বান্দরবান:- বান্দরবান জেলার অপহৃত ঘটনার ৫ দিন পরেও থানচি-লিক্রী সড়ক থেকে স্থানীয় বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠন কুকি-চীন ন্যাশনাল ফ্রন্ট(কেএনএফ) কর্তৃক অপহৃত ঠিকাদারসহ ৫ জনের এখনো কোন সন্ধ্যান পাওয়া যায়নি।
এ ঘটনায় অপহৃতদের পরিবারের মাঝে বেড়েছে আতঙ্ক ও উৎকন্ঠা। এছাড়াও সেনাবাহিনীর অভিযানের হাত থেকে বাঁচতে থানচি-লিক্রী সড়কে নতুন র্নিমিত একটি ব্রীজ ধ্বংস করে দিয়ে সড়ক যোগাযোগ বিছিন্ন করার চেষ্টা চালিয়েছে কেএনএফ সদস্যরা। এমন ভয়াবহ পরিস্থিতিতে নিরাপত্তার স্বার্থে থানচি-লিক্রী সীমান্ত সড়ক নির্মানের কাজ বন্ধ করে দিয়েছে সেনাবাহিনীর প্রকৌশল বিভাগ।
গত শনিবার (১১ মার্চ) বিকাল ৩ টার দিকে থানচি- লিক্রী সড়কে সীমান্ত সড়ক নির্মানের কাজ শেষে দুটি ট্রাক যোগে ঠিকাদার ও লেবার থানচি সদরে ফেরার পথে বিশ কিলোমিটার নামক স্থানে কেএনএফ সদস্যরা গাড়ি লক্ষ্য করে অর্তকিত গুলি ছুুড়ে। এ ঘটনায় গুলিবৃদ্ধ হয় দুই গাড়ির চালকসহ ৪ জন।
এ সময় কেএনএফ সদস্যরা ১৭ জনকে অস্ত্রের মুখে অপহরণ করে নিয়ে যায়। ঘটনার পরের দিন সকালে ১২ জনকে ছেড়ে দিলেও এখনো নিখোঁজ রয়েছে ঠিকাদার জিয়াউল হক জিয়া, নুরুল ইসলাম,পাথর ব্যবসায়ী কাজী নুরুল আনোয়ারসহ ৫ জন।
নিখোঁজ ঠিকাদার জিয়াউল হক জিয়া চট্টগ্রাম জেলার সাতকানিয়া উপজেলার বাজালিয়া এলাকার বাসিন্দা হারুন সওদাগরের ছেলে। পাথর ব্যবসায়ী কাজী নুরুল আনোয়ার বান্দরবানের লামা উপজেলার ফাসিয়াঁখালী এলাকার কাজী আব্দুল মোমিনের ছেলে। ইশতিয়াক আহমেদ জিগর। চট্টগ্রাম ইসলামিক ইউনিভার্সিটি থেকে কম্পিউটার সাইন্স নিয়ে ইঞ্জিনিয়ারিং পাস করছে। এখন মাস্টার্সের স্টুডেন্ট। লোহাগাড়া আমিরাবাদ দরবেশ শার্ট ইসমাইল সেক্রেটারির বাড়ি। প্রবাসী আব্দুল মাবুদের প্রথম ছেলে। ঠিকাদার জিয়াউদ্দিনের বন্ধু উনার সাথে বেড়াতে গেছে জানা যায়। অন্য ২ জনের ঠিকানা জানা যায়নি।
এদিকে স্থানীয়রা জানিয়েছে , কেএনএফ এর শতাধিক সশস্ত্র সদস্য থানচি-লিক্রী সড়কের বিভিন্ন জায়গায় অবস্থান নিয়ে সন্ত্রাসী তৎপরতা চালাচ্ছে।
সোমবার (১৩ মার্চ) বিকালে কেএনএফ সদস্যরা থানচি-লিক্রী সড়কের দশ কিলোমিটার নামক এলাকায় একটা ব্রীজের রেলিং ও পাটাতন ভেঙ্গে সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন করার চেষ্টা চালিয়েছে।
এ ব্যপারে থানচি উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান অংপ্রম্রো জানান, কেএনএফ সদস্যরা একটি ব্রীজে বিস্ফোরন ঘটিয়েছে মর্মে খবর পেয়েছি। তবে এতে তেমন কোন ক্ষয় ক্ষতি না হলেও ব্রীজের রেলিং ও পাটাতন কিছুটা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
এছাড়া থানচি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আবুল মনছুর ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, কেএনএফ সদস্যরা একটি ব্রিজের অবস্থান নিয়ে বিস্ফোরন ঘটায়। এতে ব্রীজের রেলিং ও পাটাতন কিছুটা ক্ষতিগ্রস্ত হয়। তবে থানচির সামগ্রীক ঘটনায় জনমনে কিছুটা আতঙ্ক কাজ করলেও পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে।
এ দিকে থানচির উদ্ধুদ্ধ ভয়াবহ পরিস্থিতিতে নিরাপত্তার স্বার্থে অর্নিষ্টকালের জন্য থানচি-লিক্রী সীমান্ত সড়ক নির্মানের কাজ বন্ধ করে দিয়েছে সেনাবাহিনীর প্রকৌশল বিভাগ।