ডেস্ক রির্পোট:- হাট ও বাজার (স্থাপন ও ব্যবস্থাপনা) বিধিমালা ২০২৪ এর খসড়ায় হাট-বাজার থেকে প্রাপ্ত ইজারালব্ধ অর্থের ৪ শতাংশ মুক্তিযোদ্ধাদের কল্যাণে, ৫ শতাংশ সরাসরি কেন্দ্রীয় রাজস্বে এবং বাকি ৯১ শতাংশ হাট ও বাজার সংশ্লিষ্ট এলাকায় বিভিন্ন খাতে ব্যয়ের প্রস্তাব করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (১৪ মার্চ) ভূমি মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত হাট ও বাজার (স্থাপন ও ব্যবস্থাপনা) বিধিমালা ২০২৪ চূড়ান্তকরণ সংক্রান্ত সভায় এ তথ্য জানানো হয়েছে।
ভূমিসচিব মো. খলিলুর রহমান বলেছেন, স্থানীয় শাসন শক্তিশালীকরণ ও স্থানীয় অর্থনীতিকে গতিশীল করার লক্ষ্য নিয়েই সরকার হাট ও বাজার (স্থাপন ও ব্যবস্থাপনা) বিধিমালা প্রণয়ন করছে। কল্যাণমুখী স্মার্ট স্থানীয় শাসন ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠায় সরকারের পরিকল্পনায় নতুন হাট-বাজার বিধিমালা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।
খলিলুর রহমান আরও বলেন, হাটবাজার বাংলাদেশের গ্রামীণ অর্থনীতির প্রাণকেন্দ্র। প্রান্তিক কৃষক ও সীমিত পুঁজির ব্যবসায়ীরাও যাতে হাটবাজারকেন্দ্রিক অর্থনীতিতে সম্পৃক্ত থাকতে পারেন সে বিষয়টি নিশ্চিত করা হবে। ভূমিমন্ত্রী নারায়ন চন্দ্র চন্দ এ বিষয়ে সুস্পষ্ট নির্দেশনা দিয়েছেন বলে তিনি জানান।
সভায় জানানো হয়, হাট ও বাজার (স্থাপন ও ব্যবস্থাপনা) বিধিমালা ২০২৪ এর খসড়ায় হাট-বাজার থেকে প্রাপ্ত ইজারালব্ধ অর্থের ৪ শতাংশ মুক্তিযোদ্ধাদের কল্যাণে ব্যয়ের জন্য প্রস্তাব করা হয়েছে। ৫ শতাংশ অর্থ সেলামিসরূপ সরাসরি কেন্দ্রীয় রাজস্বে যুক্ত হবে। হাট ও বাজারের ইজারালব্ধ অর্থের বাকি ৯১ শতাংশ হাট ও বাজার সংশ্লিষ্ট এলাকায় বিভিন্ন খাতে ব্যয়ের প্রস্তাব করা হয়েছে; এর মধ্যে রয়েছে স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতন, হাট-বাজারের উন্নয়ন এবং স্থানীয় সরকাএর রাজস্ব আয় ইত্যাদি। এছাড়া, হাট ও বাজারের পেরিফেরিভুক্ত সরকারি খাসজমিতে বহুতল বিশিষ্ট বিপণিবিতান নির্মাণের বিধানও রাখা হয়েছে খসড়া বিধিতে।
হাট ও বাজার (স্থাপন ও ব্যবস্থাপনা) আইন, ২০২৩ অনুযায়ী, ‘হাট ও বাজার’ বা ‘হাট বা বাজার’ শব্দটি এমন কোনো স্থানকে বোঝায় যেখানে সাধারণ মানুষ কৃষিপণ্য, ফলমূল, পশু, হাঁস-মুরগি, ডিম, মাছ, মাংস, দুধ, দুগ্ধজাত পণ্য, খাদ্য ও পানীয়, শিল্প পণ্য এবং দৈনন্দিন প্রয়োজনীয় পণ্য গুলি দৈনিক ভিত্তিতে বা সপ্তাহের একটি নির্দিষ্ট দিনে ক্রয় ও বিক্রয় করে। ওই স্থানে এই সকল পণ্য ক্রয়-বিক্রয়ের জন্য প্রতিষ্ঠিত দোকানও এর অন্তর্ভুক্ত। এই আইনের বিধিমালা এখন প্রণয়ন করা হচ্ছে।
উল্লিখিত আইন অনুযায়ী হাট ও বাজারের মালিকানা ভূমি মন্ত্রণালয়ের উপর ন্যস্ত। কালেক্টর তথা জেলা প্রশাসক স্থানীয় কর্তৃপক্ষ হিসেবে কাজ করে। সাধারণত স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের হাতে আওতাভুক্ত উপজেলা পরিষদ, পৌরসভা ও সিটি করপোরেশন হাট ও বাজারের ব্যবস্থাপনা করে থাকে। এই আইনের বিধান লঙ্ঘন করে কোনো ভূমিতে কোনো হাট ও বাজার স্থাপন করা হলে উক্ত ভূমিসহ ওই খানে স্থিত সমস্ত স্বার্থ বা স্থাপনা সরকার বাজেয়াপ্ত করতে পারবে।
২০২২-২৩ অর্থবছরের হিসাব অনুযায়ী সারা দেশে মোট হাট-বাজার সংখ্যা ১০ হাজার ২৬৫টি। এর মধ্যে ৭ হাজার ৯৫৫টি ইজারাকৃত হাট ও বাজার থেকে প্রায় ৯৯০ কোটি টাকার বেশি রাজস্ব আদায় হয়।