রাঙ্গামাটি:- পার্বত্য শহর রাঙ্গামাটির পর্যটন শিল্পে আমূল পরিবর্তন না হলেও বিগত এক দশকে গড়ে উঠেছে ছোট-বড় বাণিজ্যিক পার্ক ও বিনোদন কেন্দ্র। এসব বিনোদন কেন্দ্র ও পার্কে পর্যটকের পাশাপাশি স্থানীয়দেরও প্রবেশ করতে হয় প্রবেশমূল্য দিয়ে। বাণিজ্যিক আয়োজনের বাইরে একমাত্র উন্মুক্ত বিনোদন কেন্দ্র রয়েছে ডিসি বাংলো পার্ক। স্থানীয় বাসিন্দারা বলছেন, সম্প্রতি সেটিও বাণিজ্যিকভাবে চালুর দিকে হাঁটছে প্রশাসন। এতে উন্মুক্ত বিনোদনের স্থান আরো সংকুচিত হয়ে পড়ছে। যার নেতিবাচক প্রভাব পড়বে শিশু-কিশোরের ওপর।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, পর্যটন করপোরেশনের ঝুলন্ত সেতু পার্ক, পুলিশের পলওয়েল পার্ক, জেলা প্রশাসনের শিশুপার্ক, সেনাবাহিনীর আরণ্যক, ব্যক্তি উদ্যোগে প্রতিষ্ঠিত বার্গী লেকভ্যালি, বরগাঙ, রাঙাদ্বীপ এবং কাপ্তাই উপজেলায় অবস্থিত বিজিবির ওয়াগগাছড়া রিভারভিউ পার্ক, সেনাবাহিনীর লেকশোর, নৌবাহিনীর লেকভিউ পিকনিট স্পষ্ট, বন বিভাগের প্রশান্তি পার্কসহ একাধিক পার্ক ও বিনোদন কেন্দ্র রয়েছে। এসব বিনোদন কেন্দ্র ও পার্ক বাণিজ্যিকভাবে গড়ে ওঠায় পর্যটকের পাশাপাশি স্থানীয়দেরও প্রবেশ করতে হয় প্রবেশমূল্য দিয়ে। এর মধ্যে ঝুলন্ত সেতু পার্কে প্রবেশমূল্য ২০ টাকা, পলওয়েল পার্কে ৪০, শিশু পার্কে ২০, আরণ্যকে ৪০, বার্গী লেকভ্যালিতে ২০, বরগাঙে ২০, রাঙাদ্বীপে ৫০, কাপ্তাইয়ের ওয়াগগাছড়া রিভারভিউ পার্ক ২০, লেকভিউতে ২০ ও লেকশোর পিকনিকে ২০ এবং প্রশান্তি পার্কে ১০ টাকা। কেবল ডিসি বাংলো পার্কটিই আছে জনসাধারণের জন্য উন্মুক্ত। সম্প্রতি পার্কটির সংস্কার ও অবকাঠামোগত উন্নয়নকাজ করেছে পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ড।
বোর্ড সূত্র জানিয়েছে, প্রায় দেড় কোটি টাকা ব্যয়ে ডিসি বাংলো পার্কের প্রধান তোরণ নির্মাণ, পার্কের নিচের অংশে দেয়াল, বসার স্থান তৈরি, বিভিন্ন খেলনা ও ব্যাঙের ছাতাসহ অন্যান্য সৌন্দর্যবর্ধনের কাজ করেছে প্রতিষ্ঠানটি।
সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) রাঙ্গামাটি জেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক এম জিসান বখতেয়ার বলেন, ‘শিশু-কিশোর ও সাধারণ মানুষের চিত্তবিনোদনের জায়গাগুলো সংকুচিত হয়ে আসছে। যেভাবে বাণিজ্যিকভাবে সবকিছু গড়ে তোলা হচ্ছে, সেখানে জনসাধারণের জন্য উন্মুক্ত কিছু নেই একমাত্র ডিসি বাংলো পার্কটি ছাড়া। কিন্তু সেখানেও টিকিট ফি দিয়ে প্রবেশের যে আয়োজনের কথা আমরা শুনছি, সেটি অত্যন্ত দুঃখজনক। পার্ক সবার জন্য উন্মুক্ত রাখা প্রয়োজন, অন্যথায় এর নেতিবাচক প্রভাব পড়বে শিশু-কিশোরদের ওপর।’
নাম অপ্রকাশিত রাখার শর্তে জেলা প্রশাসনের কয়েকজন কর্মকর্তা জানান, ডিসি বাংলো পার্কের সৌন্দর্যবর্ধনের কাজ করা হচ্ছে। টিকিটের মাধ্যমে প্রবেশমূল্য দিয়ে দর্শনার্থী প্রবেশের বিষয়ে ভাবছে জেলা প্রশাসন। জেলা প্রশাসকের সিদ্ধান্তের ওপরই নির্ভর করছে উন্মুক্ত পার্কটিতে প্রবেশে টিকিট রাখার বিষয়টি।
এ বিষয়ে জানতে জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মোশারফ হোসেনের অফিশিয়াল মোবাইল নম্বরে কল দিলে রিসিভ করেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মো. সাইফুল ইসলাম। তিনি বলেন, ‘স্যার ডিসি (জেলা প্রশাসক) সম্মেলনের কারণে জেলার বাইরে অবস্থান করছেন। সপ্তাহখানেক পর তিনি রাঙ্গামাটিতে ফিরলে কথা বলতে পারেন।’বণিক বার্তা