ডেস্ক রির্পোট:- চাঁদপুরের ফরিদগঞ্জে মৃত বৃদ্ধ মানুষ হাঁটাচলা করেন। পরিবার সদস্যদের সঙ্গে ভরণপোষণ ও ধর্মকর্ম করেন। রাতে ঘরের বিছানায় ঘুমান। জীবিত বৃদ্ধ শহিদুল ইসলামকে কাগজ-পত্রে মেরে ফেলা হয়েছে। তৈরি হয়েছে মৃত্যু সনদপত্র। তার নামে বরাদ্দকৃত বয়স্ক ভাতার কার্ডটি বাতিল করে সচ্ছল নির্মল চন্দ্র দাসের নামে ইস্যু করা হয়েছে। ফরিদগঞ্জ উপজেলায় সংঘটিত এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত ওয়ার্ড মেম্বার, ইউপি চেয়ারম্যান ও সমাজসেবা অফিস।
ভুক্তভোগী শহিদুল ইসলাম বলেন, উপজেলার গোবিন্দপুর (উত্তর) ইউনিয়নের চাঁদপুর গ্রামের জমাদার বাড়ির মৃত আবদুল আজিজের ছেলে তিনি। তার নামে ২০১৬ সালে বয়স্ক ভাতা চালু হয়। এক মাস আগে ভাতা তুলতে গেলে তাকে বলা হয় টাকা জমা হয়নি। দোকানি তাকে স্থানীয় সমাজসেবা অফিসে যোগাযোগ করতে পরামর্শ দেন।
পরদিন শহিদউল্ল্যা অফিসে গেলে মাঠকর্মী নুরুন্নবী বলেন, ‘আপনার বইতে সমস্যা আছে। এজন্য টাকা যায়নি। ঠিক করে দেবো বলে তিনি বই রেখে দেন।’ তিনি জানান, এরপর বারবার ওই অফিসে বইয়ের জন্য যান। কিন্তু তাকে বই না দিয়ে তাড়িয়ে দেয়া হয়। গতকাল দুপুরে সমাজসেবা অফিসে গিয়ে জানত চাইলে আগের মতো তালবাহানা শুরু করেন নুরুন্নবী। এক পর্যায়ে শহিদ উল্যার হাতে বইটি ফিরিয়ে দেন তিনি। এ সময় তিনি বলেন, আমি জীবিত মানুষকে যারা মেরে ফেললো তাদের বিচার চাই। আমার বয়স্কভাতা পেতে চাই। আমি এই ভাতার টাকায় ওষুধ কিনতাম। আমরা খেয়ে না খেয়ে দিন কাটাই। কী অপরাধে আমি জীবিত মানুষকে চেয়ারম্যান- মেম্বার মেরে ফেললো। সংশ্লিষ্ট সূত্রমতে, শহিদ উল্যার নামে মৃত্যু সনদপত্র জমার হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে সার্ভার থেকে তার নাম কেটে দেয়া হয়েছে। সেখানে নির্মল চন্দ্র দাস, পিতা. সন্তোষ চন্দ্র দাস, গ্রাম. ধানুয়া, ফরিদগঞ্জ চাঁদপুর এ নাম বসানো হয়েছে। দ্রুত গতিতে নাম পরিবর্তনের মাধ্যমে চেয়ারম্যান, মেম্বার ও সমাজসেবা অফিসের রহস্যজনক আচরণের বহিঃপ্রকাশ ঘটেছে বলে মন্তব্য করেছেন অভিজ্ঞ জনরা।
এ বিষয়ে ইউপি কার্যালয়ের তথ্য কেন্দ্রের উদ্যোক্তা মিলন রেকর্ড দেখে বলেন, ২০২৩ সালের ডিসেম্বর মাসের ৭ তারিখে শহিদ উল্যার মৃত্যু সনদের আবেদন করেছেন সংশ্লিষ্ট ওয়ার্ড মেম্বার ও যুবলীগ সদস্য আহাদ খান জুয়েল এবং ওই তারিখে তিনিই সনদপত্রটি গ্রহণ করেছেন। মেম্বার জুয়েল বলেন, ভুল হয়ে গেছে, ঠিক করে দেবো। কোন স্বার্থে বা ক্ষুব্ধ হয়ে এ কাজ করা হয়েছে, এমন প্রশ্নে তিনি পুনরায় বলেন, ভুল হয়ে গেছে। ইউপি চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগ সদস্য শাহ আলম বলেন, মেম্বার অনলাইনে আবেদন করে আমার কাছ থেকে মৃত্যু সনদে স্বাক্ষর নিয়েছেন। আমি মেম্বারকে বিশ্বাস করেছি। কাজটি ঠিক হয়নি। এ বিষয়ে সমাজসেবা অফিসের মাঠকর্মী নুরুন্নবী কোনো সদুত্তর দিতে পারেননি। উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা মো. মাহমুদুল হাসান বলেন, ঘটনাটি আজই জেনেছি। এখানে আমাদের কিছুই করার নেই। ইউপি চেয়ারম্যান মুত্যু সনদপত্র দিলে আমরা নিয়ম অনুযায়ী অন্য কারও নামে তা পরিবর্তন করে দেই।