রাঙ্গামাটি:- পার্বত্য চট্টগ্রামে বসবাসরত পাহাড়িদের প্রধান সামাজিক উৎসব বৈসুক-সাংগ্রাই-বিজু-বিহু উপলক্ষে পাঁচ দিনব্যাপী বৈসাবি উৎসব শুরু হয়েছে বাঘাইছড়ি উপজেলার বঙ্গলতলীতে।
আজ রোববার সকাল ১০টার দিকে তরুণ-তরুণীরা নিজ নিজ সম্প্রদায়ের পোশাক পরে অংশগ্রহণ করেন উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে। এরপর উপস্থিত অতিথিরা বেলুন উড়িয়ে মেলার আনুষ্ঠানিকতা উদ্বোধন করেন। পরে স্থানীয় নৃত্যশিল্পীদের পরিবেশনায় পাহাড়ি নৃত্য পরিবেশন করা হয়।
আলোচনা সভায় শুভ শান্তি চাকমার সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি ছিলেন ৩৫ নম্বর বঙ্গলতলী ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান জ্ঞান জ্যোতি চাকমা, সংরক্ষিত মহিলা ইউপি সদস্য মুক্তাসোনা চাকমা, এতে বিশেষ অতিথি ছিলেন করেঙ্গাতলী কাঠ ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি ইন্দ্র বিকাশ চাকমা। স্বাগত বক্তব্য দেন জারুলছড়ি নিম্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক অরেন্টু চাকমা।
জ্ঞান জ্যোতি চাকমা বলেন, ‘পার্বত্য চট্টগ্রাম দেশের অন্য ৬১টি জেলার থেকে ভিন্ন। এখানে নানান জাতি-গোষ্ঠী ও সম্প্রদায়ের মানুষ একসঙ্গে মিলেমিশে বসবাস করে। বৈসুক-সাংগ্রাই-বিজু পার্বত্য চট্টগ্রামের মানুষের প্রধান সামাজিক উৎসব। এই দিনে আমরা পুরোনো দিনের সব দুঃখ-কষ্ট ভুলে বড়দের আশীর্বাদ নিয়ে নতুন বছর নতুন করে শুরু করি। তাই এই দিনগুলো হয় আমাদের সবার মিলনমেলা।’
তিনি আরও বলেন, ‘বঙ্গলতলী ইউনিয়নের মানুষ এখন অনেক পিছিয়ে পড়া জনপদ। শিক্ষা-দীক্ষায় ও অবকাঠামোর দিক দিয়ে আমরা এখন অনেক পিছিয়ে।’
এ ছাড়া পাঁচ দিনব্যাপী মেলায় ঐতিহ্যবাহী বিভিন্ন খেলাধুলা, শিশু-কিশোরদের চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতা, পিঠা উৎসব, পাহাড়িদের ঐতিহ্যবাহী যন্ত্রসংগীত, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হবে। পাঁচ দিনব্যাপী এই মেলা আগামী ১৩ এপ্রিল শেষ হবে বলে জানিয়েছেন আয়োজকেরা।
অনুষ্ঠানে মক্তাসোনা চাকমা বলেন, ‘বিজু আমাদের সবার একটি আনন্দের দিন। এই দিনে আমরা সবাই পরিবার-পরিজন নিয়ে সুখে-দুঃখে আনন্দ ভাগাভাগি করি এবং আমাদের জাতীয় সংস্কৃতি তুলে ধরার চেষ্টা করি। আমাদের যে পাহাড়িদের ঐতিহ্য-সংস্কৃতি রয়েছে তা যেন আমাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্ম শিখতে পারে সেভাবে আমাদের চলতে হবে।’
পরে পাহাড়িদের ঐতিহ্যবাহী দুদুক, ঘিলা খেলা, নাদেং হারা সকালের অনুষ্ঠান শুরু হয়। অনুষ্ঠানে ২০টি খেলাধুলার আয়োজন করেছে বলে আয়োজকেরা বলেছেন।