চট্টগ্রাম:- চট্টগ্রামের ১৫ উপজেলায় চেয়ারম্যান পদে নির্বাচন করতে দৌড়ঝাঁপ করছেন দেড় শতাধিক সম্ভাব্য প্রার্থী। দলীয় প্রতীক না থাকলেও দলের আশীর্বাদ পেতে সম্ভাব্য প্রার্থীরা বিভিন্ন মহলে ধরনা দিচ্ছেন। আগ্রহীদের মধ্যে আওয়ামী ঘরানার প্রার্থীদের পাশাপাশি বিএনপি ও জাতীয় পার্টির কিছু নেতাও আছেন। আছেন সাবেক ভাইস ও নারী চেয়ারম্যানরাও।
চট্টগ্রামের উপজেলাগুলো হলো- মিরসরাই, সীতাকুণ্ড, সন্দ্বীপ, ফটিকছড়ি, রাউজান, রাঙ্গুনিয়া, হাটহাজারী, বোয়ালখালী, কর্ণফুলী, আনোয়ারা, পটিয়া, সাতকানিয়া, লোহাগাড়া, চন্দনাইশ ও বাঁশখালী। প্রতিটি উপজেলাতেই ডজনখানেক সম্ভাব্য প্রার্থীর দৌড়ঝাঁপ দেখা যাচ্ছে। এসব আসনের স্থানীয় এমপিদের আশীর্বাদ পেয়ে প্রার্থী হতে চাইছেন বেশিরভাগ নেতা। তবে স্থানীয় রাজনৈতিক মেরুকরণের কারণে অনেকে দলের কেন্দ্রীয় নেতাদের কাছেও ধরনা দিচ্ছেন।
নির্বাচন কমিশন আগামী ৪, ১১, ১৮ ও ২৫ মে চার ধাপে সারা দেশে উপজেলা চেয়ারম্যান, ভাইস চেয়ারম্যান ও নারী ভাইস চেয়ারম্যান পদে নির্বাচন আয়োজনের প্রস্তুতি নিচ্ছে। চট্টগ্রামের বিভিন্ন উপজেলায় চেয়ারম্যান পদ ছাড়াও ভাইস চেয়ারম্যান ও নারী ভাইস চেয়ারম্যান পদে অংশ নিতেও সম্ভাব্য প্রার্থীদের তৎপরতা বেশ লক্ষণীয়। সদ্য সমাপ্ত সংসদ নির্বাচনে প্রার্থী হতে চট্টগ্রামের ছয়জন উপজেলা চেয়ারম্যান পদত্যাগ করেছিলেন। এর মধ্যে তিনজন উপজেলা চেয়ারম্যান ইতোমধ্যে এমপি নির্বাচিত হয়েছেন। বাকি তিনজনের দুজন হেরেছেন, একজন প্রার্থিতা প্রত্যাহার করেছিলেন। ফলে যে তিন উপজেলার চেয়ারম্যানরা এমপি হয়েছেন সেখানে আসছেন নতুন মুখ। আর যারা হেরেছেন তারা আবারও উপজেলা নির্বাচনি যুদ্ধে নামতে পারেন। এর বাইরে বেশিরভাগ উপজেলাতে বর্তমান চেয়ারম্যান ও কিছু উপজেলায় সাবেক চেয়ারম্যান, উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান ও নারী ভাইস চেয়ারম্যানরা এবার চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে পারেন। এর সঙ্গে প্রার্থী হিসেবে মাঠে থাকবেন নতুন বেশকিছু মুখ। প্রার্থী হতে আগ্রহী আওয়ামী লীগ, অঙ্গ সহযোগী সংগঠনের এসব নেতারা শুরুতে দলের আশীর্বাদ চাইবেন। তবে আশীর্বাদ না পেলেও অনেকে নির্বাচনি মাঠ থেকে সরবেন না। ফলে এবারের নির্বাচন প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ হবে বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল। এদিকে দলীয়ভাবে নির্বাচন বর্জন করলেও দলীয় সিদ্ধান্তের বাইরে গিয়ে বিএনপি ঘরানার কিছু প্রার্থীও কয়েকটি উপজেলায় প্রার্থী হতে পারেন। এর বাইরে হাটহাজারী, বাঁশখালীসহ কয়েকটি উপজেলায় জাতীয় পার্টি ও শক্তিশালী স্বতন্ত্র প্রার্থীরা নির্বাচনে প্রার্থী হতে পারেন। ফলে আওয়ামী ঘরানার প্রার্থীদের জিততে হলে নিজের দলের প্রতিপক্ষের পাশাপাশি অন্য দলের প্রার্থীদেরও মোকাবিলা করতে হতে পারে। মিরসরাই উপজেলায় অন্তত ডজনখানেক সম্ভাব্য প্রার্থী মাঠে দৌড়ঝাঁপ করছেন। এদের মধ্যে উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি জাহাঙ্গীর কবির চৌধুরী বলেন, ‘দীর্ঘ সময় ধরে রাজনীতিতে অংশগ্রহণের ফলে মানুষের সঙ্গে আমার যে হৃদ্যতা তৈরি হয়েছে, সেখান থেকে অনেকেই আমাকে প্রার্থী হিসেবে দেখতে চান। যেহেতু আমি দলের দায়িত্বে আছি, দলীয় ফোরামেও বিষয়টি আলোচনা হবে আশা রাখি। আমি নির্বাচনের জন্য শতভাগ প্রস্তুতি নিচ্ছি।’
আরেক প্রার্থী উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক এনায়েত হোসেন নয়ন বলেন, ‘আমি সব সময় গণমানুষের জন্য রাজনীতি করি। স্মার্ট মিরসরাই বিনির্মাণে আমি কাজ করে যাচ্ছি। আরও গভীরভাবে এই যাত্রায় যুক্ত হতে প্রার্থী হতে চাই।’ পার্শ¦বর্তী সীতাকুণ্ড ও সন্দ্বীপ উপজেলায়ও অন্তত ২০ জন প্রার্থী নির্বাচনি মাঠ চষে বেড়াচ্ছেন। সন্দ্বীপ উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আনোয়ার হোসেন বলেন, ‘দীর্ঘ সময় ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালনের পাশাপাশি রাজনৈতিক দায়বদ্ধতা থেকে পুরো উপজেলার মানুষের জন্য কাজ করার চেষ্টা করেছি। আগামী দিনে আরও ঘনিষ্ঠভাবে মানুষের সেবা করার প্রত্যাশায় প্রার্থী হতে চাই।’