ডেস্ক রির্পোট:- সাবেক ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরীর সম্পদের সম্পর্কে যে প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে, সে সম্পর্কে যুক্তরাষ্ট্র অবগত রয়েছে বলে জানিয়েছেন দেশটির পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র ম্যাথিউ মিলার। ওয়াশিংটন ডিসির স্থানীয় সময় গত মঙ্গলবার সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে এ কথা জানান তিনি।
এ সময় এক সাংবাদিক সাবেক ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরীকে নিয়ে ব্লুমবার্গের প্রতিবেদন সম্পর্কে জানতে চেয়ে বলেন, ‘ব্লুমবার্গের বিশদ প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বাংলাদেশ সরকারের লোকেদের দুর্নীতিতে জড়িত থাকার বিষয়টি এখন ওপেন সিক্রেট। মন্ত্রিপরিষদের সাবেক একজন মন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরীর বিরুদ্ধে যুক্তরাজ্য ও যুক্তরাষ্ট্রে ২০০ মিলিয়ন পাউন্ডের এক সাম্রাজ্য গড়ে তোলার অভিযোগ রয়েছে, যা দেশের বৈদেশিক রিজার্ভের ১ শতাংশের সমতুল্য। এটি দুর্নীতির অসংখ্য ঘটনার মধ্যে কেবল একটি নমুনামাত্র। সরকারকে জবাবদিহি করতে এবং বিশ্বব্যাপী দুর্নীতির বিরুদ্ধে লড়াই করতে যুক্তরাষ্ট্র কী ধরনের পদক্ষেপ নেবে?
উত্তরে ম্যাথিউ মিলার বলেন, ‘আমরা এই প্রতিবেদনগুলো সম্পর্কে অবগত আছি। একই সঙ্গে নির্বাচিত সব কর্মকর্তা যেন দেশের আইন এবং অর্থনৈতিক বিধিবিধান মেনে চলেন, সে বিষয়টি নিশ্চিত করতে আমরা বাংলাদেশ সরকারকে উৎসাহিত করি।’
গত রবিবার মার্কিন সংবাদমাধ্যম ব্লুমবার্গের বিশেষ এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০১৬ সাল থেকে সাবেক ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরীর মালিকানাধীন কোম্পানিগুলো যুক্তরাজ্যে প্রায় ২০০ মিলিয়ন পাউন্ড মূল্যের ৩৫০টিরও বেশি সম্পত্তির রিয়েল এস্টেট সাম্রাজ্য গড়ে তুলেছে। এর পরই সৃষ্টি হয়েছে আলোড়ন।
যুক্তরাজ্যের রাজধানী লন্ডনের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের এক এলাকায় ২০২২ সালে ১ কোটি ১০ লাখ পাউন্ডে একটি প্রোপার্টি বিক্রি হয়। ব্রিটেনের বিখ্যাত রিজেন্টস পার্ক এবং লর্ডস ক্রিকেট স্টেডিয়াম থেকে ঢিল ছোড়া দূরত্বে অবস্থিত যুক্তরাজ্যের রাজধানীর সবচেয়ে দামি এলাকাগুলোর একটি ওই এলাকা।
সেখানে সারিবদ্ধভাবে দাঁড়িয়ে আছে কিছু সাদা রঙের বিলাসবহুল বাড়ি। এই এলাকার বাড়ির বিক্রির বিজ্ঞাপনে দেওয়া ছবিতে দেখা যায়, বাড়ির জানালা মেঝে থেকে ছাদ পর্যন্ত বিস্তৃত। সর্পিল আকৃতির সিঁড়ি বেয়ে ওঠা যায় কয়েক তলা পর্যন্ত। শুধু তা-ই নয়, সেই বাড়িতে আছে সিনেমা হল এবং জিমনেসিয়ামও।
বর্তমানে এই বাড়ির বাজারমূল্য ১ কোটি ৩০ লাখ পাউন্ডের বেশি। বাড়িটির মালিক বাংলাদেশের রাজনীতিবিদ ও সাবেক ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী। যুক্তরাজ্যে প্রায় ২০০ মিলিয়ন পাউন্ড মূল্যের ৩৫০টিরও বেশি সম্পত্তি নিয়ে তিনি গড়ে তুলেছেন রিয়েল এস্টেট সাম্রাজ্য। যুক্তরাজ্যে কোম্পানি হাউসের করপোরেট অ্যাকাউন্ট, বন্ধকি চার্জ এবং এইচএম ল্যান্ড রেজিস্ট্রি লেনদেনের ওপর ভিত্তি করে ব্লুমবার্গ সাইফুজ্জামান চৌধুরীর সম্পদের এই পরিসংখ্যান প্রকাশ করেছে।
গত ৭ জানুয়ারির দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে পাঁচ বছর ভূমিমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন সাইফুজ্জামান চৌধুরী। এবারের নির্বাচনে তিনি সংসদ সদস্য হিসেবে পুনর্নির্বাচিত হলেও মন্ত্রিসভায় জায়গা পাননি। তবে সংসদীয় জমিসংক্রান্ত কমিটির সভাপতির পদে আছেন তিনি।