আন্তর্জাতিক ডেস্ক:- রাখাইন রাজ্যে পরাজয়ের দ্বারপ্রান্তে পৌঁছে গেছে জান্তা বাহিনী। রবিবার রাতে দেওয়া এক বিবৃতিতে এমনটাই দাবি করেছে বিদ্রোহী গোষ্ঠীদের জোট থ্রি ব্রাদারহুড অ্যালায়েন্স।
সোমবার (১৯ ফেব্রুয়ারি) মায়ানমারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম নারিনজারাতে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে একথা বলা হয়েছে।
এদিকে মায়ানমারের উত্তরের রাজ্য কাচিনে জান্তা বাহিনীর বিমান হামলায় ৬ জন বেসামরিক ব্যক্তি নিহত হয়েছেন। তাদের মধ্যে দুই শিশুও রয়েছে। তাদের বয়স ২ ও ৬ বছর। এ ছাড়া আহত হয়েছেন আরও ১৩ জন। যাদের অধিকাংশই নারী। তাদেরকে স্থানীয় ভামো হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। গতকাল রেডিও ফ্রি এশিয়ার প্রতিবেদনে এ তথ্য দেওয়া হয়েছে।
থ্রি ব্রাদারহুড অ্যালায়েন্সের পক্ষ থেকে দেওয়া বিবৃতিতে বলা হয়েছে- রাখাইন অঞ্চলে একের পর এক ঘাঁটি হারাচ্ছে জান্তা সেনারা। জোটটি আরও দাবি করেছে, খুব শিগগি ছোট-বড় বেশ কয়েকটি ক্যাম্পের জান্তা সেনারা আত্মসমর্পণ করতে চলেছে। এর মধ্যে কৌশলগতভাবে গুরুত্বপূর্ণ ক্যাম্পও রয়েছে। এ ছাড়া যেসব ক্যাম্পের সেনারা এখনো আত্মসমর্পণে রাজি হননি- তাদের বিরুদ্ধে হামলা অব্যাহত রেখেছে আরাকান আর্মি।
তবে জান্তা বাহিনীও নিজেদের গুরুত্বপূর্ণ অবস্থানগুলো রক্ষায় প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা শক্তিশালী করার দিকে মনোনিবেশ করেছে বলে নারিনজারার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে। এমনটা করতে গিয়ে জান্তা সেনারা এমন সব পদক্ষেপ নিচ্ছে- এতেই যুদ্ধে তাদের মরিয়া ভাব স্পষ্ট হয়ে উঠছে।
আরাকান আর্মির অগ্রযাত্রা ঠেকাতে জান্তা বাহিনী গত ১২ ফেব্রুয়ারি ও ১৬ ফেব্রুয়ারি দুটি গুরুত্বপূর্ণ সেতু ধ্বংস করে দিয়েছে। রাখাইনের রাজধানী শহর সিতওয়ে ঢুকতে ওই সেতু দুটি ব্যবহার করা হয়। ধারণা করা হচ্ছে আরাকান আর্মির যোদ্ধারা যাতে রাজধানী শহরের দিকে অগ্রসর হতে না পারে সে লক্ষ্যে সেতু দুটি ধ্বংস করে জান্তা বাহিনী।
কাচিন রাজ্যে জান্তা বাহিনীর বিমান হামলা, নিহত ৬
এদিকে মায়ানমারের উত্তরের রাজ্য কাচিনে জান্তা বাহিনীর বিমান হামলায় ৬ জন বেসামরিক ব্যক্তি নিহত হয়েছেন। তাদের মধ্যে দুই শিশুও রয়েছে। তাদের বয়স ২ ও ৬ বছর।
এ ছাড়া আহত হয়েছেন আরও ১৩ জন। যাদের অধিকাংশই নারী। তাদেরকে স্থানীয় ভামো হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
রেডিও ফ্রি এশিয়াতে (আরএফএ) গতকাল প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, চীন সীমান্তের কাছে কাচিনের মানসি শহরতলির পাহাড়ে কৌশলগত একটি জান্তা ঘাঁটি লক্ষ্য করে শুক্রবার হামলা চালায় প্রতিরোধ যোদ্ধারা। এতে যুক্ত ছিল কাচিন ইন্ডিপেন্ডেন্স আর্মি ও আরাকান আর্মি।
তার জবাবেই শনি ও রবিবার জান্তা বাহিনী পালটা বিমান হামলা চালায়। আরএফএ জানিয়েছে, কেবল শনিবারই ৪টি গ্রামে ২০টি বোমা ফেলেছে বিমান বাহিনী। তবে হামলা শুরুর আগেই গ্রামগুলো থেকে প্রায় ১ হাজার পরিবার অন্যত্র সরে যাওয়ায় হতাহত কম হয়েছে। এরপরও সেখানকার উদ্ধারকর্মীরা জানিয়েছেন, বেশ কয়েকটি গ্রামে শতশত স্থানীয় বাসিন্দা আটকা পড়েছেন। তাদেরকে সরিয়ে নেওয়ার পরিকল্পনা চলছে। তবে যারা বিমান হামলায় নিহত হয়েছেন- তারা বোম্বশেল্টারে নিহত হওয়ায় তাদের মরদেহ বের করে আনা এখনো সম্ভব হয়নি।
কাচিন বিদ্রোহীদের দাবি, গত ২২ জানুয়ারি থেকে এখন পর্যন্ত ৩০ জন জান্তা সেনাকে আটক করেছে তারা। এ ছাড়া বিদ্রোহীদের থেকে বাঁচতে ৫৭ জন সেনা সীমান্ত অতিক্রম করে চীনে পালিয়ে গেছে। সূত্র: আরএফএ/নারিনজারা