শিরোনাম
ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে আওয়ামী লীগের পুনর্বাসন নিয়ে রুদ্ধদ্বার বৈঠক হিজবুল্লাহ প্রধান হাসান নাসরাল্লাহ নিহত ডেঙ্গুতে একদিনে সর্বোচ্চ ৭ জনের মৃত্যু, হাসপাতালে ৮৬০ ‘জুমল্যান্ড’ প্রতিষ্ঠার বায়না ধরেছে একদল চতুর দেশবিরোধী ষড়যন্ত্রকারী পাহাড়ে সংঘটিত সহিংসতার তদন্ত শুরু কাল,তদন্ত কমিটি প্রত্যাখ্যান ইউপিডিএফের রাঙ্গামাটিতে জামায়াত-শিবিরকর্মীদের মিডিয়া বিষয়ক প্রশিক্ষণ কর্মশালা রাঙ্গামাটিতে কুকুরের কামড়ে আহত ৮০ জুলাই-আগস্ট গণহত্যা: আন্তর্জাতিক আদালতে মামলা করতে পারবে বাংলাদেশ খুলে দেওয়া হলো তিস্তার ৪৪ জলকপাট, নদীপাড়ে আতঙ্ক রাঙ্গামাটির বাঘাইছড়িতে বিএনপি নেতাকে অব্যাহতি

জাকাত নিয়ে নতুন উদ্যোগ নিচ্ছেন মাদ্রাসা শিক্ষকরা

রিপোর্টার
  • আপডেট সময় শুক্রবার, ২৬ জানুয়ারী, ২০২৪
  • ১৩১ দেখা হয়েছে

ডেস্ক রিরোট:- জাকাত-ফিতরা ও দানের টাকা যাতে আরও বেশি করে জনকল্যাণে খরচ করা যায় তার উদ্যোগ নিতে যাচ্ছেন দেশের আলিয়া ধারার মাদ্রাসাপ্রধান ও আলেম-ওলামারা। দেশের মানুষের শিক্ষা, চিকিৎসাসহ কল্যাণমূলক খাতে যাতে এসব টাকা ব্যয় করা হয় সে ব্যাপারে মানুষ উদ্বুদ্ধ করতে শিগগিরই কার্যক্রম হাতে নেবেন তারা। ইসলামি বিধান মেনে এই অর্থ ব্যয়ের ক্ষেত্র তুলে ধরে মানুষকে সচেতন করা হবে সেমিনারের মাধ্যমে। পাশাপাশি আলিয়া ধারার মাদ্রাসার দরিদ্র তহবিলে এসব অর্থ সংগ্রহেরও উদ্যোগ নেওয়া হবে।

সম্প্রতি নবনিযুক্ত শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেলের সঙ্গে আলিয়া ধারার মাদ্রাসা প্রধানরা বৈঠক করেন। ওই বৈঠকে আলিয়া ধারার মাদ্রাসার উন্নয়ন নিয়ে সরকারের সহযোগিতা চান তারা। বৈঠকে শিক্ষামন্ত্রী মানুষকে ইসলামি বিধান মেনে জনকল্যাণে অর্থ ব্যয় করার জন্য উদ্বুদ্ধ করতে আহ্বান জানান।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে চট্টগ্রামের হাটহাজারী এলাকার সিফাতুল-ই কামিল মাদ্রাসার অধ্যক্ষ আবুল ফারহা মোহাম্মদ ফরিদ উদ্দিন বলেন, ‘জাকাত, ফিতরা ও দানের অর্থ জনকল্যাণে ব্যয় করার জন্য আমরা মানুষকে উদ্বুদ্ধ করতে রমজানের আগেই উদ্যোগ নেবো। আমরা একটা সেমিনার করবো জাতীয় পর্যায়ে। সেখানে আমরা বলবো— প্রকৃত দ্বীনের জন্য যারা কাজ করছেন তাদের জাকাত ও ফিতরার টাকা দেবেন। রাষ্ট্রের যে জনকল্যাণমূলক কাজের ফান্ড আছে সেখানে অর্থ দেবেন। জনকল্যাণমূলক কাজের জন্য জাকাত, ফিতরা ও সাধারণ দানের জন্য মানুষকে উদ্বুদ্ধ করবো।’

বৈঠকে জাকাত, ফিতরা ও দানের টাকা কোন কোন খাতে ব্যয় করা যাবে সে প্রসঙ্গ ওঠে। বৈঠকে বলা হয়, জাকাত-ফিতরা ও দানের টাকা সংগ্রহ করে থাকে কওমি মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ। অথচ আলিয়া ধারার মাদ্রাসাগুলো সরকারের ওপর নির্ভর করে। যেসব মাদ্রাসা এমপিওভুক্ত, সেসব প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকরা কোনোভাবে জীবনযাপন করলেও মাদ্রাসার দরিদ্র ছাত্রদের সহায়তা করার সক্ষমতা নেই তাদের। আর যেসব প্রতিষ্ঠান নন-এমপিও, সেসব প্রতিষ্ঠানের উন্নয়ন তো দূরের কথা, শিক্ষকরাই মানবেতর জীবনযাপন করেন। শিক্ষার্থীদের কোনও ধরনের সহায়তা দিতে পারে না প্রতিষ্ঠানগুলো। অথচ দরিদ্র শিক্ষার্থীদের জাকাত, ফিতরা ও দানের টাকায় হক রয়েছে। ইসলামি বিধানে আলিয়া ধারার মাদ্রাসা, হাসপাতালে, দরিদ্র ও ঋণগ্রস্ত মানুষের জরুরি চিকিৎসার জন্য, যেকোনও ধরনের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের দরিদ্র তহবিলে দান করলে একই সওয়াব পাওয়া যাবে।

আলিয়া ধারার মাদ্রাসা প্রধান ও আলেম-ওলামারা জানান, জাকাত দেওয়া যাবে আটটি ক্ষেত্রে। এর মধ্যে ঋণগ্রস্ত ব্যক্তি, আল্লার রাস্তায় ও মুসাফিরকে জাকাত দেওয়ার যে বিধান রয়েছে, সেই বিধানের আলোকে ঋণগ্রস্ত দরিদ্র ছাত্র, শিক্ষক, দরিদ্র রোগীর চিকিৎসার জন্য জাকাত দিতে কোনও বাধা নেই। আলিয়া মাদ্রাসা যেহেতু দীনি শিক্ষা দেয়, সেখানেও জাকাতের অর্থ দেওয়া যাবে। কারণ, আল্লাহর দীনকে সমুন্নত করার লক্ষ্যে যেকোনও ধরনের প্রচেষ্টা ‘ফি সাবিলিল্লাহ’ বা আল্লাহর রাস্তার অন্তর্ভুক্ত। জিহাদ, দীনি ইলম অর্জনের যাবতীয় পথ এবং দীন প্রচারের যাবতীয় মাধ্যম এই খাতের অন্তর্ভুক্ত।

এ বিষয়টি নিশ্চিত করে সরকারি মাদ্রাসা-ই আলিয়ার আকাইদ বিভাগের অধ্যাপক মো. মনজুর রহমান বলেন, ঋণগ্রস্ত ব্যক্তিকে জাকাত দেওয়া যাবে। কোনও ব্যক্তির শিক্ষা-চিকিৎসার জন্য জাকাত ও ফিতরার অর্থ ব্যয় করা যাবে।

কওমি মাদ্রাসার মাধ্যমে দিলে বেশি সওয়াব পাওয়া যাবে নাকি আলিয়া মাদ্রাসার মাধ্যমে যারা জাকাতের অর্থ প্রাপ্য তাদের দিলে বেশি সওয়াব পাওয়া যাবে– এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, শর্ত মেনে জাকাত ও ফিতরা দিলে সওয়াব সব ক্ষেত্রেই সমান। সাধারণত দান করার ক্ষেত্রে দরিদ্র ব্যক্তিদের যে কেউ দান করতে পারেন। অন্যদিকে মানুষের কল্যাণে যিনি দান করতে চান তিনি দান করতে পারবেন। সে জন্য বিশেষ কোনও ব্যক্তিকেই দিতে হবে এমন কোনও কথা নেই বলে জানিয়েছেন আলেম-ওলামারা।

উল্লেখ্য, জাকাতের আটটি খাত হলো–১. ফকির–যারা গরিব, ২. মিসকিন–যাদের আর্থিক অবস্থা গরিবের চেয়েও খারাপ, ৩. আমেল–জাকাতের কাজে নিযুক্ত ব্যক্তি, ৪. মন জয় করার জন্য–ইসলামের বিরোধিতা বন্ধ করা বা ইসলামের সহায়তার জন্য কারও মন জয় করার প্রয়োজন হলে তাকে জাকাত দেওয়া যাবে, ৫. দাসমুক্তি–তথা দাসত্ব শৃঙ্খলে আবদ্ধ লোক ও ইসলামের জন্য বন্দিদের মুক্ত করাতে তাদের জন্য জাকাতের অর্থ দেওয়া যাবে।

৬. ঋণগ্রস্তদের ঋণ পরিশোধ–ঋণভারে জর্জরিত লোকদের ঋণমুক্তির জন্য জাকাতের টাকা দেওয়া জায়েজ।

৭. আল্লাহর পথে ব্যয়–কোরআনের ভাষায় এ খাতের নাম হলো ‘ফি সাবিলিল্লাহ’, যার অর্থ হচ্ছে আল্লাহর পথে। আল্লাহর পথে কথাটি খুব ব্যাপক। মুসলমানদের সব নেক কাজ আল্লাহর পথের কাজ।

৮. মুসাফির–মুসাফির বা প্রবাসী লোকের বাড়িতে যত ধন-সম্পত্তিই থাকুক না কেন, পথে বা প্রবাসে তিনি যদি অভাবগ্রস্ত হয়ে পড়েন, তাহলে তাকে জাকাত তহবিল থেকে প্রয়োজনীয় সাহায্য দেওয়া যাবে। ট্রিবিউন

পোস্টটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরো
© All rights reserved © 2023 Chtnews24.net
Website Design By Kidarkar It solutions