শিরোনাম
তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে সব নির্বাচন চান সম্পাদকরা রাজপথে পরিকল্পিত নৈরাজ্য,হাসিনার ষড়যন্ত্রে একের পর এক অস্থিরতার চেষ্টা প্রতিষ্ঠানের মালিকানা হারাচ্ছেন বড় গ্রুপের প্রভাবশালীরা স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে ঘুষের সিন্ডিকেট,বিভিন্ন ব্যক্তি ও সংস্থার সঙ্গে দেনদরবারেও জড়িত পার্বত্য চট্টগ্রাম আঞ্চলিক পরিষদ পুনর্গঠনের দাবিতে রাঙ্গামাটিতে বিক্ষোভ-সমাবেশ ডিসেম্বরে বাংলাদেশ-ভারত বৈঠকের প্রস্তুতি, হাসিনার প্রত্যর্পণ নিয়ে আলোচনার সম্ভাবনা বিচারের পর আ.লীগকে নির্বাচনে স্বাগত জানানো হবে-টাইম ম্যাগাজিনকে ড. ইউনূস আগামী নির্বাচন নিয়ে দিল্লি ভয়ংকর পরিকল্পনা করছে: জাগপা নেতা রহমত নতুন সিইসি নাসির উদ্দীনের নাম ছিল বিএনপির তালিকায় নাসির উদ্দীনকে সিইসি করে নির্বাচন কমিশন গঠন

পাল্টে যেতে পারে আন্দোলনের ধরন

রিপোর্টার
  • আপডেট সময় শনিবার, ২৫ নভেম্বর, ২০২৩
  • ২০২ দেখা হয়েছে

ডেস্ক রির্পোট:-রাজধানীর নয়াপল্টনে গত ২৮ অক্টোবরের মহাসমাবেশ পণ্ড হওয়া থেকে শুরু করে এ পর্যন্ত বিএনপির বিরুদ্ধে যারপরনাই দমন-পীড়ন চলছে বলে দলটির অভিযোগ। বিএনপির তথ্য বলছে, ২৮ অক্টোবর থেকে এ পর্যন্ত তাদের প্রায় ১৬ হাজার নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গত বৃহস্পতিবার পর্যন্ত ঢাকার আদালতেই ৫টি মামলায় ১৭৯ নেতাকর্মীর সাজা হয়েছে। দলটির অভিযোগ, এ পর্যন্ত ২৭টি মামলায় তাদের ৯ জনের মৃত্যুদণ্ড এবং ৪১৯ জনেরও বেশি নেতাকর্মীকে বিভিন্ন মেয়াদে সাজা দেওয়া হয়েছে। বিএনপি স্থায়ী কমিটির এক সদস্য এ প্রসঙ্গে বলেন, এটা শুধু বিএনপির জন্যই নয়, বাংলাদেশের ইতিহাসেই এক কঠিন পরিস্থিতি। এমন অবস্থায় কী করবে বিএনপি? এমন প্রশ্নে জানা গেছে, উদ্ভূত পরিস্থিতিতে পাল্টে যেতে পারে তাদের আন্দোলনের ধরন। তবে সেটি ‘নরম’ না ‘গরম’ হবে, সে বিষয়ে সিদ্ধান্ত হবে বৈঠকে। ইসি ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী ৩০ নভেম্বর মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার শেষ দিন। এর পরই আন্দোলনের সূচি ও ধরন নিয়ে বৈঠকে বসবে বিএনপি।

বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেন, ‘ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সরকারের বর্তমান দুঃশাসন কোনো কোনো ক্ষেত্রে একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধের সময়কার পাকিস্তানি হানাদারদের চেয়েও ভয়াবহ। দলের নেতাকর্মী ও সমর্থক সবাই এখন ঘরছাড়া। এ অবস্থায়ও তাদের বাড়ি-ঘরে হামলা হচ্ছে।’

দলটির নেতারা মনে করেন, সরকারের এই কঠোর অবস্থানের মাঝেও বিএনপির নেতাকর্মীরা এ পর্যন্ত কর্মসূচি চালিয়ে নিচ্ছেন। এ কর্মসূচি কতদূর চালিয়ে নেওয়া যাবে তা নিয়েও শঙ্কা রয়েছে। তাই ৩০ নভেম্বরের পর আন্দোলনের ধরন পাল্টাতে চায় বিএনপি। এর ধরন নরম না গরম হবে, দুটো দিক নিয়েই দলটিতে আলোচনা আছে বলে দলীয় সূত্রে জানা গেছে। জানতে চাইলে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান বলেন, আগামী সপ্তাহজুড়ে অবরোধ চলবে। এরপর জনগণের আকাক্সক্ষার সঙ্গে সঙ্গতি রেখে নতুন ধরনের কর্মসূচির কথা ভাবা হচ্ছে। এ নিয়ে দলের নীতিনির্ধারকরা আলোচনা করছেন।

এদিকে সরকারের ‘চাপ ও লোভ’-এর কারণে দল বা জোটের সিদ্ধান্তের বাইরে গিয়ে বিএনপিসহ বিরোধী শিবির থেকে কোন নেতা ও দল নির্বাচনে অংশ নিচ্ছে তার ওপর নজর রাখছে বিএনপি।

অন্যদিকে ঘোষিত তফসিলে কিছুটা পরিবর্তন আনা হতে পারে- এমন খবরে বিএনপিসহ বিরোধী শিবিরে শুরুতে এক ধরনের বিভ্রান্তি তৈরি হয়েছিল। দলটির নীতিনির্ধারণী ফোরাম জাতীয় স্থায়ী কমিটির বৈঠকেও বিষয়টি তোলা হয়। সেখানে স্থায়ী কমিটির প্রত্যেক সদস্যই ক্ষমতাসীন সরকারের অধীনে নির্বাচনে অংশগ্রহণ না করার পক্ষে শক্ত অবস্থান পুনর্ব্যক্ত করেন।

দলের গুরুত্বপূর্ণ এক নেতা বলেন, চলমান রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার সময়সীমা পেরিয়ে যাওয়ার পর বিএনপির নীতিনির্ধারণী ফোরামের নেতারা বৈঠকে বসবেন। সেখানে চলমান পরিস্থিতি নিয়ে বিশ্লেষণ করা হবে। সমমনা রাজনৈতিক দলের নেতাদেরও মতামত নেওয়া হবে। তার আগ পর্যন্ত বিএনপি দেখতে চায় বিরোধী মতের কোন কোন নেতা বা দল আন্দোলন ছেড়ে নির্বাচনে অংশ নিচ্ছে।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আবদুল মঈন খান বলেন, আজকে বিএনপিকে খুশি করার জন্য নির্বাচনী শিডিউল দুই-পাঁচ দিন পিছিয়ে দেবে, আর বিএনপি তাদের উল্টো-পাল্টা কথায় লাফিয়ে নির্বাচনে যাবে- এটা মনে হয় জনগণের কাছে গ্রহণযোগ্য হবে না।

বিএনপির বিভিন্ন পর্যায়ের নেতারা বলেন, এরই মধ্যে সরকারের ‘চাপে ও লোভে’ পড়ে যুগপৎ আন্দোলনের সঙ্গে থাকা নিবন্ধিত দুটি রাজনৈতিক দল ১২ দলীয় জোট ছেড়ে নির্বাচনে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছে। আরও বেশ কিছু ছোট ছোট রাজনৈতিক দল নির্বাচনে অংশ নিতে পারে- এমন গুঞ্জনও রয়েছে। বিএনপিসহও অন্যান্য দলের কয়েকজন নেতা নতুন নিবন্ধিত দল ‘তৃণমূল বিএনপি’ ও ‘বিএনএম’-এ যোগ দিয়েছে। তারাও নির্বাচনে যাবে। আরও বেশ কিছু নেতাকে নিয়ে গুঞ্জনও রয়েছে। এ অবস্থায় মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার শেষ দিন পর্যন্ত পরিস্থিতির ওপর তারা নজর রাখবেন বলে জানান নেতারা।

দলীয় সূত্রে জানা গেছে, গত কয়েকটি স্থায়ী কমিটির ভার্চুয়াল বৈঠকে নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পূর্বাপর পরিস্থিতির মূল্যায়ন করেন নেতারা। তারা মনে করেন, হরতাল-অবরোধে জনগণের সমর্থন থাকলেও টানা কর্মসূচিতে সবার মধ্যে একগুঁয়েমি মনোভাব তৈরি হচ্ছে। নেতা-কর্মীদের মাঝেও শৈথিল্য এসে গেছে। তা ছাড়া হরতাল-অবরোধের মতো কর্মসূচি দীর্ঘদিন চালানো কঠিন। উপরন্তু আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অনুমতির বাইরে গিয়ে বিকল্প কর্মসূচি করার মতো পরিবেশ পরিস্থিতিও নেই। এ অবস্থায় অপেক্ষাকৃত নরম কর্মসূচি যেমন- বিক্ষোভ সমাবেশ, রাজধানীর বিভিন্ন পয়েন্টে জমায়েত কিংবা নির্বাচন কমিশনসহ গুরুত্বপূর্ণ ভবন ঘেরাও নিয়ে আলোচনা হচ্ছে। পরিস্থিতি বুঝে ফাঁকে ফাঁকে হরতালও দেওয়া হতে পারে। তবে কোনো কারণে পরিস্থিতি বিএনপির অনুকূলে এলে হরতাল-অবরোধের কর্মসূচিতেই থাকবে দলটি। মনোনয়নপত্র দাখিলের শেষ দিন হরতাল দেওয়ার বিষয়ে প্রাথমিক সিদ্ধান্ত আছে। এ ছাড়া ঢাকায় নির্বাচন কমিশন এবং জেলা পর্যায়ে রিটার্নিং অফিসারের কার্যালয় ঘেরাওয়ের প্রস্তাবও আছে।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির এক সদস্য আমাদের সময়কে জানান, তার ধারণা, মনোনয়নপত্র দাখিলের পর নির্বাচনের মাঠে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী এবং অন্যান্য দলকে ছেড়ে দেওয়া প্রার্থীদের সঙ্গে বিদ্রোহী প্রার্থীদের বড় ধরনের টানাপড়েন শুরু হবে; নিজেদের মধ্যে সংঘাতও হবে। এমন পরিস্থিতি কাজে লাগাতে চান তারা। এ অবস্থায় হরতাল-অবরোধের কর্মসূচির চেয়ে রাজনৈতিক মেরুকরণে পর্যবেক্ষণ রেখে পরবর্তী কৌশল ঠিক করাটাই যুক্তিযুক্ত হবে।

বিএনপির নীতিনির্ধাকরা মনে করছেন, দলের গুরুত্বপূর্ণ নেতাদের ভোটে অংশ নিতে নানা প্রলোভন দেখালেও সফল হয়নি সরকার। তাই বিএনপির সাবেক নেতাদের স্বতন্ত্র প্রার্থী করার চেষ্টা করছে। তবে এ পর্যন্ত উল্লেখযোগ্য কোনো নেতা নির্বাচনে যাওয়ার বিষয়ে আগ্রহ দেখাননি।

দলের একজন নেতা বলেন, এ অবস্থায় মনোনয়নপত্র দাখিলের সময় বাড়ানো হতে পারে, যাতে আরও কয়েকটি দলকে বিভিন্ন প্রক্রিয়ায় ভোটে যুক্ত করতে পারে। বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু মনে করেন, তফসিল ঘোষণা হলেও দেশে নির্বাচনের আমেজ নেই। এতে স্পষ্ট- এ নির্বাচন নিয়ে কারও আগ্রহ নেই।

এদিকে দলের সিদ্ধান্ত অমান্য করে যারা নির্বাচনে যাবে বা অন্য দলে যোগ দেবে তাদের বিরুদ্ধে বহিষ্কারের সাংগঠনিক সিদ্ধান্ত আগে থেকেই নিয়ে রেখেছে বিএনপি। এ সিদ্ধান্তের অংশ হিসেবে ‘বিএনএম’-এ যোগ দেওয়া বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য ও রাজশাহী জেলা বিএনপির সাবেক সদস্য সচিব মতিউর রহমান মন্টুকে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। একই কারণে ঢাকা জেলার ধামরাই পৌর বিএনপির সভাপতি দেওয়ান নাজিম উদ্দিন মঞ্জুকেও দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত ধামরাই পৌর বিএনপির সিনিয়র সহ-সভাপতি আতিকুর রহমান আতিককে ভারপ্রাপ্ত সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব প্রদান করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।

এদিকে গণঅধিকার পরিষদের রেজা কিবরিয়া অংশের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য, সাবেক সংসদ সদস্য সাফি মাহমুদ তৃণমূল থেকে নির্বাচনে যাচ্ছেন। গত বুধবার তিনি ব্রাহ্মণবাড়িয়া-১ (নাসিরনগর) আসনে তৃণমূল বিএনপির প্রার্থী হতে দলীয় মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করেছেন বলে জানা গেছে। নির্বাচনে অংশ নিতে তৃণমূল থেকে মনোনয়ন নেওয়ায় শফি মাহমুদকে দল থেকে বহিষ্কারের ঘোষণা দিয়েছেন রেজা কিবরিয়া। দলীয় সূত্র জানায়, রেজা কিবরিয়ার অংশের আরও কেউ কেউ নির্বাচনে যেতে পারেন। দলটির জ্যেষ্ঠ নেতাদের নির্বাচন প্রক্রিয়ায় যুক্ত করতে নানা মহল থেকে বিভিন্ন পর্যায়ে আলোচনা চলছে। আমাদের সময়

পোস্টটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরো
© All rights reserved © 2023 Chtnews24.com
Website Design By Kidarkar It solutions