ডেস্ক রির্পোট:- ‘১৪ মার্চ থেকে শহীদ জিয়া মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের ক্যাম্পাসের মসজিদের ইফতার কার্যক্রম স্থগিত’ লেখা নোটিশ টানিয়ে দেয়া হয়েছে। এর আগে গত ১১ মার্চ শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় ও নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে উপ-রেজিস্ট্রার স্বাক্ষরিত সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে ক্যাম্পাসে ইফতার পার্টি আয়োজন না করার নির্দেশনা দেওয়া হয়। এ ছাড়াও ঢাকা, রাজশাহী ও বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে ইফতার মাহফিল ও আলোচনা সভায় হামলা করেছে ছাত্রলীগ। এ নিয়ে তীব্র অসন্তোষের সৃষ্টি হয়েছে সাধারণ মানুষের মধ্যে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম তথা নেট দুনিয়ায় এ ঘটনার তীব্র প্রতিবাদ চলছে। দেশের আলেম সমাজসহ সাধারণ মানুষ প্রতিবাদ করছেন। এমনকি এর প্রতিবাদে জাহাঙ্গীর নগর বিশ্ববিদ্যালয়, রংপুরের বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়সহ দেশের অসংখ্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা গণ ইফতারের আয়োজন করছেন। ইফতারে ছাত্রলীগ হামলার প্রতিবাদে গতকালও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে মানববন্ধন কর্মসূচি পালিত হয়েছে। বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থী ও শিক্ষকরা ক্ষমতাসীন দলের লাঠিয়াল হিসেবে পরিচিত ছাত্রলীগের কঠোর সমালোচনা করে বলেছে, বর্তমান সরকার ও ছাত্রলীগ ইফতার মাহফিলে হামলা এবং রোজাদার নিরীহ ছাত্রদের রক্তাক্ত করে ধর্মীয় অনুভ‚তিতে আঘাত করেছে। ইফতার মাহফিল কিংবা ইফতার রমজানেরই অংশ। রোজার মতই ইফতারও ইসলামের একটি সংস্কৃতি। ইসলামের সংস্কৃতি রুখতে সরকার দেশের সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে নিষেধাজ্ঞা জারির একটা সুদূরপ্রসারী ষড়যন্ত্র বলেই মনে হচ্ছে।
একাধিক বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসে ইফতারের ওপর বিধিনিষেধ ও ইফতার মাহফিলে হামলার তীব্র প্রতিবাদ করে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের আমীর মুফতী সৈয়দ মুহাম্মদ রেজাউল করীম পীর সাহেব চরমোনাই বলেন, বিরানব্বই ভাগ মুসলমানের দেশে ইফতার মাহফিলে নিষেধাজ্ঞা জারি ধর্মীয় অনুভ‚তিতে চরম আঘাত। এ নিষেধাজ্ঞা মুসলিম উম্মাহর বিরুদ্ধে গভীর ষড়যন্ত্র। এধরনের নিষেধাজ্ঞা দেশে নতুন সঙ্কট সৃষ্টি করবে। ইফতার মাহফিল নিষেধাজ্ঞা প্রকারান্তরে রোজা নিষিদ্ধের শামিল। দু’টি বিশ্ববিদ্যালয় অভ্যন্তরে ইফতার আয়োজনে নিষেধাজ্ঞা, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে সাহরিতে গরুর গোশত নিয়ে বিদ্বেষ চর্চার সাম্প্রদায়িক ঘটনাসমূহ একই সুতোয় গাঁথা এবং ভিনদেশি সংস্কৃতির অংশ। এর ফলে সংখ্যাগরিষ্ঠ মুসলিম শিক্ষার্থীদের মাঝে তীব্র অসন্তোষ সৃষ্টি করছে। যা বাংলাদেশে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্ট করে দেশকে গভীর সঙ্কটে ফেলতে পারে।
রমজান বিশ্বের মুসলমানদের জন্য খুবই তৎপর্যপূর্ণ মাস। ৯২ ভাগ মুসলমানের দেশে রোজাদারদের দলবদ্ধ হয়ে ইফতার করা রেওয়াজে পরিণত হয়েছে। বিভিন্ন এলাকায় সমাজের দানশীল ব্যক্তিরা যেমন বিভিন্ন মসজিদে প্রতিদিন শত শত, হাজার হাজার রোজাদারকে ইফতার করান, তেমনি বিভিন্ন রাজনৈতিক সংগঠন, সামাজিক সংগঠন, ইসলামী ধারার সংগঠন ইফতারের আয়োজন করেন। বাংলাদেশের মানুষের মধ্যে এটা চলে আসছে যুগের পর যুগ ধরে। এ বছর হঠাৎ রমজানে ইফতারের আয়োজনের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে কিছু শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এবং ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের অঙ্গ সংগঠন ছাত্রলীগ। ক্ষমতাসীন দলের ফ্রাংকেনস্টাইন হিসেবে পরিচিতি পাওয়া সংগঠনটি বেশ কয়েক জায়গায় ইফতার পার্টিতে হামলা এবং তাÐব চালিয়েছে। এমনকি ক্ষমতাসীনদের দলদাস হিসেবে চিহ্নিত ভাইস চ্যান্সেলর দিয়ে পরিচালিত শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (শাবিপ্রবি) এবং নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (নোবিপ্রবি) ইফতার পার্টির ওপর বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের ‘নিষেধাজ্ঞা’ দিয়েছে। এর প্রতিবাদে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়, রংপুর বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়সহ শত শত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে গণ ইফতার কর্মসূচি চলছে। কিন্তু সেখানেও ছাত্রলীগ বাধার সৃষ্টি করছে।
ইফতার মাহফিলে হামলা ও বিজ্ঞপ্তি দিয়ে ইফতার মাহফিল নিষিদ্ধের প্রতিবাদ করে জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশের মহাসচিব মাওলানা মঞ্জুরুল ইসলাম আফেন্দী বলেছেন, দেশের বিভিন্ন স্থান ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে মাহে রমজানের ইফতার মাহফিলে নিষেধাজ্ঞা-হামলা এবং কোথাও গরুর গোশতে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা আবহমানকাল থেকে চলে আসা ধর্মীয় সংস্কৃতি ও ঐতিহ্যের উপর পরিকল্পিত আঘাত। একটি সংখ্যাগরিষ্ঠ মুসলিম দেশে এ সব কর্মকাÐ ভাল আলামত নয়। এর পেছনে কারা কাজ করছে তাদের খুঁজে বের করা এবং এ সকল অশুভ তৎপরতা বন্ধে কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া সরকারেরই দায়িত্ব। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে রোজাদার ছাত্রদের উপর ছাত্রলীগের সন্ত্রাসী হামলার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে অবিলম্বে হামলাকারীদের গ্রেফতার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছেন খেলাফত মজলিসের আমীর মাওলানা আবদুল বাছিত আজাদ ও মহাসচিব ড: আহমদ আবদুল কাদের। এক যৌথ বিবৃতিতে নেতৃদ্বয় বলেন, ঢাকা বিশ^বিদ্যালয়ের আইন বিভাগের সাধারণ শিক্ষার্থীরা রমজানের উপর একটি সেমিনার করতে গেলে রোজাদার ছাত্রদের উপর ছাত্রলীগ নামধারী সন্ত্রাসীরা হামলা করে আইন বিভাগের কয়েকজন ছাত্রকে মারাত্মকভাবে আহত করে। ৯২ ভাগ মুসলমানের দেশের সর্বোচ্চ বিদ্যাপীঠ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে রোজাদার সাধারণ ছাত্রদের উপর এহেন সন্ত্রাসী হামলা কোনভাবেই বরদাস্ত করা যায় না। শিক্ষাঙ্গনে ছাত্রলীগের সন্ত্রাসী কর্মকাÐ মাত্রা ছাড়িয়ে গেছে।
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় : শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (শাবিপ্রবি) এবং নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (নোবিপ্রবি) ইফতার পার্টির ওপর বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের ‘নিষেধাজ্ঞার’ প্রতিবাদে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে ১৩ মার্চ গণ ইফতার কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ মিনার প্রাঙ্গণে এই গণ ইফতার কর্মসূচির আয়োজন করা হয়। প্রত্যক্ষদর্শী ও আইনশৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনী সূত্রে জানা যায়, বিকেল ৫টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার চত্বরে ধীরে ধীরে শিক্ষার্থীরা গণ ইফতারে অংশ নিতে আসতে থাকেন। এ সময় বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের কয়েকজন নেতা শিক্ষার্থীদের জানান, ‘গণ ইফতার হবে না’। একপর্যায়ে ঘটনাস্থলে আসেন গণ ইফতার কর্মসূচির আহŸায়ক জায়িদ হাসান জোহা। এরপর শাখা ছাত্রলীগের শীর্ষ দুই নেতা তাঁকে শহীদ মিনার মুক্তমঞ্চের পেছনে নিয়ে কথা বলেন। কিছুক্ষণ পর এসে দুই ছাত্রলীগ নেতা গণ ইফতার কর্মসূচির আয়োজন শুরু করতে বলেন। এরপর শামিয়ানা বিছিয়ে ছোট ছোট দলে বিভক্ত হয়ে গণ ইফতার শুরু করেন শিক্ষার্থীরা। ছাত্রলীগ পাহারাদার হিসেবে দায়িত্ব পালন করে।
ঢাবিতে হামলা : ১৩ মার্চ রমজান উপলক্ষে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের শিক্ষার্থীদের তাবলিগি আলোচনা সভায় হামলা করেছে ছাত্রলীগ। ঢাবির বঙ্গবন্ধু টাওয়ারের গেটের কাছে এ হামলায় আহত হন ৭ শিক্ষার্থী। এদের মধ্যে ৩ জন গুরুতর জখম হন। আহত শিক্ষার্থীরা হলেন- ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের ২০-২১ সেশনের শিক্ষার্থী সাফওয়ান, রেজওয়ান, রিফাত, শাহীন, সাকিব ত‚র্য, মাহাদী, কুতুবউদ্দিন। ভুক্তভোগীরা জানান, বঙ্গবন্ধু টাওয়ারের মসজিদে নামাজ শেষে রোজার ফজিলত ও তাৎপর্য নিয়ে আলোচনা করে বের হওয়ার সময় তাদের উপর এ হামলা করে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। প্রত্যক্ষদর্শী, টাওয়ারের কর্মচারী ও ভুক্তভোগীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, আইন বিভাগের বিভিন্ন বর্ষের ১৫-২০ জন শিক্ষার্থী জোহরের নামাজ পড়তে বঙ্গবন্ধু টাওয়ারে আসেন। তারা নামাজ শেষে রমজানের গুরুত্ব, তাৎপর্য ও মাসআলা মাসায়েল সম্পর্কে আলোচনা করতে চাইলে বাধা দেন বঙ্গবন্ধু টাওয়ার কর্মচারী সমিতির সভাপতি সিরাজুল হক। এ সময় সেখানে শাহবাগ থানা ছাত্রলীগের প্রতিষ্ঠাতা সাধারণ সম্পাদক তাওহীদুল ইসলাম সুজন এসে তাদের মসজিদ থেকে বেরিয়ে যাওয়ার নির্দেশ দেন। শিক্ষার্থীরা মসজিদ থেকে বের হয়ে সেন্ট্রাল মসজিদের দিকে যেতে চাইলে গেটের মুখেই তাওহীদুল ইসলাম সুজন ও তার অনুসারীরা হামলা করে।
গতকাল ইফতারে হামলা ও বিশ্ববিদ্যালয়ে ইফতার বন্ধের প্রতিবাদে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে মানববন্ধন কর্মসূচি পালিত হয়েছে। কর্মসূচিতে অংশ নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও প্রতিবাদী শিক্ষার্থীরা ছাত্রলীগের সন্ত্রাসী কর্মকাÐের তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছে।
বেরোবিতে গণ ইফতার : শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (শাবিপ্রবি) এবং নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (নোবিপ্রবি) ক্যাম্পাসে ইফতার পার্টিতে নিষেধাজ্ঞা দেওয়ার প্রতিবাদে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে (বেরোবি) গণ ইফতার কর্মসূচি চলছে। গত ১৩ মার্চ বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বাধীনতা স্মারক প্রাঙ্গণে প্রথম গণ ইফতার কর্মসূচি পালন করা হয়। গণ ইফতারের ঘণ্টা খানেক আগে থেকেই শিক্ষার্থীরা স্বতঃস্ফ‚র্তভাবে বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বাধীনতা স্মারক প্রাঙ্গণে আসতে শুরু করেন। এরপর ইফতার সামনে নিয়ে সারিবদ্ধভাবে বসে আজানের জন্য অপেক্ষা করতে থাকে। এ সময় সমবেতভাবে দোয়া পরার পরপরই ইফতারের মাধ্যমে কর্মসূচি শেষ হয়। পরবর্তীতে শিক্ষার্থীরা প্রতিদিন নানা ভাবে গণইফতার করার ঘোষণা দেন। শিক্ষার্থীরা শাবিপ্রবি ও নোবিপ্রবিতে ইফতার পার্টিতে নিষেধাজ্ঞাকে একটি ন্যক্কারজনক সিদ্ধান্ত বলে উল্লেখ করেন। ইংরেজি বিভাগের শিক্ষার্থী নাইমুর রহমান বলেন, ইফতার আমাদের সংস্কৃতি ও ঐতিহ্য। ইফতার মাহফিল স¤প্রীতির বন্ধনকে সুদৃঢ় করে। রমজানে ইফতার পার্টিতে নিষেধাজ্ঞা জানিয়ে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছে শাবিপ্রবি ও নোবিপ্রবি। আমরা এর তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই। আমরা বাংলাদেশের প্রতিটি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে আহŸান জানাই, তারা যেন কখনই এ ধরনের ইসলাম বিদ্বেষী সিদ্ধান্ত গ্রহণ না করে।
বাকৃবিতে হামলা : বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে ১২ মার্চ ইফতারের পূর্ব মুহ‚র্তে ছাত্র ইউনিয়নের কার্যালয়ে হামলা করেছে বাকৃবি শাখা ছাত্রলীগ। পরে ছাত্র ইউনিয়নের এক প্রতিবাদ লিপিতে এই ঘটনার তীব্র নিন্দা জানানো হয়। প্রতিবাদ লিপিতে জানানো হয়, রমজান উপলক্ষে ছাত্র ইউনিয়ন কার্যালয়ে পূর্ব নির্ধারিত ইফতার মাহফিল অনুষ্ঠানে ছাত্র ইউনিয়নের নেতাকর্মীরা সমবেত হতে থাকেন। হঠাৎ জব্বার মোড়ে ছাত্রলীগের দুই গ্রæপের সংঘর্ষ শুরু হলে সংগঠন কার্যালয়ে ব্যাপক ইট পাটকেল নিক্ষেপ এবং ভাঙচুর করা হয়। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, রোজী জামাল হল এবং বেগম রোকেয়া হলের সীমানা প্রাচীর নির্মাণের চাঁদাবাজির টাকার ভাগবাটোয়ারা নিয়ে ছাত্রলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক গ্রæপের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। ছাত্রলীগের দুই গ্রæপের সংঘর্ষের সময় ছাত্র ইউনিয়নের কার্যালয়ে হামলা করা হয়। এ সময় ইটের আঘাতে ছাত্র ইউনিয়ন বাকৃবি সংসদের সভাপতিসহ বেশ কয়েকজন নেতাকর্মী আহত হয়েছে। এই ঘটনার ছাত্র ইউনিয়ন বাকৃবি সংসদ-এর সভাপতি রফিকুল ইসলাম রফিক এবং সাধারণ সম্পাদক তারেক আবদুল্লাহ বিন আনোয়ার এক যৌথ বিবৃতিতে বলেন, রমজান মাসের পবিত্রতার তোয়াক্কা না করেই যে ন্যক্কারজনকভাবে ছাত্রলীগের দু’পক্ষ সংঘর্ষে লিপ্ত হয়েছে, তাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষার্থীসহ সবার নিরাপত্তা হুমকির সম্মুখীন হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন এ ঘটনা নিয়ন্ত্রণে ন্যূনতম প্রচেষ্টা চালায়নি। ছাত্র ইউনিয়ন বাকৃবি সংসদ এই ঘটনার তীব্র নিন্দা এবং ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের শাস্তির দাবি জানায়।
জাবিতে গণ ইফতার : নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (নোবিপ্রবি) ইফতার পার্টির উপর বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে ধর্মীয় অনুভ‚তিতে আঘাত হানার প্রতিবাদে গণ-ইফতারের আয়োজন করেছে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) ৪৯তম আবর্তনের শিক্ষার্থীরা। এতে প্রায় এক হাজার সাধারণ শিক্ষার্থী স্বতঃস্ফ‚র্ত অংশগ্রহণ করেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় খেলার মাঠে এ কর্মসূচীর আয়োজন করেন শিক্ষার্থীরা।
আয়োজকরা জানান, বিশ্ববিদ্যালয়ের ৪৯ ব্যাচের কয়েকজন শিক্ষার্থীর উদ্যোগে প্রতিবাদস্বরূপ এই ইফতারের আয়োজন করা হয়েছে। ব্যাচের শিক্ষার্থীরাই এর অর্থায়ন করেছেন। প্রাথমিকভাবে পাঁচশত জনের আয়োজন করা হয়। কিন্তু উপস্থিত ছিল প্রায় দেড় হাজার শিক্ষার্থী। অতিরিক্ত শিক্ষার্থীরা কেউ নিজ খরচে ইফতার কিনে এনেছেন, আবার কেউ তাদের বন্ধুদের সাথে মিলেমিশে ইফতার করেছেন। শিক্ষার্থীরা বলেন, দুই বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রশাসনের ইফতার আয়োজনে নিষেধাজ্ঞায় এখান থেকে আমরা প্রতিবাদ জানাচ্ছি। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে গণ-ইফতার আয়োজন করায় কতিপয় দুষ্কৃতকারী আলোচনা চলাকালে আয়োজকদের উপর হামলা চালিয়েছে। আমরা জাবির সাধারণ শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে এই হামলার তীব্র নিন্দা জানাই। তারা বলেন, রাজা সকল মুসলমানদের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ফরজ ইবাদত। অথচ দেশের স্বনামধন্য কয়েকটি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে ইসলাম ধর্ম চর্চার উপর নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হচ্ছে। আমরা বলতে চাই, কুচক্রীমহল যত ষড়যন্ত্র করবে আমরা আরও বেশি বেশি ইফতার আয়োজন করবো। ইনকিলাব