ডেস্ক রির্পোট:- করোনায় অর্থনীতির ক্ষতি পুষিয়ে উঠতে না উঠতেই নতুন ধাক্কা হিসেবে হাজির হয় ইউক্রেন-রাশিয়ার যুদ্ধ। যার প্রভাব পড়ে সারা বিশ্বে। বিশেষ করে পণ্যমূল্য ও পরিবহন ব্যয় বৃদ্ধি পাওয়ায় ডলারের সংকট দেখা দেয়। যার বিরূপ প্রভাবে বাংলাদেশের ডলারের বাজার অস্থির হয়ে ওঠে। আর ডলার সাশ্রয়ে সরকার গত এপ্রিলে আমদানিতে কড়াকড়ি শর্ত আরোপ করে। পাশাপাশি রেমিট্যান্স বাড়াতে জনসংখ্যা রপ্তানি বৃদ্ধির ওপর গুরুত্ব আরোপ করে। এ ছাড়া রেমিট্যান্স আসার পথ সহজ করে এবং রেমিট্যান্সে নগদ প্রণোদনা বাড়ায়। যার ফলে বিদায়ী জানুয়ারি মাসে রেমিট্যান্সের পালে ঊর্ধ্বমুখী হাওয়া লেগেছে। দেশের ডলার বাজার ও রিজার্ভের জন্য একে সুখবর বলছেন সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের হালনাগাদ প্রতিবেদন অনুযায়ী, চলতি বছরের প্রথম মাস তথা জানুয়ারিতে ১৯৫ কোটি ৮৮ লাখ ডলারের রেমিট্যান্স এসেছে, যা বাংলাদেশি মুদ্রায় (প্রতি ডলার ১০৭ টাকা হিসাবে) প্রায় ২০ হাজার ৯৫৯ কোটি টাকা। অর্থাৎ প্রতিদিন এসেছে ৬ কোটি ৩১ লাখ ডলারের বেশি। এর আগে ডিসেম্বর মাসে ১৬৯ কোটি ৯৭ লাখ ডলার রেমিট্যান্স পাঠিয়েছেন প্রবাসীরা। সেই হিসাবে গত ডিসেম্বরের তুলনায় জানুয়ারিতে ২৫ কোটি ৯১ লাখ ডলার বেশি রেমিট্যান্স এসেছে। ২০২২ সালের জানুয়ারি মাসে রেমিট্যান্স এসেছিল ১৭০ কোটি ৪৫ লাখ ডলার।
রেমিট্যান্সের ঊর্ধ্বগতির বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র ও নির্বাহী পরিচালক মো. মেজবাউল হক বলেন, ডলারের সংকট সামলাতে জনসংখ্যা রপ্তানি ও রেমিট্যান্সে নগদ প্রণোদনা বৃদ্ধিতে গুরুত্ব আরোপ করেছে সরকার। এ ছাড়া বৈধ পথে রেমিট্যান্স সংগ্রহ সহজ করা হয়েছে। এসব উদ্যোগের ফলে রেমিট্যান্স আসা বেড়েছে। সামনে দুটি ঈদ আছে। এ সময় প্রবাসীরা নিজ পরিবারের কেনাকাটায় সাধারণত বেশি অর্থ পাঠিয়ে থাকেন। সব মিলিয়ে রেমিট্যান্সের প্রবাহ আরও বাড়বে। এতে ডলারে ইতিবাচক প্রভাব পড়বে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য বলছে, জানুয়ারিতে সবচেয়ে বেশি রেমিট্যান্স এসেছে বেসরকারি ইসলামী ব্যাংকের মাধ্যমে। ব্যাংকটির মাধ্যমে ৩৫৪ দশমিক ৯৪ মিলিয়ন ডলার এসেছে। আর রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকের মধ্যে অগ্রণীর মাধ্যমে সবচেয়ে বেশি রেমিট্যান্স এসেছে। যার পরিমাণ ১০৪ দশমিক ২৪ মিলিয়ন ডলার।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রতিবেদনে দেখা গেছে, গত চার মাস রেমিট্যান্স আসা বেড়ে চলছে। গত বছরের অক্টোবরে রেমিট্যান্স এসেছিল ১৫২ কোটি ৫৫ লাখ ডলার। নভেম্বরে তা বৃদ্ধি পেয়ে হয় ১৫৯ কোটি ৪৭ লাখ ডলার। ডিসেম্বরে বেড়ে দাঁড়ায় ১৬৯ কোটি ৯৬ লাখ ডলার। আর সদ্য বিদায়ী জানুয়ারি মাসে এসেছে ১৯৫ কোটি ৮৮ লাখ ডলার। বিদায়ী ২০২১-২২ অর্থবছরে এসেছিল ২ হাজার ১০৩ কোটি ১৭ লাখ (২১ দশমিক ৩ বিলিয়ন) ডলার।