টেকনাফে আতঙ্ক, সীমান্তে জড়ো হচ্ছে রোহিঙ্গারা

রিপোর্টার
  • আপডেট সময় বুধবার, ২০ মার্চ, ২০২৪
  • ৫৫ দেখা হয়েছে

কক্সবাজার:- মিয়ানমারের অভ্যন্তরে রাখাইন রাজ্যের মংডুর উত্তরে নাকপুরা ও বলিবাজার এলাকায় সোমবার মধ্যরাতে থেমে থেমে ২০-২৩টি মর্টার শেলের বিস্ফোরণ ঘটে। এতে নাফ নদীর এপারে টেকনাফের হ্নীলা ও হোয়াইক্যং ইউনিয়নের খারাংখালীসহ কয়েকটি এলাকা কেঁপে ওঠে। এর আগে রোববার রাতে মিয়ানমারের ওই দুই গ্রামে ৩৩ মিনিটে ২১টি মর্টার শেলের বিস্ফোরণ ঘটে। ২২ মার্চ ওই দেশে এসএসসি পরীক্ষা শেষ হবে। এরপর থেকে সরকারি বাহিনী ও বিদ্রোহীদের মধ্যে সংঘর্ষ তীব্র রূপ নিতে পারে। এ কারণে অনেকটাই আতঙ্কে আছেন সীমান্ত এলকায় বসবাসকারী বাংলাদেশিরা।

জানা যায়, কয়েকদিন ধরে মিয়ানমারের নাকপুরা ও বলিবাজারে সশস্ত্র আরাকান আর্মির সদস্যরা অবস্থান নিয়ে সেখানকার সীমান্তরক্ষী পুলিশের (বিজিপি) সেক্টর দপ্তর ও একাধিক সীমান্ত চৌকিতে হামলা চালাচ্ছে। সরকারি বাহিনীও তাদের অবস্থান লক্ষ্য করে মর্টার শেল নিক্ষেপ করছে। টেকনাফ স্থলবন্দরে আসা মিয়ানমারের কয়েকজন ব্যবসায়ী জানান, পাঁচ-ছয়দিন ধরে আরাকান আর্মি মংডু টাউনশিপের দক্ষিণ-পূর্ব শহর রাচিডংয়ে হামলা বাড়িয়েছে। মংডু থেকে রাখাইন রাজ্যের রাজধানী সিথুয়ে (আকিয়াব) যাতায়াতের মধ্যভাগে রাচিডং শহরের অবস্থান।

আরও জানা যায়, মিয়ানমারে এসএসসি পরীক্ষা চলার কারণে জান্তা বাহিনী আর বিদ্রোহী গোষ্ঠী আরাকান আর্মির মধ্যে এতদিন যুদ্ধবিরতি ছিল। ২২ মার্চ সে দেশের এসএসসি পরীক্ষা শেষ হবে। এরপর থেকে মিয়ানমার সরকার বাহিনী ও বিদ্রোহী গোষ্ঠীর মধ্যে সংঘর্ষ ব্যাপক হারে চলতে পারে। ইতোমধ্যে দখল হয়ে যাওয়া বিজিপির ঘাঁটিগুলো পুনরুদ্ধারে চেষ্টা চালাবে জান্তা বাহিনী। তখন সীমান্তের পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ হতে পারে। এমন পরিস্থিতিতে সেখানকার রোহিঙ্গারা বাংলাদেশে অনুপ্রবেশের চেষ্টা করবে। এরই মধ্যে অনেক রোহিঙ্গা বাংলাদেশে প্রবেশের জন্য সীমান্তে জড়ো হয়েছে।

হ্নীলার বাসিন্দা ইউনুস বলেন, সোমবার রাতে তারাবির নামাজ পড়ে ঘুমিয়ে পড়েছিলাম। ঠিক রাত ১২টার পর মর্টার শেলের বিকট শব্দে বাড়িঘর কেঁপে ওঠে। এতে আমাদের ঘুম ভেঙে যায়। এখন সবাই আতঙ্কে আছে।

হ্নীলা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান রাশেদ মাহমুদ আলী জানান, রাত ঠিক ১২টার সময় মিয়ানমার থেকে মর্টার শেল বিস্ফোরণের এমন বিকট শব্দ ভেসে এলো যাতে আমিও আতঙ্কিত হই। পরে আমার এলাকার সীমান্তবর্তী বাসিন্দারা যেন আতঙ্কিত না হয়, সেজন্য বিভিন্ন মাধ্যমে খবর পাঠিয়েছি।

টেকনাফ ব্যাটালিয়ন ২ বিজিবির অধিনায়ক লে. কর্নেল মহিউদ্দিন আহাম্মদ জানান, খারাংখালী সীমান্তের পূর্বে মিয়ানমারের অভ্যন্তরে কয়েকটি গ্রেনেড বিস্ফোরণের শব্দ সীমান্ত এলাকায় শোনা গেছে বলে শুনেছি। তবে সীমান্তবর্তী বাসিন্দারা যেন আতঙ্কিত না হয়ে নিরাপদে থাকতে পারে, সেজন্য আমাদের বিজিবি টহল কার্যক্রম আগের মতো শক্ত অবস্থায় আছে।

টেকনাফ পৌরসভার প্যানেল মেয়র মুজিবুর রহমান বলেন, রাত ১২টার দিকে মর্টার শেলের বিস্ফোরণে কেঁপে ওঠে টেকনাফ পৌরসভার কয়েকটি গ্রাম। এতে লোকজনের মাঝে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে।

এদিকে মিয়ানমারের অব্যাহত সংঘাতের কারণে নতুন করে রোহিঙ্গা ঢলের আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। সীমান্তে ইতোমধ্যে শতাধিক রোহিঙ্গা বাংলাদেশে অনুপ্রবেশের জন্য জড়ো হয়েছে বলে জানা গেছে। যদিও বিজিবির শীর্ষ কর্মকর্তারা বলছে, অবৈধভাবে কোনো রোহিঙ্গাকে আর বাংলাদেশে ঢুকতে দেওয়া হবে না।

পোস্টটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরো
© All rights reserved © 2023 Chtnews24.net
Website Design By Kidarkar It solutions