শিরোনাম
বাণিজ্য সম্ভাবনায় ‘সেভেন সিস্টার্স’ দুবাইয়ে বিপু-কাজলের ২০০ কোটির দুই ভিলা পাচারের ১৭ লাখ কোটি ফেরাবে কে,প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের দিকে তাকিয়ে সবাই শিক্ষার্থীদের পরিকল্পিতভাবে বিতর্কিত করার চেষ্টা করা হচ্ছে ঢাকা-দিল্লি পররাষ্ট্রসচিব বৈঠক ডিসেম্বরে, শেখ হাসিনার প্রত্যর্পণ নিয়ে আলোচনা হবে কি এবার মারা গেলেন পরীমণির প্রথম সিনেমার পরিচালক জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে স্থানীয় সরকার নির্বাচন আয়োজনের পরামর্শ সরাসরি ভোটে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের সুপারিশ, বদিউল বললেন, ‘বিবেচনায় রয়েছে’ বান্দরবানে নৌকা বাইচ দিয়ে ক্রীড়া মেলা শুরু রাঙ্গামাটিতে সাফজয়ী পাহাড়ের তিন কন্যাকে উষ্ণ সংবর্ধনা

আজ আন্তর্জাতিক বন দিবস,উজাড় হচ্ছে সংরক্ষিত বনও

রিপোর্টার
  • আপডেট সময় বৃহস্পতিবার, ২১ মার্চ, ২০২৪
  • ২৮০ দেখা হয়েছে

ডেস্ক রির্পোট:- পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষায় দেশে ভূখণ্ডের মোট আয়তনের ২৫ শতাংশ বনভূমি থাকা অপরিহার্য। কিন্তু প্রতিবছর যে হারে বনভূমি কমছে, তাতে পরিবেশের ওপর বিরূপ প্রভাব পড়বে বলে মনে করছেন পরিবেশবাদীরা। বাংলাদেশের বন বিভাগের ২০১৯ সালের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, দেশে বন আচ্ছাদিত এলাকার পরিমাণ মোট ভূমির ১২ দশমিক ৮ শতাংশ। এ অবস্থায় ২০২০ সালের মধ্যে দেশের মোট ভূখণ্ডের ১৭ শতাংশকে সংরক্ষিত বনাঞ্চল করার ঘোষণা দিয়েছিল সরকার; কিন্তু এখনো সে লক্ষ্যমাত্রা পূরণ করা যায়নি। যেটুকু সংরক্ষিত বন আছে, তাও উজাড় হওয়া থেকে রক্ষা পাচ্ছে না। দখলদারদের থাবা পড়েছে এসব বনে। আর নানা প্রকল্পেও নেওয়া হয়েছে সংরক্ষিত বন ধ্বংসের আয়োজন। এমন প্রেক্ষাপটে আজ বৃহস্পতিবার পালিত হচ্ছে আন্তর্জাতিক বন দিবস।

২০১২ সালে অনুষ্ঠিত জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের সভায় বন ও বনভূমির নিরাপত্তা রক্ষার্থে ২১ মার্চকে আন্তর্জাতিক বন দিবস ঘোষণা করা হয়। সেই থেকে বিশ্বব্যাপী প্রতি বছর দিবসটি পালন করা হচ্ছে। মূলত মানুষকে গাছের গুরুত্ব বোঝাতে বাংলাদেশেও দিবসটি পালিত হয়। খোদ বন বিভাগই বলছে, দেশের অন্তত ৮৮ হাজার ২১৫ জন সংরক্ষিত বন দখল করেছেন। তাদের দখলকৃত জমির পরিমাণ ১ লাখ ৩৮ হাজার ৬১৩ দশমিক ৬ একর। এমন তথ্য থাকলেও বন বিভাগ দখলদারদের বিরুদ্ধে কিছুই করতে পারছে না।

জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থার (এফএও) হিসাবে, বিশ্বব্যাপী ২০০০-২০১৫ সময়ে প্রায় ১ দশমিক ৪ শতাংশ বন উজাড় হয়েছে। বাংলাদেশে তা ২ দশমিক ৬ শতাংশ। দেশে বছরে ২ হাজার ৬০০ হেক্টর বন উজাড় হয়। বন বিভাগের সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, দেশে মোট বনভূমির পরিমাণ ৪৬ লাখ ৪৬ হাজার ৭০০ একর। সারা দেশে বনের জমি জবরদখল করে রেখেছেন ১ লাখ ৬০ হাজার ৫৬৬ জন। তাদের দখলে আছে ২ লাখ ৫৭ হাজার ১৫৮ একর বনভূমি। দখলের থাবা থেকে রক্ষা পায়নি সংরক্ষিত বনভূমিও। মোট দখলদারদের মধ্যে ৮৮ হাজার ২১৫ জন সংরক্ষিত বনভূমি দখল করে রেখেছেন। তাদের জবরদখলে আছে ১ লাখ ৩৮ হাজার ৬১৩ দশমিক শূন্য ৬ একর সংরক্ষিত বনভূমি।

হাটবাজার, দোকানপাট, রিসোর্ট বা কটেজ, কৃষি ফার্ম, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ইত্যাদিসহ অন্যান্য প্রতিষ্ঠান দিয়ে ৩ হাজার ৩২৯ জন দখল করে আছে ৪ হাজার ৯১৪ দশমিক ৪৩ একর বনের জমি। ব্যক্তিমালিকানাধীন ঘরবাড়ি, বসতভিটার পরিমাণ ৫৭ হাজার ৬৪১ দশমিক ৩ একর। দখলকারীর সংখ্যা ৫৮ হাজার ৪০৭ জন। এ ছাড়া কৃষিজমি, চারণভূমি, বাগান, লবণ চাষ, পতিত ভূমি ইত্যাদি ব্যক্তিমালিকানাধীন স্থায়ী স্থাপনাবিহীন ৭৫ হাজার ১৯৭ দশমিক ২৬ একর ভূমি দখল করেছেন ২৬ হাজার ৩০৭ জন।

জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে সুন্দরবনে গত ৫ দশকে বনাঞ্চলের ঘনত্ব কমেছে ২ দশমিক ৭ শতাংশ। ‘রাইজিং টাইডস, রোরিং ফিউচার্স: দ্য সুন্দরবনস কোয়েস্ট ফর সারভাইভাল-২০২৪’ শীর্ষক গবেষণায় দেখা গেছে, ১৯৭৩ থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত সুন্দরবনের ভূমি আবরণে পরিবর্তন ঘটেছে। ঘন বনের পরিমাণ কমে গেছে, আর জলাভূমির আয়তন বেড়েছে। এটি আবাসস্থল হারিয়ে যাওয়া এবং বিভাজনের ইঙ্গিত দেয়। ১৯৭৩ সালে সুন্দরবনের ৯৪ দশমিক ২ শতাংশ এলাকা ঘন বনাঞ্চলে আবৃত ছিল, যা ২০২৪ সালে কমে ৯১ দশমিক ৫ ভাগ হয়েছে। অর্থাৎ ৫ দশকে ২৭ ভাগ কমেছে। এর অর্থ হলো কার্বন আত্তীকরণ থেকে উপকূল রক্ষা এবং জীববৈচিত্র্য টিকিয়ে রাখার মতো গুরুত্বপূর্ণ প্রাকৃতিক সেবা প্রদানকারী এই অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বাস্তুতান্ত্রিক এলাকার আয়তন উল্লেখযোগ্যভাবে হ্রাস পেয়েছে।

বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব প্ল্যানার্সের এক গবেষণায় দেখা গেছে, ১৯৯৫ সালে ঢাকা শহরে সবুজ এলাকা ও ফাঁকা জায়গা ছিল ৫২ বর্গকিলোমিটারে বেশি। পরের পাঁচ বছরে এটি বেড়ে ৬০ বর্গকিলোমিটার ছাড়িয়েছিল। কিন্তু এরপর থেকে ঢাকায় সবুজ এলাকা ও ফাঁকা জায়গার আয়তন কমতে থাকে। ২০১৫ সালে ঢাকা শহরে সবুজ এলাকা ও ফাঁকা জায়গা ছিল ৫৩ দশমিক ১১ বর্গকিলোমিটার। ২০২৩ সালে তা কমে গিয়ে ২৯ দশমিক ৮৫ বর্গকিলোমিটারে দাঁড়িয়েছে।

পটুয়াখালীর কুয়াকাটার গঙ্গামতি সংরক্ষিত বনাঞ্চলের বিভিন্ন প্রজাতির শতবর্ষী ও চারাগাছ কেটে কিংবা উপড়ে বনের ভেতরের মাটি লুট করছে প্রভাবশালীরা। স্থানীয় বাসিন্দাদের হিসাবে গঙ্গামতি সংরক্ষিত বনাঞ্চলের আয়তন ২০০ একর। কাউয়ারচরও এর অন্তর্ভুক্ত। এটি পটুয়াখালী উপকূলীয় বন বিভাগের মহিপুর রেঞ্জের অধীন। এ পর্যন্ত ২০-২৫ একর বনভূমি উজাড় হয়ে গেছে। উপড়ে ফেলা হয়েছে প্রায় ১০ হাজার কেওড়া, আকাশমণি, বাইনগাছসহ বিভিন্ন প্রজাতির শতবর্ষী ও চারাগাছ। মাটি কাটার জন্য তারা এক্সক্যাভেটর ব্যবহার করছে। বনের ভেতরে মাটি কাটার কারণে বড় বড় পুকুরের মতো খাদের সৃষ্টি হয়েছে।

চট্টগ্রামের লোহাগাড়া উপজেলার চুনতি ইউনিয়নের লম্বাশিয়া এলাকার সংরক্ষিত বনের প্রায় এক কিলোমিটার এলাকায় অবাধে তোলা হচ্ছে বালু। নির্বিচার বালু তোলায় পাহাড়ি ছড়ার অন্তত ৩০টি স্থানে বড় বড় গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। স্থানীয়দের অভিযোগ, স্থানীয় রাজনৈতিক প্রভাবশালীরা পাঁচ বছর ধরে সংরক্ষিত এ বনের বালু উত্তোলন করে বিক্রি করে আসছে। এতে এলাকার অন্তত ৩০টি পাহাড়-টিলা বিলীন হয়ে গেছে।

পোস্টটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরো
© All rights reserved © 2023 Chtnews24.com
Website Design By Kidarkar It solutions