ডেস্ক রির্পোট:- চট্টগ্রাম প্রিমিয়ার ডিভিশন ক্রিকেট লিগের এবারের আসরে শিরোপা প্রত্যাশী দলের অন্যতম পাইরেটস অব চিটাগাং। গত আসরের রানার্স আপরা সেভাবে দলও গড়েছিল। প্রথম ম্যাচে মোহামেডানকে হারিয়ে শুরুটাও ভালই করেছিল দলটি। কিন্তু দ্বিতীয় ম্যাচে এসে হোঁচট খেল। শুধু হোঁচট বললে ভুল হবে। শিরোপা প্রত্যাশিদের একেবারে লজ্জা উপহার দিল মুক্তিযোদ্ধা সংসদ ক্রীড়া চক্র। শক্তির বিচারে মুক্তিযোদ্ধা সংসদ পিছিয়ে থাকলেও মাঠের লড়াইয়ে তারা ছিল দুর্দান্ত। পাইরেটস অব চিটাগাংকে দাড়াতেই দেয়নি মুক্তিযোদ্ধা। গতকাল এম এ আজিজ স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত ম্যাচে পাইরেটস অব চিটাগাংকে ১৮৮ রানের বিশাল ব্যবধানে উড়িয়ে দিয়েছে মুক্তিযোদ্ধা সংসদ ক্রীড়া চক্র। শুধু তাই নয় মাত্র ৯৭ রানে অল আউট হয়ে গেছে শিরোপা প্রত্যাশি পাইরেটস। মুক্তিযোদ্ধার ব্যাটার এবং বোলার সবাই মিলে যেন দলকে টেনে নিয়ে গেছে। কারো একক কোন অবদান নেই এই জয়ে। সবার সম্মিলিত অবদানে টানা দ্বিতীয় জয় মুক্তিযোদ্ধার।
সকালে টসে হেরে ব্যাটিং এ নামে মুক্তিযোদ্ধা সংসদ ক্রীড়া চক্র। দুই ওপেনার আনিসুল ইসলাম এবং জসিম উদ্দিন মিলে ১১৫ রানের জুটি গড়ে। এদুজন দলকে দারুন ভিত্তির উপর দাঁড় করিয়ে দেন। দুজনই তুলে নেন হাফ সেঞ্চুরি। জসিমকে ফিরিয়ে এজুটি ভাঙ্গেন তাইবুর রহমান। ৮১ বলে ৪টি চার এবং ৩টি ছক্কার সাহায্যে ৫৮ রান করে ফিরেন জসিম। সঙ্গীকে হারিয়ে বেশিক্ষণ টিকতে পারেননি আনিসুল ইসলামও। ১৩৩ রানের মাথায় ফিরেন তিনি। তবে ফিরে আসার আগে ৮১ বলে করেন ৫১ রান। অধিনায়ক বাপ্পা এবং রয়েন মিলে যোগ করেন ৬০ রান। আর তাতেই মুক্তিযোদ্ধা যে বড় স্কোর গড়তে যাচ্ছে তা নিশ্চিত হয়ে যায়। যদিও ৪৭ রান করে ফিরেন বাপ্পা। তবে দলে বাকিদের দারুন পারফরম্যান্সে ২৮৫ রানের পাহাড়ে চড়ে মুক্তিযোদ্ধা সংসদ ক্রীড়া চক্র। যা এবারের লিগে এখনো পর্যন্ত সর্বোচ্চ দলীয় স্কোর। ২৪ বলে ৩০ রান করেন সালেহিন রিফাত। এছাড়া রয়েন ২৮ বলে ২৯, রাজিবুণ ৮ বলে ১৭, ফখরুদ্দিন ১৩ বলে ১৭ এবং জগলুল করেন ১১ বলে ১১ রান। পাইরেটসের পক্ষে ৭২ রানে ৩টি উইকেট নিয়েছেন সুমন খান।
২৮৬ রানের বিশাল লক্ষ্য। আর সে লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে পাইরেটসের উদ্বোধনী ব্যাটার সৌরভ প্রথম ওভারেই সাইফুল ইসলামের উপর দিয়ে ঝড় বইয়ে দেন। প্রথম ওভারেই তিনটি চার এবং একটি ছক্কায় তুলে নেন ১৮ রান। তবে দ্বিতীয় ওভারের প্রথম বলে ফিরেন আরেক ওপেনার আরমান উল্লাহ। শুরুতেই ঝড় তোলা সৌরভ থামেন এক ওভার পর। রান আউটের শিকার হয়ে ফিরেন তিনি। প্রথম ওভারের ১৮ রানের সাথে আর কোন রান যোগ করতে পারেননি তিনি। এরপর দলের সেরা ব্যাটাররা কেবলই আসা যাওয়া করেছে। বিশেষ করে মুক্তিযোদ্ধার বোলারদের নিয়ন্ত্রিত বোলিং এর সামনে কোমার সোজা করে দাঁড়াতে পারেনি পাইরেটসের সেরা ব্যাটাররা। সাবেক জাতীয় দলের ক্রিকেটার রাকিবুল হাসান ফিরেছেন রাশেদুলের বলে বোল্ড হয়ে ৪ রান করে। এই রাশেদুল এরপর ফিরিয়েছেন তাইবুর রহমানকে।
আরেক সাবেক জাতীয় তারকা নাইম ইসলামকে ফিরিয়েছেন রাজিবুল। নিয়মিত বিরতিতে উইকেট হারাতে থাকা পাইরেটস অব চিটাগাং এক সময় অর্ধ শত রান করতে পারবে কিনা সে শংকা জেগে উঠেছিল। যদিও সে লজ্জা থেকে দলকে কিছুটা হলেও রক্ষা করেন আরেক সাবেক জাতীয় তারকা সোহরাওয়ার্দি শুভ। তিনি ২৬ রান করে অপরাজিত থাকেন। তিনিই দলের পক্ষে সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক। ১৫ রান আসে আলিফের ব্যাট থেকে। শেষ পর্যন্ত ২৬.৫ ওভারে ৯৭ রান করে অল আউট হয় পাইরেটস অব চিটাগাং। মুক্তিযোদ্ধা সংসদের পক্ষে ১৬ রানে ৩টি উইকেট নেন রাশেদুল বারি। ২টি করে উইকেট নিয়েছেন রয়েন এবং শুভ।