ডেস্ক রির্পোট:- রাঙ্গামাটি সদরের যুবলীগ নেতা ঠিকাদার ইয়াসিন রুবেল। বসবাস করতেন তবলছড়ির মাস্টার কলোনীতে, ছিলেন বোট চালক। বর্তমানে বাস করছেন আলিশান বাড়িতে। বিগত সরকারের এমপি দীপংকর তালুকদারের ডান হাত ছিলেন এই ইয়াসিন রুবেল। এমপির কাছের হওয়ায় বেনামে কাজ বাগিয়ে নিতেন, লোপাট করতেন সরকারি অর্থ। এমনকি কাজ না করেও অর্থ আত্মসাতের সুনির্দিষ্ট তথ্য রয়েছে তার বিরুদ্ধে। গড়েছেন নামে বেনামে সম্পত্তি, ব্যাংক ব্যালেন্স, একাধিক বাড়ি ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান।
সরেজমিনে গিয়ে জানা যায়, রাঙ্গামাটি জেলার মাস্টার কলোনীর বাসিন্দা ইয়াসিন রুবেল। কয়েক বছর পূর্বেও ছিলেন রাঙ্গামাটির সাম্পান ঘাটের বোট চালক (মাঝি)। কিন্তু কয়েক বছরের মধ্যে রাতারাতি শূন্য থেকে কোটিপতি বনে গেছেন তিনি। তৈরি করেছেন কোটি টাকার সম্পত্তি, বাড়ি ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান। নামে বেনামে তৈরি করেছেন অসংখ্য সম্পত্তি। রাঙ্গামাটির বিভিন্ন ব্যাংকে রয়েছে একাধিক একাউন্ট। টেন্ডার বাণিজ্য, কাজ না করে সরকারি অর্থ আত্মসাত, নিয়োগ বাণিজ্য, ক্ষমতার অপব্যবহার করে সরকারি কাজে অনিয়মসহ নানাবিধ অভিযোগে অভিযুক্ত তিনি।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, রাঙ্গামাটির এমপি দীপংকর তালুকদার ক্ষমতায় থাকাকালীন সময়ে ব্যাপক অনিয়ম, দুর্নীতি ও অর্থ বাণিজ্য করেছেন ইয়াসিন রুবেল। জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল ও মৎস্য অফিস রাঙ্গামাটির কাজে করেছেন অনিয়ম। রাঙ্গামাটি জেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ও জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি অংসুইপ্রু, জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও জেলা পরিষদের সদস্য মুছা মাতব্বরের সহযোগী হিসেবে বাগিয়ে নিয়েছেন অসংখ্য টেন্ডার। নাম ভাঙিয়ে জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল, মৎস্য অফিসের সকল টেন্ডার বেনামে নিয়ে কাজ করতেন। এক কথায় তিনি হয়ে উঠেছিলেন স্ব-ঘোষিত সম্রাট। কেউ কিছু বললে দাপট দেখাতেন তৎকালীন এমপি দীপংকর তালুকদারের। শেখ হাসিনা সরকারের পদত্যাগের পরে কৌশলে বিএনপি নেতা আবু কালামের সাথে কাজ করে চলেছেন, যাতে কেউ কোন কথা বলতে না পারে।
এ বিষয়ে রাঙ্গামাটি জেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ও জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি অংসুইপ্রু, জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও জেলা পরিষদের সদস্য মুছা মাতব্বরের সাক্ষাৎকার নেওয়ার জন্য তাদের বাড়িতে গেলে তাদেরকে পাওয়া যায়নি। পরবর্তীতে তার +৮৮০১৮১৫৯৫৭৭৮৭ নম্বরের মুঠোফোনে মুছা মাতব্বরের কাছে ঘটনার বিষয়ে জানার জন্য একাধিকবার কল দিলেও তিনি রিসিভ করেননি।
তবে শূন্য থেকে কোটিপতি কিভাবে হলেন? এমন প্রশ্নের জবাবে ইয়াসিন রুবেল বলেন, রাঙ্গামাটি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের জমি অধিগ্রহণের সময় আমার পৈতৃক জমি সরকার সাড়ে ৩ কোটি টাকায় নিয়ে নেয়। সেই টাকায় আমি ব্যবসা করে আজকে সমাজে একটি অবস্থান তৈরি করেছি। এছাড়াও আমার বোট ব্যবসাও আছে। আমি অতীতে বোট ব্যবসা করতাম, এখনও করি।
ইয়াসিন রুবেলের সহযোগী বিএনপি নেতা আবু কালামের নিকট সত্যতা যাচাইয়ের জন্য জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেন, আমরা ব্যবসায়িক পার্টনার, সেই হিসেবে আমি তার কাজ দেখাশোনা করি। এ ছাড়া আমি আর কিছু বলতে পারবো না।
তবে প্রশ্ন উঠেছে, আদৌ কি ওই সাড়ে ৩ কোটি টাকা থেকে ব্যবসা করে আজকের এই অবস্থান তৈরি করেছেন ইয়াসিন রুবেল? নাকি স্থানীয়দের তথ্যমতে প্রাপ্ত তথ্যের সত্যতা রয়েছে। সরকারের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নিকট তার সম্পদের সঠিক রহস্য খুঁজে বের করার আহ্বান জানিয়েছেন সচেতন এলাকাবাসী।সুত্র ভোরের চেতনা