ফলের স্বাদ ডিমের মতো,চাষে সফলতা দেখিয়েছেন পাহাড়ে কৃষি বাতিঘর হিসেবে পরিচিত রাইখালী পাহাড়ি কৃষি গবেষণার বিজ্ঞানীরা

রিপোর্টার
  • আপডেট সময় সোমবার, ২০ নভেম্বর, ২০২৩
  • ১৮৩ দেখা হয়েছে

কাপ্তাই,রাঙ্গামাটি:- কাঁচা অবস্থায় সবুজ থাকলেও পাকলে ফলটির বাইরের আবরণ হয় হলুদাভ। আর ভেতরের অংশ দেখতে অনেকটা সেদ্ধ ডিমের কুসুমের মতো। স্বাদ ও ঘ্রাণ ডিমের কুসুমের। তাই এটি ‘এগ ফ্রুট’ বা ‘ডিম ফল’ বা ‘টিসা ফল’ নামে পরিচিত। এর উৎপত্তি মূলত দক্ষিণ মেক্সিকো, বেলিজ, গুয়েতেমালা ও এলসালভাদোর।

বিদেশি এ ফলটিই এখন শোভা পাচ্ছে রাঙ্গামাটির কাপ্তাই রাইখালী পাহাড়ি কৃষি গবেষণাকেন্দ্রের গাছে। ‘টিসা’ ফল চাষে সফলতা দেখিয়েছেন পাহাড়ে কৃষির বাতিঘর হিসেবে পরিচিত এ কেন্দ্রের বিজ্ঞানীরা।

গবেষণাকেন্দ্রটির কৃষিবিজ্ঞানীরা জানান, ভিটামিন, মিনারেল ও ঔষধি গুণসমৃদ্ধ এ ফলের জাত বাংলাদেশের জন্য একটি মাইনর ফ্রুট বা অপ্রচলিত জাত, যা তৈরি করছে বিপুল সম্ভাবনা। এ ফল চাষে বদলে যাবে পাহাড়ের অর্থনীতি।

রাইখালী পাহাড়ি কৃষি গবেষণাকেন্দ্রের প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা নিজাম উদ্দিন আহমেদ জানান, চার-পাঁচ বছরের একটি গাছে গড়ে ৪৫০ থেকে ৫০০টি ফল ধরে, যার ওজন গড়ে ১৭০-১৯৫ গ্রাম পর্যন্ত হয়। প্রতি গাছে ফলন হয় ৬৫ থেকে ৭০ কেজি। এই ফলের খাওয়ার উপযোগী অংশ প্রায় ৮০ থেকে ৮২ শতাংশ। টিসা ফল থেকে বিভিন্ন ধরনের প্রক্রিয়াজাত খাবার; যেমন কেক, চকলেট, জুস ও আইসক্রিম তৈরি করা যায়।

নিজাম উদ্দিন আরও জানান, ২০১৫ সালে এই ফলের চাষ করার পর ২০২১ সালে প্রথম ফুল এবং ফল আসে গাছে। গবেষণাকেন্দ্রের ২০টি গাছের প্রতিটিতে এখন ফলন হয়েছে। উচ্চ পুষ্টিগুণসম্পন্ন এ ফলটির ভেতরের অংশ দেখতে অনেকটা সেদ্ধ ডিমের কুসুমের মতো।

এখানকার পাহাড়ি অঞ্চলের আবহাওয়া, মাটি ও তাপমাত্রা টিসা ফল উৎপাদনের জন্য উপযোগী জানিয়ে তিনি বলেন, পাহাড়ের কোনো রকম ক্ষতি না করে অব্যবহৃত জমিতে বাণিজ্যিকভাবে এ ফলের চাষ করে কৃষকেরা লাভবান হতে পারেন।

গবেষণাকেন্দ্রের বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা মাহমুদুল হাসান বলেন, ‘এই গবেষণাকেন্দ্রে টিসা ফলের ওপর গত বছর একটি পরীক্ষা করা হয়।পরীক্ষায় চারটি জার্মপ্লাজম অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছিল। এ চারটি জার্মপ্লাজম গবেষণাকেন্দ্রে রোপণ করা হয়। ফলটির স্বাদ এবং ঘ্রাণ ডিমের মতো, তাই এটিকে ডিম ফলও বলে। বংশবিস্তারের জন্য বীজ থেকে টিসা ফলের চারা উৎপাদনের পাশাপাশি গ্রাফটিং বা কলম পদ্ধতির মাধ্যমে চারা উৎপাদন করতে আমরা সফল হয়েছি। আশা করছি, পাহাড়ি কৃষকদের কাছে এ টিসা ফলের চাষ ছড়িয়ে দিতে পারব।’

গবেষণাকেন্দ্রের বৈজ্ঞানিক সহকারী মো. সামছুদ্দোহা বলেন, কমবেশি এ ফলটি সারা বছর ফলন দেয়। বর্ষা মৌসুমের আগে বা পরে গাছগুলোর গোড়ায় স্বাভাবিক সার দিলেই হয়। গাছে কোনো রোগ হয় না এবং সহজেই চাষ করা যায়।আজকের পত্রিকা

পোস্টটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরো
© All rights reserved © 2023 Chtnews24.com
Website Design By Kidarkar It solutions