বান্দরবান:-বান্দরবানে ব্যাংকের তিন শাখায় ডাকাতি ও অপহরণের ঘটনার পর সশস্ত্র সংগঠন কুকি-চিন ন্যাশনাল ফ্রন্টের (কেএনএফ) সঙ্গে শান্তি আলোচনা স্থগিতের ঘোষণা দিয়েছেন পার্বত্য জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও শান্তি কমিটির আহব্বায়ক ক্য শৈ হ্লা।
আজ বৃহস্পতিবার (৪ এপ্রিল) সকালে বান্দরবান পার্বত্য জেলা পরিষদ সভাকক্ষে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এই ঘোষণা করেন।
ক্য শৈ হ্লা জানান, কেএনএফ সদস্যদের স্বাভাবিক জীবনে ফিরিয়ে আনার জন্য ২০২৩ সালের ২৯ মে বিভিন্ন জাতিগোষ্ঠীর নেতৃবৃন্দের উপস্থিতিতে অরুণ সারকী টাউন হলে মতবিনিময় সভার আয়োজন করা হয়। এরই ধারাবাহিকতায় ওই বছরের ৯ জুন স্থানীয় নেতৃবৃন্দের সমন্বয়ে ১৮ সদস্যবিশিষ্ট একটি শান্তি প্রতিষ্ঠা কমিটি গঠিত হয়।
‘মাথায় অস্ত্র ঠেকিয়ে টাকা ও ফোন নিয়েছে সন্ত্রাসীরা’, সোনালী ব্যাংকের গ্রাহক‘মাথায় অস্ত্র ঠেকিয়ে টাকা ও ফোন নিয়েছে সন্ত্রাসীরা’, সোনালী ব্যাংকের গ্রাহক
পরবর্তী সময়ে শান্তি প্রতিষ্ঠা কমিটি ও কেএনএফের মধ্যে কয়েক দফা ভার্চুয়াল সভার পর উভয় পক্ষের মতামতের ভিত্তিতে সরাসরি সংলাপে বসার একটা সুযোগ সৃষ্টি হয়। ২০২৩ সালের ৫ নভেম্বর ও পরের ২০২৪ সালের ৫ মার্চ দুই দফা সরাসরি সংলাপ হয়। উভয় সংলাপে কেএনএফকে সব সশস্ত্র কার্যক্রম থেকে বিরত থাকা এবং অন্যান্য বিষয়সংক্রান্ত দুটি সমঝোতা স্মারক সম্পাদিত হয়।
শান্তি কমিটির আহব্বায়ক ক্য শৈ হ্লা বলেন, ‘কিন্তু তারা সম্পূর্ণভাবে চুক্তি ভঙ্গ করে বিভিন্ন সময়ে সশস্ত্র কার্যক্রম অব্যাহত রাখে। কমিটির তরফ থেকে বিষয়টি বারবার অবগত করা হলেও তারা কর্ণপাত করেনি। বরং বিক্ষিপ্তভাবে বিভিন্ন সময়ে স্থানীয় বাসীন্দাদের ওপর হামলা, চাঁদাবাজি, অপরহণসহ নানা অপকর্ম চালিয়ে গেছে।’
কেএনএফের প্রধান কে এই নাথান বম, যেভাবে তাঁর উত্থানকেএনএফের প্রধান কে এই নাথান বম, যেভাবে তাঁর উত্থান
তিনি আরও বলেন, ‘সর্বশেষ গত ২ এপ্রিল রুমায় সরকারি কর্মকর্তা ও পথচারীদের জিম্মি করে সোনালী ব্যাংকে হামলা, ব্যাংক ম্যানেজারকে অপহরণ, পুলিশ ও আনসার বাহিনীর ১৪টি অস্ত্র লুট করে নেওয়া এবং ৩ এপ্রিল থানচির স্থানীয়দের জিম্মি করে গুলিবর্ষণ এবং কৃষি ও সোনালী ব্যাংক লুট করে কেএনএফ সদস্যরা।’
এসব অপকর্মের তীব্র নিন্দা জানিয়ে ‘কয়েক দফায় চুক্তির শর্ত ভঙ্গ করায়’ কুকি-চিনের সাথে শান্তি কমিটির সব শান্তি আলোচনা স্থগিতের ঘোষণা দেন তিনি।
থানচির সোনালী ও কৃষি ব্যাংকে সশস্ত্র সন্ত্রাসীদের হানা, ১৭ লাখ টাকা লুটথানচির সোনালী ও কৃষি ব্যাংকে সশস্ত্র সন্ত্রাসীদের হানা, ১৭ লাখ টাকা লুট
নিরাপত্তাজনিত কারণে বান্দরবান সদর শাখা ছাড়া ছয়টি উপজেলার সব ব্যাংকের কার্যক্রম বন্ধ ঘোষণা করা হয়। এ ঘটনায় জেলাজুড়ে আতঙ্ক বিরাজ করায় নিরাপত্তা জোরদার করা হয়।