শিরোনাম
পার্বত্য চট্টগ্রাম মহিলা সমিতি’র ১৩তম কেন্দ্রীয় সম্মেলন অনুষ্ঠিত: অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের আমলে প্রহসনমূলক বিচারে মাইকেল চাকমাকে দণ্ডাদেশ প্রদান নিষ্ঠুর পরিহাস, মেনে নেয়া যায় না : ইউপিডিএফ কঠিন চীবর দানোৎসবের মাধ্যমে সম্প্রীতির বন্ধন আরও সুদৃঢ় হবে: পার্বত্য উপদেষ্টা ২৫ বছরের দণ্ডে দণ্ডিত ইউপিডিএফ সশস্ত্র কমান্ডার মাইকেল চাকমা পার্বত্য চট্টগ্রামে উপজাতীয় শাসন বাতিল করে রাষ্ট্রীয় প্রশাসন বাস্তবায়নের দাবি সার্বভৌমত্ব সুরক্ষা পরিষদের খাগড়াছড়িতে বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের কঠিন চীবর দান উদযাপন রাঙ্গামাটির কাপ্তাই হ্রদে নৌকা ডুবি, সেনাবাহিনীর তৎপরতায় সকল যাত্রী নিরাপদে উদ্ধার সাত রুটে অস্ত্র ঢুকছে বিভিন্ন রোহিঙ্গা ক্যাম্প ও তিন পার্বত্য জেলার সন্ত্রাসীদের আস্তানায় রাঙ্গামাটির কাপ্তাই বজ্রপাতে জেলের মৃত্যু, আহত ৪ রাঙ্গামাটিতে কঠিন চীবর দান উপলক্ষে সর্বাত্মক নিরাপত্তা ব্যবস্থা

রাঙামাটিতে পাউবোর সাড়ে ১৩শ কোটি টাকার প্রকল্প

রিপোর্টার
  • আপডেট সময় বুধবার, ১ ফেব্রুয়ারী, ২০২৩
  • ৫১৫ দেখা হয়েছে

রাঙামাটি:- রাঙামাটি শহর হচ্ছে একটি দ্বীপের মতো। চারদিকে ছড়া, হ্রদ, নদ-নদী অক্টোপাসের মতো আগলে রেখেছে। পর্যটননগরী রাঙামাটিকে রাঙাতে মেগাপ্রকল্প নিচ্ছে পানি উন্নয়ন বোর্ড। ১৩৫৫ কোটি ৪০ লাখ টাকার প্রকল্পটি বাস্তবায়ন হলে পর্যটনশিল্পের বিকাশ, কৃষিজপণ্যের বাজারজাত সহজীকরণ, নৌ-যোগাযোগব্যবস্থার উন্নয়ন ও কাপ্তাই হ্রদের পানি ধারণক্ষমতা বৃদ্ধি পাবে। প্রকল্পের ৬০ শতাংশ ব্যয় হবে হ্রদ ও বিভিন্ন নদী খননে।

পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী (পওর রাঙামাটি বিভাগ) তয়ন কুমার ত্রিপুরা বলেন, ‘দীর্ঘদিন ধরে রাঙামাটিতে পানি উন্নয়ন বোর্ডের বড় প্রকল্প নেয়া হয়নি। প্রকল্পটির মাধ্যমে কাপ্তাই হ্রদে ওয়াকওয়ে, রিটেইনিং ওয়াল নির্মাণ করে পর্যটনবান্ধব করা হবে। হ্রদের সৌন্দর্যবর্ধনে লেকের উভয় তীরে প্রতিরক্ষা বাঁধ নির্মাণ করা হবে। এতে পর্যটন শিল্পের বিকাশ ও স্থায়ী অবকাঠামো নির্মাণের ফলে অবৈধ দখল রোধ করা যাবে।’ প্রকল্পের ডিপিপি প্রস্তুত প্রায় শেষ। আগামী সপ্তাহে প্রকল্পটি পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হবে বলে জানান তিনি। রাঙামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান অংসুই প্রু চৌধুরী পূর্বকোণকে বলেন, ‘১৯৫৬ সালে কাপ্তাই লেকে বাঁধ নির্মাণের পর থেকে আর খনন করা হয়নি। হ্রদটি দেশের সম্পদ। আমরা দীর্ঘদিন ধরে খননের দাবি করে আসছি। এখন হ্রদ খনন ও প্রতিরক্ষা বাঁধ নির্মাণ করা হলে নৌ-যোগাযোগব্যবস্থার উন্নয়ন, বিদ্যুৎ ও মৎস্য উৎপাদন বাড়বে।’ পানি উন্নয়ন বোর্ড জানায়, রাঙামাটি জেলার কর্ণফুলী নদী, সংযুক্ত নদী-খালের ভাঙনরোধে প্রতিরক্ষা বাঁধ এবং কাচালং ও রাইখিয়ং নদীর ড্রেজিং প্রকল্প গ্রহণের পরিকল্পনা নেয়া হয়েছে। আগামী সপ্তাহের মধ্যে প্রকল্পটি পানি উন্নয়ন বোর্ডে প্রেরণ করা হবে বলে জানান সংশ্লিষ্টরা। প্রকল্পটির প্রাক্কলিত ব্যয় ধরা হয়েছে ১৩৫৫ কোটি ৩৯ লাখ ৮৭ হাজার টাকা। জেলার নানিয়ার চর, বরকল, বাঘাইছড়ি, লংগদু, কাউখালী, কাপ্তাই, রাজস্থলী, রাঙামাটি সদর ও বিলাইছড়ি উপজেলার কয়েক লাখ মানুষ উপকৃত হবে। প্রকল্পটির মেয়াদ ধরা হয় ২০২৩ সালের ১ জুন। শেষ হবে ২০২৫ সালের ৩০ জুন।

প্রকল্পে যা থাকছে : প্রকল্পে কাপ্তাই লেকের এসপি বাংলো থেকে ডিসি বাংলো, ডিসি বাংলো থেকে পর্যটন ঝুলন্ত ব্রিজ পর্যন্ত লেকের উভয় তীরে প্রায় ১৩ কিলোমিটার প্রতিরক্ষা বাঁধ নির্মাণ করা হবে। কর্ণফুলী নদীর উভয় তীরে ৮ দশমিক ১৫৫ কিলোমিটার প্রতিরক্ষা বাঁধ নির্মাণ। বাঘাইছড়িতে কাচালং নদীর উভয় তীরে চার দশমিক ১০০ কিলোমিটার প্রতিরক্ষা বাঁধ, লংগদুতে মাইনী নদীর উভয় তীরে এক কিলোমিটার প্রতিরক্ষা, বিলাইছড়িতে রাইখ্যং নদীর উভয় তীরে এক কিলোমিটার প্রতিরক্ষা বাঁধ, কাউখালীতে ইছামতি নদীর উভয় তীরে শূন্য দশমিক ৩৩০ কিলোমিটার প্রতিরক্ষা বাঁধ নির্মাণ করা হবে। এছাড়াও রাজস্থলী, কাউখালী, কাপ্তাই, রাঙামাটি সদরের কাপ্তাই খাল, মনাই খাল, ইছামতি খাল, বগাছড়া খাল, ঘাগড়া খাল এবং বাঙালহালিয়া খালের উভয় তীরে তিন দশমিক ৫শ কিলোমিটার প্রতিরক্ষা বাঁধ নির্মাণ করা হবে।

ড্রেজিং : শুষ্ক মৌসুমে মাইনী, কাচালং, রাইখ্যং, ইছামতি, শলক নদীর বিভিন্ন অংশে শুকিয়ে যায়। নৌ-চলাচলে বিঘ্ন সৃষ্টি হয়। পানি প্রবাহ বাড়াতে কাচালং, রাইখিয়ং, শলক, কর্ণফুলী ও শাখা খাল খনন করা হবে। কাচালং নদীর বাঘাইছড়ি থেকে মাইনী মুখ পর্যন্ত ৪৬ দশমিক ৯০০ কিলোমিটার, রাইখিয়ং নদীর টেংরাছড়ি থেকে বিলাইছড়ি পর্যন্ত ১০ দশমিক ২৫০ কিলোমিটার, শলক নদীর বাঘাইছড়ি থেকে মাইনী মুখ পর্যন্ত ৭ দশমিক ২৫০ কিলোমিটার এবং কর্ণফুলী সংযুক্ত নদী-খাল, কাপ্তাই লেকের চর অপসারণে ১০ কিলোমিটার ড্রেজিং করা হবে।

রাঙামাটি জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও রাঙামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদের সদস্য মো. মুছা মাতবর পূর্বকোণকে বলেন, ‘বাঘাইছড়ি, বিলাইছড়ি, লংগদু, নানিয়ারচরসহ বিভিন্ন এলাকা শুষ্ক মৌসুমে নৌযান চলাচল অনেকটা বন্ধ হয়ে যায়। যোগাযোগব্যবস্থা ও কৃষিজপণ্য বাজারজাতকরণে বিঘ্ন সৃষ্টি হয়। প্রকল্পটি নেওয়া হলে হাজার হাজার মানুষের জীবন-জীবিকার বাঁক বদলে যাবে।’

তিনি আরও বলেন, ‘প্রকল্পটি সাড়ে ১৩শ কোটি টাকার হলেও তা বাস্তবায়ন হলে পাহাড়ি অঞ্চলের কয়েক শ কোটি টাকার উন্নয়নে ভূমিকা রাখবে। পাহাড়ি জনপদের আমূল পরিবর্তন এনে দেবে।’

সরেজমিন দেখা যায়, কাপ্তাই হ্রদ কুরে খাচ্ছে অবৈধ দখলদার। হ্রদের পাড় দখল করে গড়ে ওঠেছে শত শত বহুতল ভবন। দখল-দূষণে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে সৌন্দর্যের রাণী-অপার আধার এ হ্রদটি। ক্ষত-বিক্ষত রাঙামাটি শহরকে সুরক্ষা ও হ্রদকে ঘিরে পর্যটক-কৃষিবান্ধব প্রকল্প নিচ্ছে পানি উন্নয়ন বোর্ড। পানি উন্নয়ন বোর্ড ছাড়াও বিআইডব্লিইটিএ রাঙামাটি হ্রদ খননের পৃথক আট শ কোটি টাকার প্রকল্প নিতে যাচ্ছে বলে জানা গেছে।পূর্বকোণ

পোস্টটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরো
© All rights reserved © 2023 Chtnews24.com
Website Design By Kidarkar It solutions