায়িত্বরত জওয়ানদের ডিউটি বদলের সময় ক্যাম্প লক্ষ্য করে এলোপাতাড়ি গুলি করতে থাকে সন্ত্রাসীরা। এতে তিনজন গুলিবিদ্ধ হন। এদিকে ঘটনার পরপরই আহতদের উদ্ধার করে হেলিকপ্টারযোগে চট্টগ্রাম সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ) নিয়ে যাওয়া হয়।
এ হামলার জন্য স্থানীয়ভাবে কেএনএফকে দায়ী করা হলেও এ বিষয়ে তাদের কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
এদিকে রেমাক্রি-প্রাংসা এলাকায় গোলাগুলির ঘটনা ছড়িয়ে পড়লে রুমা উপজেলা সদরে জনমনে ভীতি ছড়িয়ে পড়ে।
রুমা উপজেলা বাজারের ব্যবসায়ী জসিম উদ্দিন বলেন, কোথায় কী ঘটছে, বুঝতে পারছি না। সন্ত্রাসীদের হামলা এবং তা প্রতিরোধে যৌথ বাহিনীর অভিযানের ফলে এখানকার জীবনযাত্রা ও ব্যবসা-বাণিজ্য অচল হয়ে পড়েছে।
তিনি বলেন, ‘গোলাগুলির ঘটনা জানতে পেরে দোকানপাট বন্ধ করে দেওয়া ছাড়া আমাদের আর কোনো পথ ছিল না।’
এদিকে দুর্গম এলাকায় গোলাগুলির ঘটনার পর রুমা উপজেলার স্পর্শকাতর পয়েন্টগুলোতে নিরাপত্তাব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে।
পুলিশ টহলও বাড়ানো হয়েছে।
রুমা উপজেলা চেয়ারম্যান উহ্লা চিং মারমা জানান, কয়েক দিন ধরে রুমায় যৌথ বাহিনীর অভিযান চলছে। স্থানীয়রা বিকেলে জানিয়েছে, রুমার পাইন্দু ইউনিয়ন এবং রাঙ্গামাটি জেলার বিলাইছড়ি উপজেলার বড়থলি ইউনিয়নের সীমান্তবর্তী দুর্গম এলাকায় বিকেলে তীব্র গোলাগুলি হয়েছে।
সম্প্রতি রুমা উপজেলায় সোনালী ব্যাংক ডাকাতির ঘটনায় গত ৫ এপ্রিল থেকে সন্ত্রাসীদের ধরতে অভিযান শুরু করে যৌথ বাহিনী। অভিযানে এ পর্যন্ত কেএনএফ সদস্য, তাদের সহযোগীসহ ৬৬ জনকে গ্রেপ্তার করে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। তাদের মধ্যে ৫২ জনের চার দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত।