ডেস্ক রির্পোট:- প্রায় দুই বছর পেরিয়ে গেলেও এখনও সচল হয়নি চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালের এমআরআই মেশিনটি। দীর্ঘদিন ধরেই একমাত্র মেশিনটি সচল না থাকায় রোগীদের ভোগান্তি চরমে উঠেছে। নিরূপায় হয়ে রোগীদের যেতে হচ্ছে বেসরকারি ল্যাবগুলোতে। এতে করে চমেক হাসপাতালের চেয়েও তিন থেকে পাঁচগুণ বেশি অর্থ গুণতে হচ্ছে রোগী-স্বজনদের। হাসপাতাল-ল্যাবে ছোটাছুটি করে গলদঘর্ম হচ্ছেন তারা। সংশ্লিষ্টরা জানান, মেশিনটি সচলে সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে দীর্ঘ সময় ধরে স্বাস্থ্য বিভাগের মধ্যে দরকষাকষি চললেও সে গিট এখনও খোলেনি। এ কারণে কোনভাবেই সচল করা যাচ্ছে না এমআরআই সেবা। যা এখন একপ্রকার ‘গলার কাঁটা’ হয়ে দাঁড়িয়েছে চমেক হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের।
খবর নিয়ে জানা গেছে, ২০১৭ সালে প্রায় দশ কোটি টাকায় কেনা এমআরআই মেশিনটি স্থাপন করা হয় চমেক হাসপাতালে। চুক্তি অনুযায়ী মেশিনটির ওয়ারেন্টি ছিল ২০২০ সালের ১৫ আগস্ট পর্যন্ত। কিন্তু তিন বছর না যেতেই ত্রæটি শুরু হয় কোটি টাকা মূল্যের মেশিনটির। এরপর বারবার বিকল হতে থাকে এ যন্ত্র। সর্বশেষ ২০২২ সালের মে মাসে বিকল হয় জাপান থেকে কেনা এমআরআই মেশিনটি। জাপানি ‘হিটাচি ১.৫ টেসলা’র অত্যাধুনিক মেশিনটি সরবরাহ করে ঢাকার মেডিটেল প্রা. লিমিটেড নামের এক প্রতিষ্ঠান।
সংশ্লিষ্টরা জানান, একমাত্র মেশিনটি সচলের জন্য মন্ত্রনালয় থেকে শুরু করে অন্যান্য দপ্তরে বহু সংখ্যক চিঠি চালাচালি করা হয়। কিন্তু সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান অতিরিক্ত অর্থ দাবি করায় এ নিয়ে এখন পর্যন্ত সুরাহা হয়নি। সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে প্রায় কোটি টাকার ব্যয় বিবরণী দেয়া হলেও সরকারিভাবে সিদ্ধান্ত না হওয়ায় মেশিনটি মেরামত করা যাচ্ছে না। এ কারণে অচল হয়ে পড়ে আছে মেশিনটি।
এদিকে, দীর্ঘ দুই বছর ধরে মেশিনটির সেবা বন্ধ থাকায় বাধ্য হয়েই রোগীদের নিয়ে স্বজনরা ছুটছেন হাসপাতালের আশপাশের বেসরকারি ল্যাবগুলোতে। এতে বাড়তি টাকা গুণতে হচ্ছে রোগী-স্বজনদের। এছাড়াও মুমূর্ষু রোগীদের নিয়ে হাসপাতাল-ল্যাবে ছোটাছুটি করে হচ্ছে গলদঘর্ম অবস্থা।
রোগী-স্বজনরা বলছেন, কম খরচে চিকিৎসাসেবার জন্য সাধারণ মানুষের অন্যতম ভরসার জায়গা চমেক হাসপাতাল। এমনিতেই চিকিৎসাসেবার ব্যয়ভারে হিমশিম খেতে হয়। তারমধ্যে দীর্ঘ সময় ধরে হাসপাতালটির এমআরআই সেবা বন্ধ থাকায় অতিরিক্ত অর্থব্যয় কষ্টসাধ্য। তাই দ্রুত সময়ের মধ্যে সেবার মান আরও বৃদ্ধির তাগিদ তাদের।
চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. শামীম আহসান বলেন, মেশিনটি চালু করতে বহুবার সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠানসহ সংশ্লিষ্ট দপ্তরগুলোতে যোগাযোগ করা হয়েছে। কিন্তু ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানের অতিরিক্ত অর্থ চাওয়ার কারণে এখন পর্যন্ত তা সুরাহা হচ্ছে না। তবে এ বিষয়ে আশা করছি শীঘ্রই সুখবর পাওয়া যাবে।