ডেস্ক রির্পোট:- বাংলাদেশে করোনার নতুন উপধরন জেএন.১ শনাক্ত হয়েছে। গবেষণায় দেখা গেছে, দুই ডোজ টিকা নিলেও করোনার নতুন এই উপধরনে আক্রান্ত হচ্ছে মানুষ।
আজ মঙ্গলবার বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) উপাচার্য অধ্যাপক ডা. মো. শারফুদ্দিন আহমেদ এই তথ্য জানিয়েছেন।
গবেষকেরা জানান, করোনার জিনোম সিকোয়েন্সিং গবেষণার উদ্দেশ্য—সার্স কোভ-২ এর জিনোমের গঠন উন্মোচন ও পরিবর্তনের ধরন এবং বৈশ্বিক করোনা ভাইরাসের জিনোমের সঙ্গে এর আন্তঃসর্ম্পক বের করা। একই সঙ্গে ভাইরাসের বিবর্তণীয় সম্পর্ক, রোগের উপসর্গ, রোগের তীব্রতা, তুলনামূলক হাসপাতাল অবস্থানের মেয়াদকাল এবং বাংলাদেশি করোনা জিনোম ডেটাবেইস তৈরি করা।
গত ২০২১ সালের ২৯ জুন থেকে কোভিড-১৯ আক্রান্ত রোগীদের ওপর এই গবেষণা চলমান। গবেষণায় প্রায় এক হাজার ৫০০ কোভিড-১৯ পজিটিভ রোগীর ন্যাসোফ্যারিঞ্জিয়াল সোয়াব স্যাম্পল থেকে নেক্সট জেনারেশন সিকোয়েন্সিংয়ের মাধ্যমে করোনা ভাইরাসের জিনোম সিকোয়েন্সিং করে এই তথ্য পাওয়া গেছে।
গবেষকেরা বলেন, ‘কোভিড-১৯ সংক্রমণ হ্রাস হলেও বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকেরা গুরুত্বপূর্ণ বৈশ্বিক প্যান্ডেমিক হিসেবে সার্স কোভ-২ ভাইরাসের জিনোম সিকোয়েন্সিং প্রচেষ্টা অব্যাহত রেখেছিলেন। এই সময়ে আমরা করোনার ওমিক্রন ভ্যারিয়েন্টের বিভিন্ন উপধরন পেয়ে আসছি। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা এই বছরের শুরুতে নতুন উপধরন জেএন.১-এর কথা জানায়। এর পরিপ্রেক্ষিতে জানুয়ারির তৃতীয় সপ্তাহ থেকে ফেব্রুয়ারি মাসের প্রথম সপ্তাহ পর্যন্ত প্রাপ্ত কোভিড-১৯ পজিটিভ রোগীর স্যাম্পল নিয়ে জিনোম সিকোয়েন্সিং করা হয়। আমাদের গবেষণায়, মোট তিনজন রোগীর দেহে জেএন.১ শনাক্ত হয়।
গবেষকেরা বলেন, ‘জেএন.১ উপধরনের উপসর্গ অন্যান্য রূপগুলোর মতোই। যেমন—জ্বর-সর্দি, গলাব্যথা, মাথাব্যথা ও হালকা গ্রাস্ট্রেইনটেস্পাইনাল ইত্যাদি। নতুন জেএন.১ উপধরনে আক্রান্ত রোগের লক্ষণের তীব্রতা কম। সকল জেএন.১ উপধরনে আক্রান্ত রোগীর কমপক্ষে দুই ডোজ ভ্যাকসিন দেওয়া ছিল। তৃতীয়বারের মতো আক্রান্ত হয়েছে এ রকম রোগীরও উপধরন পাওয়া গেছে।’
‘মৃদু উপসর্গের কারণে জেএন.১ উপধরন রোগীদের থেকে দ্রুত সংক্রমণ সম্ভাবনা দেখা যাচ্ছে। জেএন.১ সাব-ভ্যারিয়েন্টে আক্রান্তদের তুলনামূলক কম উপসর্গ হয় এবং হাসপাতালে ভর্তির সম্ভাবনা কম। তবে করোনাভাইরাসের সবগুলো ধরন বা উপধরনই বিপজ্জনক এবং তা মারাত্মক অসুস্থতা এমনকি মৃত্যুর কারণও হতে পারে। পাশাপাশি ভাইরাসের নিয়মিত মিউটেশনের আমাদের প্রচলিত স্বাস্থ্য ব্যবস্থাকে ঝুঁকিপূর্ণ করতে পারে।’
এ সময় জিনোম সিকোয়েন্সিংয়ের প্রধান গবেষক জেনোটিক্স অ্যান্ড মলিকিউলার বায়োলজি ও অ্যানাটমি বিভাগের চেয়ারম্যান ডা. লায়লা আনজুমান বানু, করোনা জিনোম সিকোয়েন্সিংয়ের গবেষণা টিমের অন্যান্য সদস্য উপস্থিত ছিলেন।