ডেস্ক রির্পোট:- ফিলিস্তিনের গাজায় গতকাল শুক্রবার রাতভর একযোগে ট্যাংক ও বিমান থেকে ব্যাপক গোলাবর্ষণ করেছে ইসরায়েলি বাহিনী। এর ফলে এই উপত্যকায় ২০০ জনের মৃত্যু হয়েছে। এতে নিহতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২১ হাজার ৫০৭, যা গাজার মোট জনসংখ্যার ১ শতাংশ। বার্তা সংস্থা রয়টার্স এসব তথ্য জানিয়েছে।
গুলির শব্দ শুনে স্থানীয়দের কেউ কেউ আন্দাজ করছেন, উপত্যকার দক্ষিণাঞ্চলীয় শহর খান ইউনিসে ইসরায়েলি বাহিনীর সঙ্গে হামাস যোদ্ধাদের গোলাগুলি হয়েছে।
গত ২৪ ঘণ্টায় খান ইউনিস, উত্তরাঞ্চলীয় নুসেইরাত শরণার্থী শিবির এবং মধ্যাঞ্চলকে লক্ষ্য করে এই গোলাবর্ষণ করে ইসরায়েলি বাহিনী।
ইসরায়েলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী শুক্রবার সাংবাদিকদের বলেন, গাজায় ইসরায়েলি সেনারা হামাসের কমান্ড সেন্টার ও অস্ত্রাগারের কাছাকাছি পৌঁছেছে। সর্বশেষ সেখানকার একটি সুড়ঙ্গ নেটওয়ার্ক ধ্বংস করা হয়েছে বলে দাবি করেন তিনি। এর সঙ্গে গাজায় হামাসের শীর্ষ নেতা ইয়াহিয়া সিনওয়ারের বাসভবনের সংযোগ ছিল।
চলতি মাসের শুরুতেই খান ইউনিস দখল করেছিল ইসরায়েলি সেনারা। সেখান থেকেই সর্বশেষ অভিযানটি পরিচালনা করা হয়েছে।
গাজার স্বাস্থ্য বিভাগ বলছে, ইসরায়েলি বাহিনীর সর্বশেষ হামলায় ১৮৭ জন নিহত হয়েছে। তাঁদের মধ্যে এক সাংবাদিক আছেন। তিনি গাজাভিত্তিক চ্যানেল আল-কুদস টিভিতে কর্মরত ছিলেন। ওই সাংবাদিক ইসরায়েলি বাহিনীর অভিযান শুরুর পর আশ্রয় নিয়েছিলেন নুসেইরাত শরণার্থী শিবিরে। শুক্রবারের হামলায় সপরিবারে নিহত হয়েছেন ওই সাংবাদিক।
৭ অক্টোবর ইসরায়েলের উত্তরাঞ্চলীয় ইরেজ সীমান্তে হামাস যোদ্ধারা অতর্কিত হামলা চালানোর পর ওই দিন থেকেই গাজায় অভিযান শুরু করে ইসরায়েলি বিমান বাহিনী। ২৮ অক্টোবর থেকে অভিযানে যোগ দেয় স্থলবাহিনীও।
ইসরায়েলি বাহিনীর টানা দেড় মাসের অভিযানে কার্যত ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে গাজা উপত্যকা, নিহত হয়েছে ২১ হাজারেরও বেশি ফিলিস্তিনি। এই নিহতদের ৭০ শতাংশই নারী, শিশু, অপ্রাপ্তবয়স্ক কিশোর-কিশোরী এবং বয়স্ক লোকজন।
সেই সঙ্গে আহত হয়েছে আরও ৫৪ হাজার ৯৬৮ জন এবং এখনো নিখোঁজ রয়েছে ৭ হাজার জন। এ ছাড়া হাজার হাজার পরিবার বাড়িঘর ও সহায়-সম্বল হারিয়ে আশ্রয় নিয়েছে বিভিন্ন স্কুল, সরকারি প্রতিষ্ঠান ও হাসপাতাল প্রাঙ্গণে।
অন্যদিকে হামাসের গত ৭ অক্টোবরের হামলায় নিহত হয়েছিল ১ হাজার ২০০ জন ইসরায়েলি ও অন্যান্য দেশের নাগরিক। পাশাপাশি ইসরায়েলের ভূখণ্ড থেকে ২৪২ জন ইসরায়েলি ও অন্যান্য দেশের নাগরিকদের সেদিন জিম্মি হিসেবে ধরে নিয়ে গিয়েছিল হামাস যোদ্ধারা, তাদের মধ্যে এখনো মুক্তির অপেক্ষায় রয়েছে শতাধিক জিম্মি।
ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু জানিয়েছেন, হামাসকে সম্পূর্ণ ধ্বংস করার আগ পর্যন্ত গাজায় ইসরায়েলি অভিযান চলবে। অন্যদিকে হামাসের হাইকমান্ড জানিয়েছে, তারা দীর্ঘমেয়াদি যুদ্ধের জন্য প্রস্তুত।