ডেস্ক রির্পোট:- পার্বত্য চট্টগ্রাম থেকে সমস্ত সেনাক্যাম্প প্রত্যাহার না করা পর্যন্ত জাতিসংঘের শান্তিরক্ষা মিশনে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর মোতায়েন স্থগিত রাখার উপর প্রস্তাব দাবি করলেন পাহাড়ের বিচ্ছিন্নতাবাদী সশস্ত্র সংগঠন পিসিজেএসএস নেতা সন্তু লারমার নাতনি কানাডিয়ান নাগরিক অগাস্টিনা চাকমা।
বাংলাদেশে ঘরোয়া পণ্য
১৪ জুলাই সোমবার সুইজারল্যান্ডের জেনেভায় জাতিসংঘের মানবাধিকার কার্যালয়ে এমরিপের ১৮তম অধিবেশনে অগাস্টিনা চাকমা তাঁর বক্তব্যে বলেন, ”আমি এক্সপার্ট মেকানিজম ও স্থায়ী ফোরামকে এই অবস্থান গ্রহণ করতে অনুরোধ জানাই: পার্বত্য চট্টগ্রামের সকল অস্থায়ী ক্যাম্প সরিয়ে না নেওয়া পর্যন্ত এবং অপারেশন উত্তোরণ প্রত্যাহার না করা পর্যন্ত জাতিসংঘের শান্তিরক্ষা কার্যক্রমে বাংলাদেশের সামরিক বাহিনীর অংশগ্রহণ স্থগিতকরণের সুপারিশ করা হোক।”
অগাস্টিনা আরো বলেন, ”বাংলাদেশের সেনাবাহিনীর সদস্যরা যখন বিদেশে জাতিসংঘের শান্তিরক্ষী হিসেবে মানবাধিকারের ব্যাজ পরিধান করেন, নিজের দেশে সেই সেনাবাহিনীই পাহাড়ি জনগোষ্ঠীর বিরুদ্ধে সেই একই অধিকারগুলো লংঘন করে। বিদেশে শান্তি রক্ষাকারীদের নিজের দেশেই প্রথম শান্তিরক্ষী হওয়া উচিত।”
এমন ভিত্তিহীন বক্তব্যের দ্বারা অগাস্টিনা পাহাড়ে শান্তি-শৃঙ্খলা রক্ষায় সেনাবাহিনীর অবদানকে খাটো করেছেন। তিনি পার্বত্য চট্টগ্রামে সেনাবাহিনীর অপারেশন উত্তোরণের মতো সন্ত্রাসবিরোধী সফল এবং জাতীয় গুরুত্বপূর্ণ অভিযানের বিপক্ষে কথা বলেছেন। অথচ পাহাড়ে যেসব বিচ্ছিন্নতাবাদী সশস্ত্র সন্ত্রাসী গোষ্ঠী চাঁদাবাজি, খুন, অপহরণ, মুক্তিপণের ভয়ঙ্কর খেলা খেলছে তাদের বিরুদ্ধে চুপ থেকেছেন।
জাতিসংঘের মতো একটি আন্তর্জাতিক ফোরামে অগাস্টিনার বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে এমন ভিত্তিহীন অপপ্রচার ও বিষোদগার পার্বত্যবাসীসহ সারাদেশের মানুষের মনে ক্ষোভের সৃষ্টি করেছে। এমন মিথ্যাচারের জন্য অগাস্টিনা চাকমা ও সন্তু লারমাকে বিচারের আওতায় আনার দাবি জানিয়েছেন পার্বত্যবাসী। তাদের আশঙ্কা, নানা-নাতনি ফের পার্বত্য চট্টগ্রামকে অশান্ত করার গোপন ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়েছেন।
প্রকাশিত তথ্যে জানা যায়, কয়েক দশক ধরেই জাতিসংঘের শান্তি রক্ষা অপারেশনে বাংলাদেশসহ বিশ্বের একাধিক দেশ শান্তিরক্ষী প্রেরণ করছে। এসব দেশের মধ্যে বাংলাদেশের শান্তিরক্ষীরা জাতি সংঘের শান্তিরক্ষা মিশনে অসামান্য কৃতিত্বের স্বাক্ষর রাখছেন। বাংলাদেশের একাধিক জ্যেষ্ঠ সামরিক কর্মকর্তাকে জাতিসংঘের শান্তিরক্ষা মিশনের কমান্ডার এবং সিনিয়র সামরিক লিয়াজোঁ অফিসার হিসাবে নিয়োগ দেয়া হচ্ছে।
বাংলাদেশে ঘরোয়া পণ্য
জাতিসংঘের শান্তিরক্ষা অপারেশনে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ক্রমবর্ধমান সফলতা বিনষ্ট করার ভয়ঙ্কর ষড়যন্ত্রে লেগেছে বিচ্ছিন্নতাবাদী কিছু গোষ্ঠী। তারা এজন্য প্রচুর অর্থ ব্যয়েরও পরিকল্পনা করছে। বিচ্ছিন্নতাবাদীরা বিভিন্ন দেশে তাদের পেইড-এজেন্ট নিয়োগ করে আন্তর্জাতিক বিভিন্ন ফোরামে জাতিসংঘে শান্তিরক্ষীদের বিরুদ্ধে অপপ্রচারের চেষ্টা চালাচ্ছে বলে সামরিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন।
বিশ্লেষকদের এমন ধারণার প্রমাণও ইতোমধ্যে প্রকাশ পেয়েছে। বাংলাদেশের পার্বত্য চট্টগ্রাম অঞ্চলের সশস্ত্র সন্ত্রাসী সংগঠন পিসিজেএসএস এর শীর্ষ নেতা সন্তু লারমার নাতনি কানাডিয়ান নাগরিক অগাস্টিনা বিচ্ছিন্নতাবাদীদের প্রকাশ্য পেইড-এজেন্টে হিসেবে আর্ভিভূত হয়েছেন। তিনি ইতোমধ্যে জাতিসংঘের এমরিপের এক অধিবেশনে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে বিষোদগার করেছে।
পাহাড়ি জনগোষ্ঠীর অর্থনৈতিক উন্নতি, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, নিরাপত্তা ও মানবাধিকার প্রতিষ্ঠায় নিরলস কাজ করা বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে বিষোদগার করায় কানাডিয়ান নাগরিক অগাস্টিনা চাকমার বিরুদ্ধে চাপা অসন্তোষ ও ক্ষোভ দেখা দিয়েছে পার্বত্যবাসীদের মাঝে। তারা বলছেন, পিজেএসএস নেতা সন্তু লারমা তার নাতনিকে ব্যবহার করে পাহাড়িদের জীবন অনিরাপদ করে তুলতে চাইছে। সন্তু লারমা শান্তিচুক্তিতে স্বাক্ষর করে বহু বছর ধরে রাষ্ট্রের বিশেষ সুবিধা গ্রহণ করে নিজেই পাহাড়ে সশস্ত্র সংঘাত জিইয়ে রেখেছেন। নাতনিকে দিয়ে জাতিসংঘসহ আন্তর্জাতিক বিভিন্ন মহলে বাংলাদেশ বিরোধী অপপ্রচার চালিয়ে বিচ্ছিন্নতাবাদী সন্ত্রাসীদের উসকে দিচ্ছেন। এজন্য সন্তু লারমার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করে শাস্তির আওতায় আনার দাবি জানিয়েছেন পার্বত্যবাসী।