ঢাকা:- জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর দ্বাদশ জাতীয় সংসদের উদ্বোধনী অধিবেশন শুরু হচ্ছে মঙ্গলবার (৩০ জানুয়ারি)। সংসদ অধিবেশনকে সামনে রেখে রাষ্ট্রপতির ভাষণের খসড়া মন্ত্রিসভায় চূড়ান্ত করা হবে সোমবার।
নতুন সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর প্রথম মন্ত্রিসভা বৈঠকে রাষ্ট্রপতির ভাষণের খসড়া অনুমোদন দেওয়া হয়। সোমবার (২৯ জানুয়ারি) চূড়ান্ত অনুমোদন দেওয়া হবে।
মঙ্গলবার বিকেল ৩টায় বসবে দ্বাদশ জাতীয় সংসদের প্রথম অধিবেশন। ইতোমধ্যেই জাতীয় সংসদের প্রথম অধিবেশনের জন্য সব প্রস্তুতি সম্পন্ন করা হয়েছে। আসন বিন্যাসের কাজও চূড়ান্ত করেছে সংসদ সচিবালয়।
মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ সূত্র জানায়, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে বেলা সাড়ে ১০টায় মন্ত্রিসভা বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এতে সভাপতিত্ব করবেন। সভায় রাষ্ট্রপতির ভাষণ ছাড়াও ‘সিটি কর্পোরেশন (সংশোধন) আইন, ২০২৪’র এবং ‘গ্রাম আদালত (সংশোধন) আইন, ২০২৪’ এর খসড়া অনুমোদনের জন্য উপস্থাপন করা হচ্ছে।
রাষ্ট্রপতির ভাষণ
সংবিধানের ৭৩ (২) ধারা অনুযায়ী, সাধারণ নির্বাচনের পর সংসদের প্রথম অধিবেশনের সূচনায় এবং প্রতি বছরের প্রথম অধিবেশনের শুরুতে রাষ্ট্রপতি জাতীয় সংসদে ভাষণ দেন। গত ১৫ জানুয়ারি প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত মন্ত্রিসভার প্রথম বৈঠকে রাষ্ট্রপতির ভাষণের খসড়া অনুমোদন দেওয়া হয়।
ওই দিন বৈঠক শেষে সচিবালয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব মো. মাহবুব হোসেন সাংবাদিকদের বলেন, সংবিধানের ৭৩ (২) ধারা অনুযায়ী, সাধারণ নির্বাচনের পর সংসদের প্রথম অধিবেশনের সূচনায় এবং প্রতি বছরের প্রথম অধিবেশনের শুরুতে রাষ্ট্রপতি সংসদে ভাষণ দেন। যখন নতুন সরকার শুরু করে বা বছরের শুরুতে যে অধিবেশন হয় সেই অধিবেশনে রাষ্ট্রপতি ভাষণ দেন। সেই ভাষণের খসড়া উপস্থাপন করা হয়েছিল, সেটি অনুমোদন করা হয়েছে। আজ সেই ভাষণের খসড়া চূড়ান্ত অনুমোদন দেওয়া হবে।
সিটি কর্পোরেশন আইনে যুক্ত হচ্ছে ‘স্বতন্ত্র প্রার্থীর সংজ্ঞা’
মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে পাঠানো সার-সংক্ষেপে বলা হয়, সিটি কর্পোরেশন (সংশোধন) আইনের বেশ কয়েকটি ধারা সংশোধনের প্রস্তাব দিয়েছে স্থানীয় সরকার বিভাগ। স্থানীয় সরকার (সিটি কর্পোরেশন) আইনের (৪৮ক) দফা ‘রাজনৈতিক দল’ সংজ্ঞা বাতিলের প্রস্তাব করা হয়েছে। এতে বলা হয়, ‘স্বতন্ত্র প্রার্থী’ অর্থ এইরূপ কোনো প্রার্থী যিনি রাজনৈতিক দল কর্তৃক মনোনয়নপ্রাপ্ত নহেন। এ ধারা পাস হলে সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে কোনো রাজনৈতিক দলের দলীয় প্রতীক ব্যবহার করতে পারবেন না প্রার্থীরা।
গ্রাম আদালতের বিচারের সময়সীমা ১৫ দিন
‘গ্রাম আদালত (সংশোধন) আইন, ২০২৪’ এর খসড়া ২০২২ সালের ২৫ জুলাই মন্ত্রিসভার বৈঠকে নীতিগত অনুমোদন দেওয়া হয়। গ্রাম আদালত যে কোনো ব্যক্তিকে আদালতে হাজির থেকে এবং সাক্ষী দেওয়ার জন্য অথবা কোনো দলিল দাখিল করার জন্য সমন দিতে পারবে—এমন সুবিধা অন্তর্ভুক্ত করে আইনের খসড়া প্রস্তাব করা হয়েছিল।
সংশোধনী আইনে এবার আটটি ধারা সংশোধন ও দুইটি নতুন বিষয়ে সংযোজন করা হচ্ছে। বিচার নিষ্পত্তির সময়সীমা ৩০ দিনের পরিবর্তে ১৫ দিন করা হচ্ছে এবং গ্রাম আদালতের আর্থিক এখতিয়ার ৭৫ হাজার টাকার পরিবর্তে তিন লাখ টাকা করার প্রস্তাব করা হয়েছে। দেশের প্রতিটি ইউনিয়নের এখতিয়ারাধীন এলাকায় কতিপয় বিরোধ ও বিবাদের সহজ ও দ্রুত নিষ্পত্তির লক্ষ্যে গ্রাম আদালত গঠনকল্পে এই আইন প্রণীত হয়।
সংশোধনী প্রস্তাবে, ‘নাবালক’ শব্দের পরিবর্তে ‘শিশু’ শব্দটি প্রতিস্থাপন এবং সংশ্লিষ্ট অন্যান্য পরিবর্তন করা হয়েছে।