ডেস্ক রির্পোট:- ফিলিস্তিনি শরণার্থীবিষয়ক জাতিসংঘের সংস্থা ইউএনআরডব্লিউএকে ধ্বংস করার লক্ষ্যে ইসরায়েল সমন্বিত প্রচারণা চালাচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে। গতকাল শনিবার সংস্থাটির প্রধান ফিলিপ লাজারিনি এ দাবি করেছেন। সুইস সংবাদপত্র গ্রুপ তামিডিয়াকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে লাজারিনি বলেছেন, সংস্থার প্রধান হিসেবে তাঁর পদত্যাগের আহ্বান ইসরায়েলি সরকারের চাপেরই অংশ।
ফিলিপ আরও বলেন, ‘এ মুহূর্তে আমরা ইউএনআরডব্লিউএ ধ্বংস করার লক্ষ্যে ইসরায়েলের সম্প্রসারিত ও সমন্বিত প্রচারণার সঙ্গে মোকাবিলা করছি। এটি একটি দীর্ঘমেয়াদি রাজনৈতিক লক্ষ্য। কারণ এটি বিশ্বাস করা হয়, যদি সাহায্য সংস্থাটি বিলুপ্ত করা হয়, তাহলে ফিলিস্তিনি শরণার্থীদের নিশ্চিহ্ন করা সহজ হবে। পেছনে এর চেয়েও বড় কোনো রাজনৈতিক উদ্দেশ্য রয়েছে। শুধু গাজা উপত্যকায় ইউএনআরডব্লিউএর বিরুদ্ধে ইসরায়েল কতগুলো পদক্ষেপ নিচ্ছে, তা-ই একবার দেখুন।’
গাজা উপত্যকায় সংস্থাটির ভ্যাট অব্যাহতি সুবিধা বাতিলের পদক্ষেপ নেয় ইসরায়েলের পার্লামেন্ট। পাশাপাশি ইসরায়েলের অ্যাশডোড বন্দরে সংস্থাটির খাদ্য সরবরাহ কার্যক্রম বন্ধ করার আদেশ দেওয়া হয়। এ পদক্ষেপগুলো ইসরায়েলের সরকারের তরফ থেকে এসেছে।
গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলি হামলা শুরুর পর ইউএনআরডব্লিউএর ১৫০টিরও বেশি স্থাপনা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। গাজা শহরের সংস্থাটির সদর দপ্তরের নিচে হামাসের একটি সুড়ঙ্গ আবিষ্কৃত হওয়ার পর লাজারিনিকে পদত্যাগের আহ্বান জানায় ইসরায়েল। তবে এর প্রতিক্রিয়ায় লাজারিনি বলেন, সুড়ঙ্গটি মাটির ২০ মিটার নিচে ছিল। একটি মানবিক সংস্থা হিসেবে ইউএনআরডব্লিউএর দপ্তরের ভূগর্ভে কী রয়েছে, তা পরীক্ষার ক্ষমতা নেই।
লাজারিনি আরও জানান, ইসরায়েল একাই তাঁর পদত্যাগের আহ্বান জানায়। তাঁর সরে যাওয়ার জন্য জাতিসংঘের একক কোনো সদস্যের দাবি মেনে চলার কোনো কারণ নেই। বিশেষ করে যেহেতু তাঁর পদত্যাগের ফলে সংস্থাটির বর্তমান পরিস্থিতির উন্নতি হবে না।
লাজারিনির মতে, ‘এসব সমালোচনা শুধু ব্যক্তিগতভাবে আমার সঙ্গে নয়, বরং সামগ্রিকভাবে সংস্থার সঙ্গে সম্পর্কিত। এ পদত্যাগের আহ্বান সংস্থাটিকে ধ্বংস করার প্রচারণারই অংশ।’
দক্ষিণ আফ্রিকার অনুরোধ নাকচ
রাফাহ শহরে ফিলিস্তিনিদের ওপর আক্রমণ বন্ধে ইসরায়েলের ওপর আরও আইনি চাপ দিতে দক্ষিণ আফ্রিকার অনুরোধটি প্রত্যাখ্যান করেছেন আন্তর্জাতিক বিচার আদালত (আইসিজে)।প্রিটোরিয়া ইতিমধ্যে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে আইসিজেতে অভিযোগ করেছে। অভিযোগে বলা হয়েছে, গাজায় এসব হামলার মাধ্যমে গণহত্যা কনভেনশনের লঙ্ঘন করেছে ইসরায়েল। এ ইস্যুতে এখনো রায় দেননি আইসিজে। তবে চলতি বছরের ২৬ জানুয়ারি ফিলিস্তিনি বেসামরিকদের রক্ষার্থে এবং তাঁদের জন্য মানবিক সাহায্যের অনুমতি দেওয়ার জন্য পদক্ষেপ নিশ্চিতে নির্দেশ দেওয়া হয় ইসরায়েলকে।
দক্ষিণ আফ্রিকার কর্মকর্তারা গত মঙ্গলবার আদালতে আরও একটি অনুরোধ দাখিল করেছেন। এতে রাফাহে ইসরায়েলের নতুন অভিযানের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য আইসিজেকে অনুরোধ করা হয়। এই অনুরোধ প্রত্যাখ্যান করা হলেও ২৬ জানুয়ারিতে আইসিজের গৃহীত সিদ্ধান্তগুলো অবিলম্বে কার্যকর ও বাস্তবায়নের আহ্বান জানিয়েছেন দক্ষিণ আফ্রিকার কর্মকর্তারা।