ডেস্ক রির্পোট:- দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন-পরবর্তী প্রতিক্রিয়া জানিয়ে বক্তব্য রেখেছে যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্য। উভয় দেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে বাংলাদেশ সময় সোমবার রাতে দেয়া বিবৃতিতে দাবি করা হয়েছে, সব রাজনৈতিক দল অংশ না নেয়ায় নির্বাচন অবাধ হয়নি। একই সঙ্গে দুই দেশের পক্ষ থেকে সব রাজনৈতিক দলকে সহিংসতার পথ ত্যাগ করারও আহ্বান জানানো হয়েছে।
মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে দেয়া বিবৃতিতে বলা হয়, ‘যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের জনগণ এবং গণতন্ত্র, শান্তিপূর্ণ সমাবেশের স্বাধীনতা এবং মতপ্রকাশের স্বাধীনতার জন্য তাদের আকাঙ্ক্ষাকে সমর্থন করে। যুক্তরাষ্ট্র আমলে নিয়েছে যে আওয়ামী লীগ দল সংসদ নির্বাচনে সংখ্যাগরিষ্ঠ আসনে জিতেছে। হাজার হাজার রাজনৈতিক বিরোধী সদস্যদের গ্রেফতার এবং নির্বাচনের দিন অনিয়মের খবরে যুক্তরাষ্ট্র উদ্বিগ্ন। অন্যান্য পর্যবেক্ষকের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্র একমত, নির্বাচন অবাধ বা সুষ্ঠু ছিল না। এবং দুঃখের বিষয় হলো সব দল এতে অংশ নেয়নি।’
এতে আরো বলা হয়, ‘যুক্তরাষ্ট্র নির্বাচনের সময় এবং এর আগের মাসগুলোয় সংঘটিত সহিংসতার নিন্দা করে। আমরা বাংলাদেশ সরকারকে সহিংসতার অভিযোগগুলো নিয়ে বিশ্বাসযোগ্যভাবে তদন্ত এবং অপরাধীদের জবাবদিহিতার আওতায় আনতে উৎসাহিত করছি। আমরা সব রাজনৈতিক দলকে সহিংসতা প্রত্যাখ্যানের আহ্বান জানাই।’
মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে আরো বলা হয়, ‘একটি মুক্ত ও অবাধ ইন্দোপ্যাসিফিক নিশ্চিতে আমাদের লক্ষ্যকে এগিয়ে নেয়ার পাশাপাশি বাংলাদেশে মানবাধিকার ও নাগরিক সমাজের সমর্থন অব্যাহত রাখা এবং নাগরিক পর্যায়ে ও অর্থনৈতিক সম্পর্ককে আরো গভীর করতে বাংলাদেশের সঙ্গে অংশীদারত্বে আমরা অঙ্গীকারবদ্ধ।’
ব্রিটিশ সরকারের পক্ষ থেকে গতকাল রাতে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে দেশটির কমনওয়েলথ অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট অফিস (এফসিডিও বা ব্রিটিশ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়)। এক মুখপাত্রের বরাত দিয়ে বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ‘এবারের নির্বাচনে সব রাজনৈতিক দল অংশ নেয়নি। বাংলাদেশী জনগণের সামনে ভোট প্রয়োগের সবগুলো বিকল্পও খোলা ছিল না।’
এফসিডিওর মুখপাত্রের ভাষ্যমতে, ‘৭ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত বাংলাদেশের দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ফলাফলকে আমলে নিয়েছে যুক্তরাজ্য। গণতান্ত্রিক নির্বাচনের বিষয়টি বিশ্বাসযোগ্য, উন্মুক্ত ও অবাধ প্রতিযোগিতার ওপর নির্ভরশীল। মানবাধিকারের প্রতি শ্রদ্ধা, আইনের শাসন ও যথাযথ প্রক্রিয়া গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার অপরিহার্য উপাদান। নির্বাচনের সময় এসব মান ধারাবাহিকভাবে পূরণ হয়নি।’
মুখপাত্র বলেন, ‘ভোটের আগে বিরোধী দলের সদস্যদের উল্লেখযোগ্যসংখ্যক গ্রেফতারে আমরা উদ্বিগ্ন। আমরা প্রচারণার আগে এবং সময়কালে সংঘটিত ভয়ভীতি ও সহিংসতার নিন্দা জানাই। রাজনীতিতে এ ধরনের আচরণের কোনো স্থান নেই।’
বিজ্ঞপ্তিতে আরো বলা হয়, ‘এবারের নির্বাচনে সবগুলো রাজনৈতিক দল অংশ নেয়নি। বাংলাদেশী জনগণের সামনে ভোট প্রয়োগের সবগুলো বিকল্পও খোলা ছিল না।’
এফসিডিওর বিবৃতিতে সব রাজনৈতিক দলের প্রতি বিরোধ নিরসনের উদ্যোগ গ্রহণের আহ্বান জানানো হয়েছে। সেই সঙ্গে বাংলাদেশের জনসাধারণের স্বার্থকে সামনে এগিয়ে নিতে অভিন্ন পথ খুঁজে বের করারও তাগিদ দেয়া হয়েছে।