ডেস্ক রির্পোট:- রাজনৈতিক আশ্রয় সংক্রান্ত নিয়মকানুনের সংস্কারের প্রস্তাব অনুমোদন করেছে ইউরোপীয় ইউনিয়নের পার্লামেন্ট। দশটি আইনের আওতায় এই রাষ্ট্রজোট বহির্সীমানায় আরও কড়া নিয়ম চালু করবে এবং সব সদস্য দেশ সম্মিলিতভাবে এ ক্ষেত্রে দায়িত্ব ভাগ করে নেবে৷ এ সংক্রান্ত ডয়েচে ভেলের এক রিপোর্টে বলা হয়েছে, এরফলে এখন থেকে শুধু গ্রিস ও ইতালির মতো দেশকে শরণার্থীদের ঢল আর একা সামলাতে হবে না৷ শরণার্থীরাও আর বিচ্ছিন্ন আশ্রয় নীতির দুর্বলতার সুযোগ নিয়ে ইইউ-র একাধিক সদস্য দেশে স্বীকৃতির চেষ্টা চালাতে পারবেন না৷ উল্লেখ্য, এর আগে ইইউ-র বেশিরভাগ সদস্য দেশের সরকার সেই প্রস্তাব অনুমোদন করেছিল৷ ইউরোপীয় কমিশন সেই সব আইন কার্যকর করার উপায় বাতলে দেওয়ার পর ২০২৬ সাল থেকে সেই উদ্যোগ কার্যকর করার পরিকল্পনা রয়েছে৷
আশ্রয় সংক্রান্ত অভিন্ন নীতি কার্যকর হলে রাজনৈতিক আশ্রয়ের অনুরোধ বহির্সীমানার বাইরেই যাচাই করা হবে৷ যাদের আবেদন মঞ্জুর হওয়ার সম্ভাবনা কম, তাদের সেখান থেকেই যত দ্রুত সম্ভব কোনো ‘নিরাপদ’ দেশে প্রত্যর্পণ করা হবে৷ সেই লক্ষ্যে নতুন সীমানা কেন্দ্র গড়ে তোলা হবে৷ যারা প্রবেশের সুযোগ পাবে, ইইউ-র বিভিন্ন দেশে তাদের বণ্টন করা হবে৷ কোনো সদস্য দেশ আশ্রয়প্রার্থীদের নিতে রাজি না হলে অর্থ বা অন্যান্য সম্পদ দিয়ে সেই দায়িত্ব পালন করতে হবে৷
জার্মান চ্যান্সেলর ওলাফ শলৎস সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম এক্সে এই বোঝাপড়াকে ইউরোপীয় রাষ্ট্রগুলির মধ্যে সংহতির উদাহরণ হিসেবে তুলে ধরেন৷ ইইউ কমিশনের প্রেসিডেন্ট উরসুলা ফন ডেয়ার লাইয়েন পার্লামেন্টের এই সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়ে বলেন, এর ফলে একই সঙ্গে ইউরোপের সীমান্ত নিরাপদ রাখা এবং অভিবাসনপ্রত্যাশীদের মৌলিক অধিকার রক্ষা করা সম্ভব হবে৷ তার মতে, কোন পরিস্থিতিতে কোন বহিরাগত প্রবেশ করতে পারবে, এবার থেকে ইইউ দেশগুলিই সে বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে পারবে৷ আদম ব্যবসায়ী ও মানব পাচারকারীদের দৌরাত্ম্য বন্ধ হবে৷
ইউরোপীয় ইউনিয়নের নির্বাহী ও সংসদীয় ক্ষমতাকেন্দ্র এমন সিদ্ধান্ত সম্পর্কে উৎসাহ দেখালেও একাধিক শরণার্থী সহায়তা সংগঠন ইইউ-র নতুন অভিন্ন নীতির সমালোচনা করেছে৷ অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনলের মতে, এর ফলে আরো বেশি মানবিক বিপর্যয় ঘটবে৷ রেড ক্রস ইইউ-র উদ্দেশ্যে শরণার্থী ও অভিবাসনপ্রত্যাশীদের জন্য মানবিক পরিবেশ নিশ্চিত করার আবেদন জানিয়েছে৷ ব্রাসেলসে ইইউ পার্লামেন্ট ভবনের সামনেও প্রতিবাদ বিক্ষোভ দেখা গেছে৷