শিরোনাম
৩ কোটির ক্যাশ চেক দিয়ে ডিসির পদায়নের বিষয়টি ভিত্তিহীন প্রধান উপদেষ্টার বাসভবনের সাম‌নে ৩৫ প্রত্যাশীদের অবস্থান, টিয়ারশেল নিক্ষেপ উন্নয়নের অংশীদার হলেও ১৫ বছরে শ্রমিকরা ন্যায্য পারিশ্রমিক পাননি— দেবপ্রিয় ৩ বছরে উচ্চ শিক্ষা সম্পন্ন করা প্রায় ১৯ লাখ শিক্ষার্থীর অধিকাংশই বেকার দুই সচিব ও ৬ অতিরিক্ত সচিবকে ওএসডি ২০ হাজারের বেশি বাংলাদেশির পাসপোর্ট ফেরত দিলো ভারত সচিবালয়ে হট্টগোল,শাস্তি পাচ্ছেন ১৭ উপসচিব সাভারে শ্রমিকদের সঙ্গে যৌথবাহিনীর সংঘর্ষ, গুলিবিদ্ধ একজনের মৃত্যু বাংলাদেশি নাগরিকদের ভিসা নিয়ে অবস্থান জানাল ভারত ‘পাহাড়ে শান্তি প্রতিষ্ঠায় সেনাবাহিনী সরকারকে সহযোগিতা করছে’

সুন্নাতে খতনার উপকারিতা ও বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা

রিপোর্টার
  • আপডেট সময় সোমবার, ২৬ ফেব্রুয়ারী, ২০২৪
  • ১৫১ দেখা হয়েছে

ডেস্ক রির্পোট:- ইসলাম ধর্মে পুরুষ মানুষের খতনা করা একটি গুরুত্বপূর্ণ সুন্নত। ইসলাম বর্তমানে বৃহত্তম একক ধর্মীয় গোষ্ঠী যেখানে এটি ব্যাপকভাবে প্রচলিত আছে। এটি ইসলামের মৌলিক নিদর্শনের অন্তর্ভুক্ত। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ফিতরাত (তথা নবীদের সুন্নত) পাঁচটি। তা হলো, খতনা করা, নাভীর নিচের পশম পরিষ্কার করা, বগলের উপড়ে ফেলা, নখ কাটা এবং গোঁফ খাটো করা। -(সহিহ বুখারি, হাদিস : ৫৮৮৯)

একজন ছেলেশিশু শারীরিকভাবে শক্ত-সামর্থ্যবান হওয়ার পরই সুবিধাজনক সময়ে তার খতনা করিয়ে দেওয়া অভিভাবকের নৈতিক দায়িত্ব। আর কোনো কারণে প্রাপ্তবয়স্ক হওয়ার আগে যদি খতনা না করা হয় অথবা বয়স্ক হওয়ার পর কেউ ইসলাম গ্রহণ করে তাহলে তারও খতনা করা জরুরি।

সর্বপ্রথম সুন্নাতে খতনা পালন করেছেন হজরত ইবরাহিম (আ.)। হজরত সাইদ ইবনে মুসাইয়াব (রহ.) থেকে বর্ণিত, হজরত ইবরাহিম (আ.) হলেন খতনার সুন্নত পালনকারী সর্বপ্রথম ব্যক্তি। (মুসান্নাফে ইবনে আবি শায়বা, হাদিস : ২৬৪৬৭)

পবিত্র কোরআনে আল্লাহ ইরশাদ করেছেন, ‘স্মরণ করো, যখন ইবরাহিম (আ.)-কে তার রব কয়েকটি বাণী দিয়ে পরীক্ষা করেন, অতঃপর তিনি তা পূর্ণ করেন। তিনি বলেন, আমি তোমাকে মানুষের জন্য নেতা বানাব। সে বলল, আমার বংশধরদের থেকেও? তিনি বলেন, জালিমরা আমার ওয়াদাপ্রাপ্ত হয় না।’ (সুরা বাকারা, আয়াত : ১২৪)

সুরা বাকারার এ আয়াতের ব্যাখ্যায় আল্লামা ইবনে কাসির (রহ.) ইমাম আবদুর রাজ্জাক (রহ.)-এর সূত্রে বর্ণনা করেন, ইবরাহিম (আ.)-এর পরীক্ষাগুলোর মধ্য থেকে একটি শারীরিক পরীক্ষা হলো খতনা করা। (তাফসিরে ইবনে কাসির : ১/৪০৬)

হজরত ইবরাহিম (আ.)-এর পর সব নবী-রাসুলই খতনা করিয়েছিলেন। অনেক হাদিসে এ সুন্নত পালনের প্রতি উৎসাহ প্রদান করা হয়েছে।

সুন্নাতে খতনার স্বাস্থ্যগত উপকারিতা

খতনা করার মাধ্যমে শরীর অধিক পাকপবিত্র ও পরিচ্ছন্ন থাকে। খতনা করালে শিশুদের মূত্রপথের সংক্রমণ প্রতিরোধ হয়। এর ফলে প্রস্রাবে জ্বালাপোড়া, জ্বর, খাবারে অনীহা এবং স্বাস্থ্য ভালো না হওয়া ইত্যাদি রোগ থেকে ঝুঁকিমুক্ত থাকে। প্রাপ্তবয়স্ক পুরুষের ক্ষেত্রে খতনা করালে লিঙ্গের ক্যান্সার প্রতিরোধ হয় ও যৌনবাহিত রোগের ঝুঁকি কমে।

পুরুষাঙ্গের মাথার বাড়তি চামড়ার নিচে এক ধরনের সাদা পদার্থ জমে এবং এটিই পুরুষাঙ্গের ক্যান্সারের জন্য দায়ী। লিঙ্গের মাথায় প্রদাহ, চুলকানি ও জ্বালাপোড়া করলেও খতনা করালে তা সেরে যায়। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে, পুরুষের খতনা এইচআইভি বা এইডস প্রতিরোধে একটি কার্যকর ভূমিকা রাখে, এটি আংশিক সুরক্ষা দেয়। আফ্রিকার যেসব দেশে খতনার হার বেশি, সেসব দেশে এইডসের হার তুলনামূলক কম।

সুন্নাতে খতনার প্রসঙ্গে বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা

পুরুষের খতনাকে আধুনিক স্বাস্থ্যবিজ্ঞানীরা অত্যন্ত স্বাস্থ্যসম্মত বলে মনে করেন। খতনার মাধ্যমে বিভিন্ন ধরনের ছত্রাকজাতীয় (ব্যাকটেরিয়া) রোগ থেকে রক্ষা পাওয়া যায়। খতনার প্রধান সুবিধা হলো, এর ফলে লিঙ্গের অগ্র ত্বকে যে তরল জমে নোংরা অবস্থার সৃষ্টি করে, তা থেকে রেহাই পেতে পারে। দেড় হাজার বছর আগে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম খতনার কথা বলেছেন, ব্যাপক গবেষণা শেষে আজকের আধুনিক বিজ্ঞান স্বীকার করেছে, খতনার ব্যাপক উপকারিতা আছে।

অস্ট্রেলিয়ার মেডিকেল সায়েন্সের অধ্যাপক ড. ব্রায়ান মরিস তার গবেষণায় উল্লেখ করেছেন, যেসব বালকের সারকামসিশন (খতনা) করা হয়নি, তাদের অপেক্ষাকৃত কিডনি, মূত্রথলি ও মূত্রনালির ইনফেকশন চার থেকে ১০ গুণ বেশি হয়। তিনি মনে করেন, সারকামসিশনের (খতনা) মাধ্যমে অন্তত এক-চতুর্থাংশ মূত্রনালির ইনফেকশন হ্রাস করা যায়।

ওয়াশিংটনের সৈনিক মেডিকেল কলেজের শিশুস্বাস্থ্য বিভাগের প্রধান প্রফেসর ডা. বিজবেল বলেন, ‘আমি প্রথমে খতনার বিরোধী ছিলাম, পরে দীর্ঘ গবেষণার ফলে প্রমাণিত হলো যে মূত্রথলি ও মূত্রনালিবিষয়ক অনেক জটিল রোগের সমাধান হলো খতনা। ’

এ ব্যাপারে ইউরোলজি জার্নালে প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মূত্রনালির প্রদাহ শিশুদের বেশি হয় এবং এতে কিডনির সমস্যা, জ্বর ও রক্তের ইনফেকশন পর্যন্ত হতে পারে। এমনকি খতনা মরণব্যাধি এইডস ও যৌনরোগ প্রতিরোধে সহায়ক। সাধারণ অর্থে লিঙ্গের ক্যানসার হলো অপরিচ্ছন্নতার ব্যাধি। পুরুষাঙ্গের শীর্ষে ঘা হয়ে ধীরে ধীরে বৃদ্ধি পেয়ে একসময় ক্যানসারে রূপ নেয়, এমন রোগীর ওপর গবেষণা করে দেখা গেছে, খতনা করানো পুরুষের চেয়ে খতনা না করানো পুরুষ এ ধরনের ক্যানসারে বেশি আক্রান্ত হয়ে থাকে।

যৌনবিজ্ঞানীরা বহুকাল আগে থেকেই বলে আসছেন যে পুরুষের খতনা করালে স্পর্শকাতরতা বেড়ে যায়। এতে যৌন মিলনে অধিক আনন্দ উপভোগ করে নারী-পুরুষ উভয়ই। বর্তমানে ইংল্যান্ড, আমেরিকাসহ ইউরোপেও প্রচুর পরিমাণে খতনা করানো হয়। সেখানে গুরুত্বের সঙ্গে এটা দেখা হয়।

পোস্টটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরো
© All rights reserved © 2023 Chtnews24.net
Website Design By Kidarkar It solutions