কাজী মোশাররফ হোসেন, কাপ্তাই:- দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের বাকি আর মাত্র ২ দিন। আগামী ৭ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত হবে জাতীয় নির্বাচন। এবারের নির্বাচনে ৩০০ আসনের জন্য মোট ১ হাজার ৬৯৬ জন প্রার্থী রয়েছেন। এবার দেশে মোট ১১ কোটি ৯৬ লাখ ভোটার রয়েছেন।
ভোটাররা সবাই যাতে নির্বিঘ্নে পছন্দের প্রার্থীকে ভোট দিতে পারেন সে জন্য নির্বাচন কমিশন সব রকম প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে।
১১ কোটি ৯৬ লাখ ভোটারের সবাই ভোট কেন্দ্রে গিয়ে ভোট দেবেন এই চিন্তা মাথায় রেখেই নির্বাচন কমিশন প্রয়োজনীয় সংখ্যক ব্যালট পেপার ছাপিয়েছে বলে নির্বাচন কমিশন সূত্রে জানা গেছে।
ব্যালট পেপার ছাপানোর জন্য নির্বাচন কমিশন পূর্বেই কাপ্তাই উপজেলার চন্দ্রঘোনায় অবস্থিত কর্ণফুলী পেপার মিল থেকে ১৬শ মেট্টিক টন কাগজের চাহিদা দেয়। চাহিদা পাবার পর থেকেই নির্বাচন কমিশনকে কাগজ সরবরাহ করার জন্য কর্ণফুলী পেপার মিল কর্তৃপক্ষ কাগজ উৎপাদন শুরু করেন।
ইতোমধ্যে নির্বাচন কমিশনকে চাহিদানুযায়ী সব কাগজ কর্ণফুলী পেপার মিল থেকে সরবরাহ করা হয়েছে বলে নির্বাচন কমিশনের দায়িত্বশীল সূত্রে জানা গেছে।
নির্বাচন কমিশন সূত্র জানায়, ব্যালট পেপার ছাপানোর জন্য কর্ণফুলী পেপার মিলের কাগজকে তারা গুরুত্ব দিয়ে পছন্দ করেছেন। সে অনুযায়ী কেপিএমের কাছে কাগজের চাহিদা দেওয়া হয়। নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে নির্বাচন কমিশন কেপিএম থেকে কাগজ বুঝে নেয়।
এ ব্যাপারে কর্ণফুলী পেপার মিলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক একেএম আনিসুজ্জামান বৃহস্পতিবার বলেন, নির্বাচন কমিশন থেকে জাতীয় সংসদে ব্যালট পেপার ছাপানোর জন্য ১৬শ মেট্টিক টন কাগজের চাহিদা পাবার সাথে সাথে আমরা কাগজ উৎপাদনের কাজ শুরু করি।
সঠিক সময়ের মধ্যে যাতে সব কাগজ সরবরাহ করা যায় সে জন্য সকল বিভাগীয় প্রধান এবং সর্বস্তরের শ্রমিক কর্মচারী ও কর্মকর্তারা অক্লান্ত পরিশ্রম করেন। সম্মিলিত প্রচেষ্টার ফলে নির্দৃষ্ট সময়ের মধ্যে নির্বাচন কমিশনকে কাগজ প্রদান করা সম্ভব হয় বলেও তিনি জানান।
নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে কাগজ সরবরাহ করতে পেরে ব্যবস্থাপনা পরিচালক সন্তোষ প্রকাশ করেন। জাতীয় নির্বাচন ছাড়াও দেশের অন্যান্য নির্বাচনেও কেপিএম থেকে কাগজ সরবরাহ করা হয় বলেও তিনি জানান।
কেপিএমের প্রশাসন বিভাগীয় প্রধান আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ বলেন, কর্ণফুলী পেপার মিল ৭৫ বছরের পুরাতন কারখানা। পুরাতন কারখানায় বিভিন্ন সমস্যা বিরাজমান থাকে। তারপরও নির্বাচন কমিশন থেকে কাগজের অর্ডার পাবার পর থেকেই ব্যবস্থাপনা পরিচালকের নির্দেশে সবাই একযোগে কাজ করেন। বিশেষ করে কারখানার উৎপাদন বিভাগ এবং প্রকৌশল বিভাগের প্রচেষ্টা ছিল সার্বক্ষণিক। নির্বাচন কমিশনকে যথাযথ সময়ের মধ্যে কাগজ সরবরাহ করতে পেরে কর্ণফুলী পেপার মিলের শ্রমিক কর্মচারি এবং কর্মকর্তারা খুশি বলেও তিনি জানান।
কেপিএম সিবিএ সভাপতি আবদুল রাজ্জাক এবং সাধারণ সম্পাদক আনোয়ার হোসেন বাচ্চু বলেন, জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে কেপিএম ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেয়। আর তাই নির্বাচন কমিশন থেকে কাগজের অর্ডার পাবার পর থেকেই শ্রমিক কর্মচারী ও কর্মকর্তারা সম্মিলিতভাবে দিনরাত কাগজ উৎপাদন করেন।
তাঁরা বলেন, ৭৫ বছরের পুরাতন কারখানা কেপিএমে শ্রমিক কর্মচারী ও কর্মকর্তার স্বল্পতা রয়েছে। নানাবিধ সমস্যা বিরাজমান থাকা সত্বেও জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রায় ১২ কোটি ভোটার কেপিএম উৎপাদিত কাগজে তৈরি ব্যালট পেপারে ভোট দেবেন এটা ভেবেই আমরা আনন্দিত।
সেই আনন্দ বুকে নিয়ে ব্যবস্থাপনা পরিচালকের নির্দেশনায় সবাই কাজ করেন। তাঁরা বলেন, ১৯৭১ সালে মহান স্বাধীনতা যুদ্ধের পূর্বে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান যে ৬ দফা ঘোষণা করেছিলেন সেই ৬ দফার ১টিতে কেপিএমের নাম উল্লেখ ছিল। এখন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে কেপিএম উৎপাদিত কাগজে তৈরি ব্যালটে ভোটাররা ভোট দেবেন এটা ভেবেই আমরা খুশি। আজাদী