ডেস্ক রির্পোট:- শুরু হলো দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ভোটগ্রহণ। সারা দেশে একযোগে রবিবার (৭ জানুয়ারি) সকাল ৮টায় ভোট নেওয়া শুরু হয়েছে। বিরতিহীনভাবে ভোট চলবে বিকাল ৪টা পর্যন্ত। আজ দেশের ২৯৯টি সংসদীয় আসনে নির্বাচন হচ্ছে।
বিএনপিসহ সমমনা রাজনৈতিক দলগুলো নির্বাচনের বর্জনের পাশাপাশি ভোটের আগেরদিন থেকে টানা ৪৮ ঘণ্টার হরতাল পালন করছে। ভোটের দুই দিন আগে থেকেই বিভিন্ন যানবাহনের পাশাপাশি কয়েকটি ভোটকেন্দ্রে অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটেছে।
ভোটের আগের দিন শনিবার (৬ জানুয়ারি) সারা দিন দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে রিটার্নিং ও সহকারী রিটার্নিং অফিসারের কার্যালয় থেকে ব্যালট পেপার বাদে বাকি সব নির্বাচনি সামগ্রী বিতরণ করা হয়েছে। এসব সামগ্রী নিয়ে প্রিসাইডিং অফিসাররা নিজ নিজ ভোট কেন্দ্রে গিয়ে কেন্দ্র প্রস্তুত করেছেন। তারা রাতে ভোট কেন্দ্রেই অবস্থান করেন। ভোরে সেখান থেকে রিটার্নিং ও সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তার দফতরে গিয়ে ব্যালট পেপার সংগ্রহ করেছেন। এবারই প্রথম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ভোটের দিন সকাল বেলা ব্যালট পেপার সরবরাহ করা হলো। তবে দুর্গম দুই হাজার ৯৭১টি কেন্দ্রের ব্যালট পেপার শনিবারই বিতরণ করা হয়েছে।
গত ১৫ নভেম্বর দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী হাবিবুল আউয়াল। প্রার্থীরা ১৮ ডিসেম্বর থেকে ৫ জানুয়ারি সকাল পর্যন্ত প্রচারণা চালিয়েছেন।
ঢাকা-১
এবার নওগাঁ-২ আসনের এক স্বতন্ত্র প্রার্থীর মৃত্যু হওয়ায় বিধি অনুযায়ী আসনটির ভোট স্থগিত করেছে ইসি। ফলে আজ ভোট হচ্ছে ২৯৯টি আসনে। এসব আসনে এক হাজার ৯৭০ প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। ইসিতে নিবন্ধিত ৪৪টি রাজনৈতিক দলের মধ্যে এই নির্বাচনে ২৮টি রাজনৈতিক দলের হয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন এক হাজার ৫৩৪ প্রার্থী। আর স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে ভোটের মাঠে আছেন ৪৩৬ জন।
দেশের অন্যতম বড় রাজনৈতিক দল বিএনপিসহ ১৬টি নিবন্ধিত দল এ নির্বাচন বয়কট করে আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছে।
সর্বশেষ প্রকাশিত তালিকা অনুযায়ী, এবারের নির্বাচনে মোট ভোটার ১১ কোটি ৯৬ লাখ ৮৯ হাজার ২৮৯ জন। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার ছয় কোটি ৭৬ লাখ ৯ হাজার ৭৪১ এবং নারী ভোটার পাঁচ কোটি ৮৯ লাখ ১৮ হাজার ৬৯৯ জন। এ ছাড়া সারা দেশে এবার তৃতীয় লিঙ্গের ভোটার আছেন ৮৪৯ জন।
সারা দেশে সরকারি ও বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসহ অন্যান্য স্থাপনায় মোট ৪২ হাজার ২৪টি ভোটকেন্দ্র স্থাপন করা হয়েছে। এসব কেন্দ্রে ভোটকক্ষ দুই লাখ ৬১ হাজার ৯১২টি।
ভোটের নিরাপত্তা রক্ষায় মাঠ পর্যায়ে পুলিশ, র্যাব, আনসার-ভিডিপি, সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী, কোস্টগার্ডসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর প্রায় আট লাখ সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে। এছাড়া ভোট গ্রহণের কাজে আট লাখ কর্মকর্তা-কর্মচারী নিয়োজিত থাকবেন। এছাড়াও স্ট্যান্ডবাই থাকবেন এক লাখ কর্মকর্তা-কর্মচারী। তিন হাজার ম্যাজিস্ট্রেট ও বিচারক মাঠে থাকছেন। তারা যেকোনও অপরাধে তাৎক্ষণিক শাস্তি দিতে পারবেন।
এবার ভোটে রিটার্নিং অফিসার হিসেবে ৬৬ জন দায়িত্ব পালন করছেন। এর মধ্যে দুই জন বিভাগীয় কমিশনার এবং ৬৪ জন জেলা প্রশাসক।
এবার নির্বাচন দেখার জন্য ১২৬ জন বিদেশি পর্যবেক্ষক এবং বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমের ৭৬ জন সাংবাদিককে অনুমোদন দিয়েছে নির্বাচন কমিশন। ১২৬ বিদেশি পর্যবেক্ষকের মধ্যে ১২৬ জন এসেছেন স্ব-উদ্যোগে। আর নির্বাচন কমিশনের আমন্ত্রণে এসেছেন ৩২ জন। বিভিন্ন দেশের নির্বাচন কমিশনার ও তাদের প্রতিনিধি এসেছেন ১৮ জন।
নির্বাচনে দেশীয় পর্যবেক্ষক ২০ হাজার ৭৭৩ জন। এর মধ্যে কেন্দ্রীয়ভাবে ৪০টি পর্যবেক্ষক সংস্থার ৫১৭ জন এবং স্থানীয়ভাবে ৮৪টি পর্যবেক্ষণ সংস্থার ২০২৫৬ জন ভোট পর্যবেক্ষণ করবে।