ভূতত্ত্ববিদ সৈয়দ হুমায়ুন আখতার:- ২০০৩ সাল থেকে ভূমিকম্প নিয়ে কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে গবেষণা করে আসছি। ভূতাত্ত্বিক ও টেকটোনিক কাঠামো অনুযায়ী বাংলাদেশ তিনটি প্লেটের সংযোগস্থলে অবস্থিত। একটা হলো ইন্ডিয়া প্লেট। এর পূর্বে বার্মা প্লেট এবং উত্তরে এশিয়া প্লেট। ইন্ডিয়া ও বার্মা প্লেটের সংযোগস্থল বাংলাদেশের সুনামগঞ্জ, কিশোরগঞ্জ হাওর হয়ে মেঘনা দিয়ে বঙ্গোপসাগর হয়ে সুমাত্রা পর্যন্ত চলে গেছে। প্লেটের সংযোগস্থলে ৮০০ থেকে ১০০০ বছর আগে ভূমিকম্প হয়েছিল। ফলে এই অংশে যে পরিমাণ শক্তি জমা হয়ে আছে, সেটা যদি একসঙ্গে বের হয়, তাহলে ৮ দশমিক ২ স্কেলে ভূমিকম্প হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। এই শক্তি একদিন না একদিন বের হবে। এই শক্তি একবারে বের হতে পারে, আবার আংশিকও বের হতে পারে।
এই অঞ্চলে ভূমিকম্প হলে এটা হবে জীবনহানিকর। কারণ, ভূমিকম্পের উৎসস্থল হবে ঢাকার খুব কাছে। ঢাকার দালানকোঠা অধিকাংশ অপরিকল্পিতভাবে করা হয়েছে। অনিয়ন্ত্রিতভাবে বসতি গড়ে উঠেছে। ঢাকার নিচে ৫ মাত্রার ভূমিকম্প হলেও সেটার ক্ষয়ক্ষতি হবে সাংঘাতিক। ঢাকার কাছাকাছি ৮ স্কেলের ভূমিকম্প হলে ঢাকার অবস্থা কী হবে, তা কল্পনার বাইরে।
বড় ধরনের ভূমিকম্প হলে কোথায় কী পরিমাণ ক্ষতি হয়েছে, এটাই বোঝার উপায় থাকবে না। মোবাইল প্রযুক্তি ব্যবহার এবং প্রতিটি এলাকায় স্বেচ্ছাসেবকের মাধ্যমে দ্রুত ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা চিহ্নিত করতে হবে। তাদের তথ্যের আলোকে ম্যাপ তৈরি হবে। সে অনুযায়ী সরকার ব্যবস্থা নিতে পারবে।
সৈয়দ হুমায়ুন আখতার, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূতত্ত্ব বিভাগের অবসরপ্রাপ্ত অধ্যাপক এবং বর্তমানে বাংলাদেশ উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য।