রাঙ্গামাটিতে এক স্কুল ছাত্রীকে ধর্ষণের ঘটনায় দুই নারী সংগঠনের নিন্দা ও প্রতিবাদ

রিপোর্টার
  • আপডেট সময় শনিবার, ৩০ ডিসেম্বর, ২০২৩
  • ২৬৭ দেখা হয়েছে

রাঙ্গামাটি:- রাঙ্গামাটির বালুখালী পাংখ্যায়া পাড়া এলাকায় নিজ জাতি ভাইয়ের কর্তৃক এক পাহাড়ি স্কুল ছাত্রী ধর্ষণের ঘটনায় নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে হিল উইমেন্স ফেডারেশন (এইচডব্লিউএফ) ও পার্বত্য চট্টগ্রাম নারী সংঘ রাঙ্গামাটি জেলা শাখা।

বৃহস্পতিবার (২৮ ডিসেম্বর ২০২৩) হিল উইমেন্স ফেডারেশনের রাঙ্গামাটি জেলা শাখার সভাপতি রিমি চাকমা ও পার্বত্য চট্টগ্রাম নারী সংঘ রাঙ্গামাটি জেলা শাখার সভাপতি রিনিসা চাকমা সংবাদ মাধ্যমে দেয়া এক যৌথ বিবৃতিতে ধর্ষক রাসেল চাকমা, রুবেল চাকমা, জিকো চাকমাসহ জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান।

নেত্রীদ্বয় ঘটনা বর্ণনা দিয়ে বলেন, আমরা বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে ভুক্তভোগী ছাত্রীর বাবার থানায় দায়ের করা মামলা এজাহার থেকে জানতে পারি গত ২৪ ডিসেম্বর দুপুরে জুরাছড়ির নিজ বাড়ি থেকে অপর এক বান্ধবী ও দুই ছেলেবন্ধুসহ চার জন বালুখালী বসন্ত পাংখোয়া পাড়ার খ্রীস্টান ধর্মালম্বনীদের বড়দিনের উৎসব দেখতে বের হয়। যাওয়ার পথে রাস্তায় অন্ধকার নেমে আসায় পার্শ্ববর্তী একটি পরিত্যক্ত জুমঘরে ভূক্তভোগী ছাত্রীসহ চার জন অবস্থান নেয়। রাত ১.৩০টায় বনযোগীছড়া ইউনিয়নের ৪নং ওয়ার্ডের হেডম্যান পড়ার অক্ষয় চাকমার ছেলে রাসেল চাকমা (৩২) ও একই ইউনিয়নের ৫নং ওয়ার্ডের দেবাছড়ি গ্রামের অরুণ চাকমার ছেলে রুবেল চাকমা (২৮) সহ অজ্ঞাত আরো দুইজন চার জনকে জুম ঘর থেকে বের হতে বলেন। যুবদের কথা মতে সকলে জুম ঘর থেকে বের হলে সেখান থেকে ভূক্তভোগী ছাত্রী ও তার বান্ধবীকে আলাদা করে নিয়ে তাদের সাথে থাকা ছেলে বন্ধুরা খারাপ কিছু করেছিল কিনা জিজ্ঞাসা করে। এরপর দুই বান্ধবীকে জঙ্গলের ভিতরে দুই দিকে নিয়ে যায় এবং রাসেল চাকমা ভূক্তভোগী ছাত্রীকে জোরপূর্বক ধর্ষণ করার পর ছেড়ে দিয়ে চলে যায়। পরে ভুক্তভোগী ছাত্রী তার বান্ধবী ও অপর দুই ছেলে বন্ধুকে বিষয়টি জানায় এবং পরের দিন সকালে জানাজানি হলে ঘটনায় জড়িতরা পালিয়ে আত্মগোপনে চলে যায়। তবে পরে স্থানীয় এলাকাবাসী রাসেল ও রুবেলকে আটক করেছে বলে জানা গেছে।

নেত্রীদ্বয় ক্ষোভ ও নিন্দা জানিয়ে আরো বলেন, বালুখালী পানখোয়া পাড়ায় নিজ জাতির ভাইদের কর্তৃক স্কুল ছাত্রীর ধর্ষণের শিকার ঘটনা খুবই ন্যাক্কারজনক ও নিন্দনীয়। পাহাড়ি সমাজের মধ্যেকার ইদানিং কয়েকটি জায়গায় তা ঘটছে, আগে পাহাড়ে এসব ঘটনা কল্পনা করাও যায় না। ধর্ষণ শব্দের সাথে পাহাড়ি পরিচিত ছিল না। রাসেল চাকমার মত দুষ্কৃতিকারীরা পাহাড়ি সমাজকে কলুষিত করছে।

নেত্রীদ্বয় সমাজের দায়িত্বশীল ব্যক্তিদের সমালোচনা করে বলেন, পাহাড়ি সমাজের মধ্যে দালাল-প্রতিক্রিয়াশীল দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। তারা নিজের স্বার্থের জন্য কিছু কিছু মানুষকে অর্থের প্রলোভন দেখিয়ে বিপথগামী করে তুলছে। ফলে ধীরে ধীরে পাহাড়িদের সুষ্ঠু-সুন্দর সমাজ ব্যবস্থা ভেঙ্গে পড়ছে এবং সমাজের চোর-ডাকাত, বদমাইশ এবং ধর্ষণের মত জঘণ্য কার্যক্রম সংঘটিত হচ্ছে। কাজেই এর দায় সমাজের নেতৃত্বদানকারী জনপ্রতিনিধি, হেডম্যান, কার্বারীরাও এড়াতে পারে না। পাঙখোয়া পাড়া ধর্ষণের ঘটনায় তারা এখনো কোন কার্যকর পদক্ষেপ নিয়েছে বলে শোনা যায়নি। সরকারের সুবিধাভোগী দালাল কারখানা জেলা পরিষদ, আঞ্চলিক পরিষদের পেছনে না দৌঁড়ে নিজ নিজ এলাকার সুষ্ঠু সমাজ বিনির্মাণের লক্ষ্যে যথাযথ ভূমিকা পালন করা প্রয়োজন এবং সমাজের ছাত্র-যুব-নারী সমাজকেও এই কাজে এগিয়ে আসতে হবে।

বিবৃতিতে নেত্রীদ্বয় আরো বলেন, ধর্ষক অপরাধীদের কোন জাতি বা সমাজ নেই। কাজেই অপরাধী যেই হোক শাস্তি তাকে পেতে হবে। আমরা বালুখালী পাংখোয়া পাড়ায় স্কুল ছাত্রীকে ধর্ষণকারী রাসেল চাকমা ও রুবেল চাকমাসহ অপর জড়িতদের গ্রেফতাপূর্বক দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি এবং সারাদেশে নারী ও শিশুদের নিরাপত্তা নিশ্চিত, নারীর উপর নিপীড়ন-নির্যাতন, ধর্ষণ-খুন-অপহরণের মত মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনা বন্ধের দাবি জানাচ্ছি। সংবাদ বিজ্ঞপ্তি।

পোস্টটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরো
© All rights reserved © 2023 Chtnews24.com
Website Design By Kidarkar It solutions