শিরোনাম
৩ কোটির ক্যাশ চেক দিয়ে ডিসির পদায়নের বিষয়টি ভিত্তিহীন প্রধান উপদেষ্টার বাসভবনের সাম‌নে ৩৫ প্রত্যাশীদের অবস্থান, টিয়ারশেল নিক্ষেপ উন্নয়নের অংশীদার হলেও ১৫ বছরে শ্রমিকরা ন্যায্য পারিশ্রমিক পাননি— দেবপ্রিয় ৩ বছরে উচ্চ শিক্ষা সম্পন্ন করা প্রায় ১৯ লাখ শিক্ষার্থীর অধিকাংশই বেকার দুই সচিব ও ৬ অতিরিক্ত সচিবকে ওএসডি ২০ হাজারের বেশি বাংলাদেশির পাসপোর্ট ফেরত দিলো ভারত সচিবালয়ে হট্টগোল,শাস্তি পাচ্ছেন ১৭ উপসচিব সাভারে শ্রমিকদের সঙ্গে যৌথবাহিনীর সংঘর্ষ, গুলিবিদ্ধ একজনের মৃত্যু বাংলাদেশি নাগরিকদের ভিসা নিয়ে অবস্থান জানাল ভারত ‘পাহাড়ে শান্তি প্রতিষ্ঠায় সেনাবাহিনী সরকারকে সহযোগিতা করছে’

স্থানীয় নির্বাচনে ভিন্ন কৌশল আওয়ামী লীগের

রিপোর্টার
  • আপডেট সময় মঙ্গলবার, ২৭ ফেব্রুয়ারী, ২০২৪
  • ৯৬ দেখা হয়েছে

ডেস্ক রির্পোট:- আসন্ন উপজেলা পরিষদ, সিটি করপোরেশন ও পৌরসভা নির্বাচনে দলীয় প্রার্থী মনোনয়নে এবার ভিন্ন কৌশল অবলম্বন করতে যাচ্ছে আওয়ামী লীগ। দলটির পক্ষ থেকে এবার আগেভাগেই ঘোষণা দেয়া হয়েছে স্থানীয় নির্বাচনে কাউকে দলীয় প্রতীক দেয়া হবে না। মূলত দুটি কারণে এ ধরনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে দলটি।

প্রথম কারণ হলো- সাংগঠনিক বিশৃঙ্খলা এড়ানো ও দ্বিতীয় কারণ স্থানীয় নির্বাচনকে উৎসবমুখর ও অংশগ্রহণমূলক করা। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দলীয় প্রতীকের পাশাপাশি প্রার্থী উন্মুক্ত করে দেয়ায় সাংগঠনিকভাবে আওয়ামী লীগ মিশ্র অভিজ্ঞতা সঞ্চয় করেছে। সে অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়ে এবার ভিন্ন কৌশল নেয়া হয়েছে। দলটির বেশ কয়েকজন নীতিনির্ধারক বলেন, জাতীয় নির্বাচনের পরে দেখেছি অনেক জায়গায় দলীয় কোন্দল চরমে গিয়ে পৌঁছেছে। সেসব কোন্দল মেটাতে গিয়ে সাংগঠনিক সম্পাদকদের হিমশিম খেতে হচ্ছে। কোনো কোনো জায়গার কোন্দল তো দলীয় সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছ পর্যন্ত গেছে। তাই এবার স্থানীয় নির্বাচনগুলোতে দলীয় প্রতীক নৌকা না থাকলেও দলের সমর্থিত প্রার্থী থাকবে। অর্থাৎ এলাকায় যারা জনপ্রিয় ও ইতিবাচক ভাবমূর্তি রয়েছে তাদের সাংগঠনিকভাবে সমর্থন দেবে আওয়ামী লীগ।

আবার যেসব এলাকায় একাধিক জনপ্রিয় নেতা থাকবেন সেখানে উন্মুক্ত রাখা হবে।

যুক্তি তুলে ধরে দলের নেতারা জানান, সাংগঠনিকভাবে যদি কাউকে সমর্থন দেয়া হয় তাহলে সেখানে বিরোধ হওয়ার সম্ভাবনা কম হবে। এখন জাতীয় নির্বাচনের পর প্রত্যেক এলাকায় স্থানীয় এমপি নির্বাচিত হয়েছেন। তাদের বলয়ও যেনো কম থাকে বা বিরূপ প্রভাব না থাকে সে বিষয়টিও গুরুত্বসহকারে দেখা হচ্ছে। তারা জানান, দলীয় প্রতীক না থাকলেও সাংগঠনিক সমর্থন থাকায় নির্বাচন আরও বেশি উৎসবমুখর হবে বলে দলীয়ভাবে ধারণা করা হচ্ছে। পাশাপাশি বিরোধ কমার সম্ভাবনাও রয়েছে। এসব নির্বাচনে ১৪ দলীয় জোটের শরিকদের সঙ্গে কোনো সমঝোতাও করবে না ক্ষমতাসীনরা। বরং প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ নির্বাচনের স্বার্থে জাতীয় নির্বাচনের মতোই জোট শরিকদের সবাইকে প্রার্থী দিতে উৎসাহ দেবে। জোট শরিকরাও নির্বাচনগুলোতে নিজেদের মতো আলাদাভাবে অংশগ্রহণের প্রস্তুতি শুরু করেছে।

এ প্রসঙ্গে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম বলেন, অতীত নির্বাচন থেকে আমরা দেখেছি প্রতীক ও স্বতন্ত্রের লড়াই। এতে দল সাংগঠনিকভাবে অনেকটা দুর্বল হয়েছে বলে আমি মনে করি। তাই এবার স্থানীয় নির্বাচনে প্রতীক না দেয়া হলেও সাংগঠনিকভাবে প্রার্র্থীদের সমর্থন দেবে আওয়ামী লীগ। তবে অন্যদের বিষয়েও আমরা ছাড় দিচ্ছি। যদিও কেউ নির্বাচনে অংশ নিতে চায় তারা নিতে পারবেন। তবে যাদের দলীয় ভাবমূর্তি ভালো, স্বচ্ছ ও জনপ্রিয় আওয়ামী লীগ কেবল তাদেরকে সমর্থন দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। বিষয়টি নিয়ে দলের সাংগঠনিক সম্পাদকরা কাজ করছেন।
একই প্রসঙ্গে দলটির প্রেসিডিয়াম সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক গণমাধ্যমকে বলেন, উপজেলা নির্বাচনে অংশগ্রহণমূলক দেখানোর কৌশলগত পদক্ষেপ নিইনি, নির্বাচনকে সর্বজনীন করার জন্যই দলীয় প্রতীক থেকে সরে আসার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। ফলে উপজেলা পর্যায়ে সঠিক নেতৃত্ব উঠে আসবে বলে মনে করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আওয়ামী লীগ দলীয়ভাবে নির্বাচনে প্রতীক না দিলে কারও কিছু বলারও থাকবে না।

এর আগে ২২শে জানুয়ারি রাতে গণভবনে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী কমিটির জরুরি সভা শেষে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, উপজেলা নির্বাচনে আমরা দলের প্রতীকের প্রার্থিতা দেবো কি না… এটা নিয়ে আলোচনা হয়েছে। ওয়ার্কিং কমিটির প্রায় সদস্যই সর্বসম্মত যে, এবারের উপজেলা নির্বাচনে আমাদের দলীয় প্রতীক নৌকা ব্যবহার করা হবে না। নৌকা না দেয়ার জন্য ওয়ার্কিং কমিটির সভায় এখন অভিমত পেশ করেছে। আমাদের সভাপতি শেখ হাসিনা বলেছেন, সবার অভিমতের সঙ্গে তিনি ভিন্নমত প্রকাশ করেন না। স্থানীয় সরকার মনোনয়ন বোর্ডে এ বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত জানিয়ে দেবেন। আপাতত এটা ওয়ার্কিং কমিটির সিদ্ধান্ত। ওয়ার্কিং কমিটি যেটা সিদ্ধান্ত নেয়, মনোনয়ন বোর্ড সেই সিদ্ধান্ত বহাল করে। এটা মনোনয়ন বোর্ডের আনুষ্ঠানিকতা। সেই আনুষ্ঠানিকতার আগে বিষয়টি নিয়ে আর কিছু বলতে চাই না। আওয়ামী লীগ নেতারা বলেন, স্থানীয় সরকার নির্বাচনে তৃণমূল নেতাকর্মীদের ওপরে প্রভাব যাতে না পড়ে সেজন্যই নৌকা প্রতীক উঠিয়ে দেয়া হয়েছে। বরং নৌকা প্রতীক থাকলে তৃণমূল পর্যায়ে আরও প্রভাব বেশি পড়ে। এখানে সুবিধা হলো- নৌকার বিপক্ষে কেউ কাজ করবে না। নৌকা নিয়ে কোনো বিভক্তি দেখা দেবে না। সবকিছু বিবেচনা করেই এই কৌশল নিয়েছে আওয়ামী লীগ।

তারা আরও জানান, তৃণমূলে যাতে এসব দ্বন্দ্ব ও সংঘাত না বাড়ে তার জন্য ইতিমধ্যে দলীয় সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নির্দেশনা দিয়েছেন। এ ছাড়া আওয়ামী লীগের ৮ বিভাগে দায়িত্বপ্রাপ্ত সাংগঠনিক টিম এসব নিয়ন্ত্রণে কাজ করছে। আর গত দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপি না এসে ভুল করেছে। হয়তো তারা স্থানীয় সরকার নির্বাচনগুলোতে অংশগ্রহণ করবে। এতে সব দলের অংশগ্রহণে একটি ভালো নির্বাচন হবে। সংশ্লিষ্টরা জানান, উপজেলা পরিষদ নির্বাচন ৪টি দফায় হবে। প্রথম দফায় ভোট হবে ৪ঠা মে। দ্বিতীয় ১১, তৃতীয় ১৮ ও চতুর্থ দফায় ভোট হবে ২৪শে মে।

দলীয় নেতারা জানান, উপজেলা নির্বাচনে আওয়ামী লীগ দলীয় প্রতীক নৌকা উঠিয়ে দেয়ায় প্রার্থীর সংখ্যা বাড়বে। আবার যোগ্য প্রার্থীরা নির্বাচনে জিতেও আসবেন। কিন্তু ক্ষমতাসীন দলের পদে থাকা একাধিক নেতা এ নির্বাচনে অংশ নেয়ায় তাদের নিজেদের মধ্যে সংঘাত ও সংঘর্ষ বেড়ে যাবে বলে মনে করছেন। তাদের শঙ্কা স্থানীয় নির্বাচনে হতে পারে প্রাণহানিও। ২০১৫ সালে স্থানীয় সরকার আইন সংশোধন করে দলগতভাবে প্রতীক দিয়ে নির্বাচনের সিদ্ধান্ত হয়। সে সময় এর বিরোধিতা করে বিএনপিসহ বিভিন্ন দল। এমনকি আওয়ামী লীগের তৃণমূলও এর বিরুদ্ধে ছিল। কিন্তু সবকিছু উপেক্ষা করে গত ৮ বছর দলীয় প্রতীকে স্থানীয় সরকার নির্বাচনে অংশ নেয় আওয়ামী লীগ। ফলে দলীয় কোন্দল ও দলাদলি পৌঁছে গেছে গ্রাম পর্যায়ে।মানবজমিন

পোস্টটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরো
© All rights reserved © 2023 Chtnews24.net
Website Design By Kidarkar It solutions