শিরোনাম
নেতানিয়াহুর বিরুদ্ধে আইসিসির গ্রেফতারি পরোয়ানা ৫ দেশে গমনেচ্ছু বাংলাদেশিদের জন্য সতর্কতা সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা নিয়ে ড. ইউনূসের বক্তব্যকে স্বাগত জানিয়েছে আরএসএফ ভিসা দেওয়া না দেওয়া ভারতের নিজস্ব ব্যাপার : উপদেষ্টা হাসান আরিফ ১৮ সদস্যের কেন্দ্রীয় কমিটি গঠন করল বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে সব নির্বাচন চান সম্পাদকরা রাজপথে পরিকল্পিত নৈরাজ্য,হাসিনার ষড়যন্ত্রে একের পর এক অস্থিরতার চেষ্টা প্রতিষ্ঠানের মালিকানা হারাচ্ছেন বড় গ্রুপের প্রভাবশালীরা স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে ঘুষের সিন্ডিকেট,বিভিন্ন ব্যক্তি ও সংস্থার সঙ্গে দেনদরবারেও জড়িত পার্বত্য চট্টগ্রাম আঞ্চলিক পরিষদ পুনর্গঠনের দাবিতে রাঙ্গামাটিতে বিক্ষোভ-সমাবেশ

প্রতিষ্ঠানের মালিকানা হারাচ্ছেন বড় গ্রুপের প্রভাবশালীরা

রিপোর্টার
  • আপডেট সময় শুক্রবার, ২২ নভেম্বর, ২০২৪
  • ১৬ দেখা হয়েছে

ডেস্ক রির্পোট:- অর্থপাচারের সুনির্দিষ্ট প্রমাণ থাকায় প্রভাবশালী ব্যবসায়ীরা তাদের প্রতিষ্ঠানের মালিকানা হারাচ্ছেন। তাদের প্রতিষ্ঠানগুলো বন্ধ করা হবে না। বরং সব শেয়ার বিক্রি করে ব্যাংকের অর্থ সমন্বয় করা হবে। নতুন মালিকানায় আসবে ওইসব প্রতিষ্ঠান। ইতোমধ্যে এর কার্যক্রম শুরু করেছে সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলো। যেসব দেশে অর্থ পাচার করা হয়েছে তা ফেরত আনার জন্য উচ্চ আদালত থেকে অনুমোদন নেয়া হয়েছে। সাবেক ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান জাভেদের দেশ- বিদেশে থাকা সম্পদ জব্দ করার ইতোমধ্যে নির্দেশ দেয়া হয়েছে। চূড়ান্ত প্রতিবেদন তৈরি করা হয়েছে সাইফুল আলম মাসুদ ওরফে এস আলমের সম্পদ জব্দের বিষয়ে। আর বেক্সিমকো গ্রুপেরও প্রতিবেদন তৈরির কাজ চূড়ান্ত পর্যায়ে রয়েছে। এভাবে পর্যায়ক্রমে ২০টি বড় গ্রুপের মালিকানা পরিবর্তন করা হবে। বাংলাদেশ ব্যাংকের সংশ্লিষ্ট এক সূত্র এ তথ্য জানিয়েছে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে, আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর ব্যাংকিং খাতের লুটপাটের বড় বড় চিত্র বের হয়ে আসছে। যে ব্যাংকেই হাত দেয়া হচ্ছে, সেখানেই লুটেরাদের অপকর্মের চিত্র উদঘাটন হচ্ছে। দেশের ব্যাংকিং খাত থেকে সবচেয়ে বেশি অর্থ বের করে নিয়েছে ব্যাংকিং খাতের অভিশাপ এস আলম গ্রুপ। তারা দেশের ব্যাংকিং খাত থেকে হাজার হাজার কোটি টাকা বের করে নিয়েছে। রাষ্ট্রযন্ত্র ব্যবহার করে পতিত আওয়ামী লীগ সরকারের সময় বিশেষ করে ২০১৭ সালের পরে দেশের ইসলামী ধারার ব্যাংকগুলো দখলে নেয়। এরপর থেকেই ব্যাংকগুলো থেকে পানির মতো করে জনগণের আমানতের অর্থ বের করে পাচার করতে থাকে। বাংলাদেশ ব্যাংকের তদন্তে শুধু চারটি ব্যাংক থেকেই নিয়েছে দেড় লাখ কোটি টাকার ওপরে। তাদের হিসাব এখন চূড়ান্ত করা হয়নি। চূড়ান্ত হিসাবে কয়েক লাখ কোটি টাকা হবে বলে বাংলাদেশ ব্যাংক সূত্র জানিয়েছে। বেক্সিমকো গ্রুপ টাকা বের করে নিয়েছে প্রায় ৬৫ হাজার কোটি টাকা। নাসা গ্রুপ প্রায় ৪০ হাজার কোটি টাকা। তেমনিভাবে সামিট, বসুন্ধরাসহ বেশ কয়েকটি গ্রুপের ওপর বিশেষ তদারকি কাজ শুরু হয়েছে। সাবেক ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান জাভেদের যুক্তরাজ্য, যুক্তরাষ্ট্র, সিঙ্গাপুর, দুবাইসহ বিভিন্ন দেশে তিন শতাধিক বাড়ির সন্ধান মিলেছে। ২০টি বড় গ্রুপের ব্যাপারে বিশেষ অনুসন্ধানী কার্যক্রম শুরু হয়েছে। কারো কারো তদন্ত শেষ হয়ে এসেছে। চূড়ান্ত প্রতিবেদন তৈরির কাজ শুরু হয়েছে। ইতোমধ্যে বিভিন্ন দেশের গোয়েন্দা সংস্থাসহ একাধিক সংস্থা পাচারকৃত সম্পদ দেশে ফিরিয়ে আনার কাজ শুরু করেছে। চূড়ান্ত প্রতিবেদন পাওয়ার পরই আইনগত পদক্ষেপ নেয়া শুরু হবে বলে ওই সূত্র জানিয়েছে।

তবে, কোনো প্রতিষ্ঠান বন্ধ করা হবে না। শুধু মালিকানা পরিবর্তন করা হবে। প্রতিষ্ঠানগুলোর শেয়ার বিক্রি করে ব্যাংকের অর্থ পরিশোধ করা হবে। এ বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংক গভর্নর ইতোমধ্যে বলেছেন, এস আলম-বেক্সিমকোর প্রতিষ্ঠানগুলো জাতীয় সম্পদ। প্রকৃত মালিক থাকুক কিংবা না থাকুক প্রতিষ্ঠানগুলো চালানোর ব্যবস্থা করা হবে। কোনো অবস্থায়ই এগুলো বন্ধ হতে দেবো না।

এদিকে, পাচার হওয়া অর্থ উদ্ধারে দেশী বিদেশী সংস্থার তৎপরতা শুরু হয়েছে। বাংলাদেশের কিছু ব্যাংক থেকে জনগণের আমানতের অর্থ নজিরবিহীনভাবে সরিয়ে নিয়ে পাচার করার ঘটনা বিশ্বে বিরল। আর এসব ঘটনা সরেজমিন উদঘাটন করার অভিজ্ঞতা বিশ্বের অন্যান্য দেশে কাজে লাগাতে চাচ্ছে বিশ্বের অনেক সংস্থা। এ কারণেই বাংলাদেশ ব্যাংকে অনেক সংস্থা তথ্য উদঘাটন থেকে শুরু করে অর্থ উদ্ধারে কার্যক্রমে সম্পৃক্ত হতে তাদের প্রতিষ্ঠানগুলোর পরিচিতিপত্র সরবরাহ করছে। ইতোমধ্যে হাতে কলমে প্রশিক্ষণ দিতে যুক্তরাষ্ট্রের সিক্রেট সার্ভিসের প্রতিনিধিরা বাংলাদেশে এসেছিলেন। পাশাপাশি আন্তর্জাতিক দুর্নীতি দমন কমিশনের প্রতিনিধিরা গত সপ্তাহে বাংলাদেশে এসেছেন বলে সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে।

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে, সাবেক ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামানেরই যুক্তরাষ্ট্রে তিন শতাধিক বাড়ির সন্ধান পাওয়া গেছে। বিতর্কিত ব্যবসায়ী গ্রুপ এস আলম রাষ্ট্রযন্ত্র ব্যবহার করে দখলে নেয়া আটটি ব্যাংক থেকে প্রায় দুই লাখ কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। এর মধ্যে শুধু ইসলামী ব্যাংক থেকেই হাতিয়ে নিয়েছে এক লাখ কোটি টাকার উপরে। সম্প্রতি বাংলাদেশ ব্যাংক গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর জানিয়েছেন, সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সহযোগীরা দেশ থেকে ১৭ বিলিয়ন ডলার সরিয়েছে। এর মধ্যে এস আলম একাই সরিয়েছে ১০ বিলিয়ন ডলার। সামিট গ্রুপের বিরুদ্ধে কয়েকটি দেশে বিপুল অঙ্কের অর্থ পাচারের অভিযোগ উঠেছে। বিতর্কিত নাসা গ্রুপের যুক্তরাজ্যসহ বেশ কয়েকটি দেশে অর্থ পাচারের সুনির্দিষ্ট অভিযোগ রয়েছে। তেমনিভাবে বেক্সিমকো গ্রুপ, বসুন্ধরা গ্রুপ, ওরিযন গ্রুপের বিরুদ্ধেও অর্থ পাচারের সুনির্দিষ্ট অভিযোগ উঠেছে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে, অগ্রাধিকার ভিত্তিতে ২০টি বড় গ্রুপের অর্থপাচারের বিষয়ে তদন্তকার্যক্রম চালানো হচ্ছে। ইতোমধ্যে সাবেক ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামানের বিরুদ্ধে তদন্তকার্যক্রম শেষ হয়ে অর্থ উদ্ধারের প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। এস আলমের অর্থ পাচারের ঘটনা উদঘাটনের কাজ শেষ হয়েছে। এস আলমেরও দেশী বিদেশী সম্পদ জব্দের অনুমোদন পাওয়ার কাজ শুরু হয়েছে। পর্যায়ক্রমে বাকি ১৮টি প্রতিষ্ঠানের অর্থপাচারের তথ্য উদঘাটনের কাজ চলছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, বাংলাদেশ থেকে অর্থপাচারের ঘটনায় রীতিমতো হতবাক হচ্ছে বিদেশী সংস্থাগুলো। তারা বাংলাদেশের অর্থপাচারের ঘটনাগুলো উদঘাটনের কাজে সম্পৃক্ত হতে অনেকেই আগ্রহ দেখাচ্ছেন।

পোস্টটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরো
© All rights reserved © 2023 Chtnews24.com
Website Design By Kidarkar It solutions