শিরোনাম
যখন তারা ডেকেছে গিয়েছি, এটা তো রুটি-রুজির জায়গা ৩ পার্বত্য জেলা পরিষদের প্রশাসনিক ক্ষমতায় মুখ্য নির্বাহী কর্মকর্তারা ক্ষমতার দাপটে শতকোটি টাকার মালিক হাজী মুছা মাতাব্বর ও তার অনুসারীরা,দেশ-বিদেশে গড়েছেন সম্পদের পাহাড় বিচারপতিদের অপসারণের ক্ষমতা ফিরলো সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিলের হাতে চীন-ভারত উত্তেজনা ও সম্ভাব্য যুদ্ধ এবং বাংলাদেশের অবস্থান: একটি ভূ-রাজনৈতিক পর্যালোচনা রাঙ্গামাটি,খাগড়াছড়ি,বান্দরবানসহ ১০ জেলায় ওলামা দলের কমিটি বিলুপ্ত চার হাজার কোটির প্রকল্পে বছরে গচ্চা ৫শ কোটি চলমান অস্থিরতায় পোশাকশিল্পের ক্ষতি ৪০ কোটি ডলার ১৫ চিনিকলে উৎপাদন হয় চাহিদার ১ শতাংশ, ঋণ ৯ হাজার কোটি! সাজেদার দুই পুত্রের সম্পদের পাহাড়

সংস্কার সংলাপে আ.লীগ ও শরিকদের নিষিদ্ধের দাবি

রিপোর্টার
  • আপডেট সময় রবিবার, ২০ অক্টোবর, ২০২৪
  • ১৭ দেখা হয়েছে

আ.লীগ ও শরিকদের নিষিদ্ধের বিষয়ে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত।
যারা গুলি করে মানুষ মেরেছে, তাদের আগে বিচার করতে হবে: অলি

ডেস্ক রির্পোট:-প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে সংলাপে গণফোরামের ইমেরিটাস সভাপতি ড. কামাল হোসেনের নেতৃত্বে দলটির প্রতিনিধিদল। গতকাল রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায়প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে সংলাপে গণফোরামের ইমেরিটাস সভাপতি ড. কামাল হোসেনের নেতৃত্বে দলটির প্রতিনিধিদল। গতকাল রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায়। ছবি: পিআইডি
অন্তর্বর্তী সরকারের সঙ্গে সংলাপে এবার ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ ও তাদের শরিকদের রাজনীতি নিষিদ্ধের দাবি তুলেছে কয়েকটি দল। এ বিষয়ে সরকারের দিক থেকে বলা হয়েছে, রাজনৈতিক ক্ষেত্রে তাদের অবস্থান তৈরিতে বাধা সৃষ্টি করা হবে। তবে নিষিদ্ধ করা হবে কি না সে বিষয়ে সরকার একতরফা সিদ্ধান্ত নেবে না। রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আরও আলোচনা-পর্যালোচনার ভিত্তিতে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।

অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসসহ অন্যদের সঙ্গে গতকাল শনিবার বিকেল থেকে সংলাপে অংশ নেন কয়েকটি রাজনৈতিক দল ও জোটের নেতারা। প্রধান উপদেষ্টার সরকারি বাসভবন যমুনায় বেলা আড়াইটা থেকে শুরু হয়ে এ সংলাপ চলে রাত ৮টা পর্যন্ত। পরে রাজধানীর হেয়ার রোডে ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে সংবাদ সম্মেলনে আলোচনার বিষয়বস্তু তুলে ধরা হয়। সংবাদ সম্মেলনে কথা বলেন প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মাহফুজ আলম, প্রেস সচিব শফিকুল আলম ও উপপ্রেস সচিব আবুল কালাম আজাদ মজুমদার।

লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টি (এলডিপি), গণফোরাম, ১২ দলীয় জোট, জাতীয়তাবাদী সমমনা জোট, জাতীয়তাবাদী গণতান্ত্রিক জোট (এনডিএম), লেবার পার্টি, গণতান্ত্রিক বাম ঐক্য, জাতীয় মুক্তি কাউন্সিল, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (আ-প্র) ও বাংলাদেশ জাতীয় পার্টি গতকালের সংলাপে অংশ নেয়।

নির্বাচন ও সংস্কারের বাইরে ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগের রাজনীতি ও অপরাধ এবং গণহত্যার বিচার নিয়ে সংলাপে দলগুলোর নেতারা কথা বলেছেন বলে জানান মাহফুজ আলম। তিনি বলেন, রাজনৈতিক দলগুলোর কাছ থেকে আওয়ামী লীগ ও তাদের শরিকদের নিষিদ্ধের দাবি এসেছে। তাদের রাজনীতি কীভাবে সীমাবদ্ধ করা যায়, তা নিয়ে আলোচনা এসেছে। গত তিনটি নির্বাচন যে হয়েছে তা অবৈধ, এ তিনটি নির্বাচন কীভাবে অবৈধ ঘোষণা করা যায়, তা নিয়ে অভিমত ব্যক্ত করেছেন সংলাপে অংশ নেওয়া নেতারা।

আওয়ামী লীগসহ ১৪ দলীয় জোটের বিষয়ে সরকারের অবস্থান স্পষ্ট জানিয়ে মাহফুজ আলম বলেন, তাদের রাজনৈতিক ক্ষেত্রে অবস্থান তৈরিতে বাধা সৃষ্টি করা হবে। সেটা কীভাবে বাস্তবায়িত হবে, তা দেখতে পাবেন। এটার আইনি ও প্রশাসনিক দিক আছে, তা অচিরেই দেখতে পাবেন। নির্বাচনী কার্যক্রম শুরু হলে বিষয়গুলো স্পষ্ট হবে।

সংলাপে ডাক পায়নি জাতীয় পার্টি। তাদের বিষয়টি পর্যালোচনা করা হচ্ছে জানিয়ে মাহফুজ আলম বলেন, ‘আমরা জাতীয় পার্টিকে আপাতত রাখছি না। তারা কিন্তু নীরব সমর্থন দিয়ে গেছে (আওয়ামী লীগ সরকারকে) এবং অবৈধ নির্বাচনগুলোতে অংশ নিয়েছে। তাদের বিষয়ে সরকার অবস্থান পর্যালোচনা করছে।’

নির্বাচন কমিশন গঠনের জন্য দ্রুত সার্চ কমিটি করা হবে বলে জানান প্রধান উপদেষ্টা বিশেষ সহকারী। বিদ্যমান আইনেই এ কমিটি করা হবে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘স্যার (প্রধান উপদেষ্টা) পরিষ্কার করে বলেছেন, নির্বাচন কমিশন গঠনের জন্য দ্রুত সার্চ কমিটি করা হবে। বিধি অনুযায়ী এতে ছয়জন সদস্য থাকার কথা। এ ছাড়া বিধিমালা অনুযায়ী যা যা করার দরকার, তা করা হবে। এটার ভিত্তিতে নির্বাচন কমিশন পুনর্গঠনের পরবর্তী কার্যক্রম হিসেবে কবে, কীভাবে নির্বাচন হবে, ভোটার তালিকা হালনাগাদসহ অন্যান্য যা প্রয়োজন, তা নিয়ে আলোচনা হবে। সমান্তরালে সংস্কার কমিশনগুলো কাজ করে যাবে।’

দ্রব্যমূল্য নিয়ে প্রধান উপদেষ্টা রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে কথা বলেছেন জানিয়ে মাহফুজ আলম বলেন, দ্রব্যমূল্য, আইনশৃঙ্খলা ও তৈরি পোশাকশিল্পের পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে আসছে। স্যার (প্রধান উপদেষ্টা) বলেছেন, দ্রব্যমূল্যের অগ্রগতি হচ্ছে, উপদেষ্টা পরিষদের বিভিন্ন ব্যক্তি কার্যকর ভূমিকা রাখছেন।

উপদেষ্টা পরিষদের কলেবর বৃদ্ধি ও বিতর্কিত উপদেষ্টাদের বাদ দেওয়ার দাবি জানিয়েছে একাধিক রাজনৈতিক দল, এ বিষয়ে সরকার কী ভাবছে—এমন প্রশ্নে উপপ্রেস সচিব আবুল কালাম আজাদ মজুমদার বলেন, কয়েকটি রাজনৈতিক দলের কাছ থেকে এ ধরনের প্রস্তাব এসেছে। প্রধান উপদেষ্টা রাজনৈতিক দলগুলোর পরামর্শ মনোযোগ দিয়ে শুনেছেন। তিনি এ বিষয়ে নির্দিষ্ট পদ্ধতি মেনে সবাইকে অবহিত করবেন।

কোন দল কী বলেছে
এর আগে প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে সংলাপ শেষে বেরিয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন বিভিন্ন দলের নেতারা। সংস্কার নিয়ে প্রধান উপদেষ্টাকে সুপারিশ করেছেন জানিয়ে এলডিপির সভাপতি কর্নেল (অব.) অলি আহমদ বীর বিক্রম বলেন, ‘শুধু সংস্কার কমিশন গঠন করলেই চলবে না, কমিশনকে কার্যকর দায়িত্ব দিতে হবে। কমিশনে কয়েকজন বিশেষজ্ঞ থাকবেন, যাঁরা প্রথমে একটি রূপরেখা তৈরি করবেন। এই রূপরেখার ভিত্তিতে একটি খসড়া তৈরি হবে। সেই খসড়া রাজনীতিবিদদের কাছে দেওয়া হবে এবং তাঁরা কোনো বিষয়ে একমত বা ভিন্নমত প্রকাশ করলে, তা লিখিত আকারে জমা দিতে হবে।

নির্বাচনের সময়সীমা নিয়ে কথা হয়েছে কি না জানতে চাইলে অলি আহমদ বলেন, ‘ঘরটা আগে বানাই, পরে চিন্তা করব, কোন রুমে থাকব। এখন মাত্র ইট ঢালাই শুরু হয়েছে। নির্বাচন করে লাভ কী? সব চোর দিয়া ভরা। যারা অন্যায় করেছে, গুলি করে মানুষ মেরেছে, তাদের আগে বিচার করতে হবে। তারপর নির্বাচন করতে হবে।’

দেশের ১৮ কোটি মানুষের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করায় আওয়ামী লীগের রাজনীতি নিষিদ্ধ করার দাবির কথা জানান অলি আহমদ। সংস্কার শেষে যৌক্তিক সময়ের মধ্যে নির্বাচন দেওয়ার কথা প্রধান উপদেষ্টাকে বলে এসেছে ১২ দলীয় জোট। প্রশাসনে থাকা বিগত সরকারের লোকদের অপসারণেরও দাবি জানিয়েছে জোটটি। ১২ দলীয় জোটের পক্ষ থেকে প্রধান উপদেষ্টাকে ১৪ দফা লিখিত প্রস্তাব দেওয়া হয়।

সংলাপ শেষে বেরিয়ে জোটের প্রধান ও জাতীয় পার্টির (কাজী জাফর) চেয়ারম্যান মোস্তফা জামাল হায়দার বলেন, ‘ফ্যাসিস্ট সরকারের যেসব প্রেতাত্মা এখনো প্রশাসনে ঘাপটি মেরে বসে আছে, তাদের আমরা অপসারণ করতে বলেছি। দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি নিয়ে আলোচনা হয়েছে। প্রধান উপদেষ্টা বলেছেন, দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণের জন্য যা করা প্রয়োজন, তিনি সে পদক্ষেপ নেবেন।’

৯০ দিনের মধ্যে সংস্কার কমিশনকে কাজ শেষ করার সুপারিশ করেছে জাতীয়তাবাদী সমমনা জোট। জোটের সমন্বয়ক ফরিদুজ্জামান ফরহাদ বলেন, ‘সংস্কারের মধ্যেই একটা নির্বাচনী রোডম্যাপ দিতে বলেছি সরকারকে। দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে আমরা প্রধান উপদেষ্টাকে বলেছি বাজার মনিটরিং করেন। এখানে সিন্ডিকেট আছে, তা ভাঙার চেষ্টা করেন। বৈঠকে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি আরও উন্নতি করার তাগিদ দেওয়া হয়েছে।

অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের উপযোগী কমিশন গঠনের জন্য প্রয়োজনীয় সংস্কার শেষ করে দ্রুত নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য অন্তর্বর্তী সরকারকে সুপারিশ করেছে গণফোরাম। প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠক শেষে এমনটিই জানিয়েছেন দলটির নেতারা। গণফোরামের ইমেরিটাস সভাপতি ড. কামাল হোসেনের নেতৃত্বে ১০ সদস্যের প্রতিনিধিদল প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে সংলাপ করে। সংবিধানসহ রাষ্ট্র সংস্কারে গঠিত কমিশনগুলোর বিষয়ে দলটি লিখিত প্রস্তাব দেবে।

সংলাপ শেষে গণফোরামের সমন্বয় কমিটির চেয়ারম্যান মোস্তফা মহসীন মন্টু বলেন, অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন কমিশন করতে হবে। এটার জন্য সার্চ কমিটি বা কিছু করার প্রয়োজন আছে, ভালো লোক নিয়োগ দেওয়ার দরকার আছে।

নির্বাচনের রোডম্যাপ নিয়ে আলোচনা হয়েছে কিনা জানতে চাইলে মোস্তফা মহসীন বলেন, ‘আমরা কোনো তারিখ উল্লেখ করিনি। বলেছি সংস্কার শেষ অতিদ্রুত নির্বাচন দেওয়ার জন্য।’

পোস্টটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরো
© All rights reserved © 2023 Chtnews24.net
Website Design By Kidarkar It solutions