শিরোনাম
পাহাড়ে কুড়িয়ে পাওয়া ডিম ফুটিয়ে গড়েছে বনমোরগের খামার বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন,প্রথম খসড়া তালিকায় নিহত ৮৫৮ জন, আহত সাড়ে ১১ হাজার আনুপাতিক হারে জাতীয় নির্বাচনের চিন্তা, বিএনপি কোন পথে সিভিল সার্ভিসে বিশৃঙ্খলার শঙ্কা, কলমবিরতি-মানববন্ধন-সমাবেশের ঘোষণা সংসদ নির্বাচন ইভিএমে হবে না, যন্ত্রগুলো কী করবে ইসি মঞ্চ প্রস্তুত আরেকটি এক-এগারোর? আসছে হাসিনা আমলের চেয়ে বড় বাজেট,আকার হতে পারে ৮ লাখ ৪৮ হাজার কোটি টাকা ফের আন্দোলনে নামছে বিএনপি,দ্রুত সুস্পষ্ট রোডম্যাপ দাবি, চলছে নির্বাচনি প্রস্তুতি প্রশাসনিক সংস্কারে ডিসিদের আপত্তি! বিশেষ সম্মাননা পাচ্ছেন বেবী নাজনীন, জয়া আহসান ও ফাহিম আহমেদ

৩০ বছর ধরে নির্বাচন নেই,পার্বত্য চট্টগ্রামের তিন জেলা পরিষদের

রিপোর্টার
  • আপডেট সময় বুধবার, ১ ফেব্রুয়ারী, ২০২৩
  • ৪০৯ দেখা হয়েছে

ডেস্ক রির্পোট:- ৩০ বছর ধরে নির্বাচন হচ্ছে না পার্বত্য চট্টগ্রামের তিন জেলা পরিষদের। প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে দলীয় নেতা-কর্মীদের নিয়োগ দিয়ে পরিষদগুলো পরিচালিত হচ্ছে, অথচ এ তিন জেলা ছাড়া বাকি ৬১ জেলায় জেলা পরিষদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করেছে সরকার। আগামী ১৭ অক্টোবর এ নির্বাচন হবে।

সর্বপ্রথম ১৯৮৯ সালের ২৫ জুন তিন বছরের জন্য খাগড়াছড়ি, রাঙ্গামাটি ও বান্দরবান জেলা পরিষদের প্রথম নির্বাচন হয়। তাঁদের মেয়াদ ছিল ১৯৯১ সাল পর্যন্ত। তবে আইন সংশোধন করে জেলা পরিষদের মেয়াদ ৫ বছর করা হলেও এসব জনপ্রতিনিধি ৯ বছর পর্যন্ত দায়িত্ব পালন করেন। ওই নির্বাচনই এখন পর্যন্ত প্রথম এবং শেষ নির্বাচন। পরে ২০১৫ সালে আইন সংশোধন করে সরকারমনোনীত চেয়ারম্যানসহ ১৫ সদস্য দিয়ে চলছে এসব পরিষদের কার্যক্রম।
ফলে নির্বাচন না হওয়ায় এসব প্রতিষ্ঠানের প্রতি মানুষের আস্থা কমে যাচ্ছে। অন্যদিকে পার্বত্য জেলা পরিষদগুলো ক্ষমতাশীল দলের (যখন যে সরকার ক্ষমতায় থাকে) রাজনৈতিক ‘পুনর্বাসন কেন্দ্রে’ পরিণত হওয়ায় অনিয়ম-দুর্নীতি বাড়ছে।

জানা গেছে, ১৯৮৯ সালে পার্বত্য চট্টগ্রামে তৎকালীন বিরাজমান পরিস্থিতি থেকে উত্তরণের লক্ষ্যে তিন জেলায় ‘স্থানীয় সরকার পরিষদ’ গঠন করা হয়। চেয়ারম্যান পদটি ক্ষুদ্র-নৃগোষ্ঠীর জন্য সংরক্ষিত রেখে ৩৩ সদস্যের পরিষদ নির্বাচনের বিধান রাখা হয়। ১৯৯৭ সালে পার্বত্য শান্তিচুক্তির মাধ্যমে স্থানীয় সরকার পরিষদের নাম পরিবর্তন করে ‘পার্বত্য জেলা পরিষদ’ নামকরণ করা হয়।

জেলা পরিষদ গঠনের পর সর্বপ্রথম ১৯৮৯ সালের ২৫ জুন তিন বছরের জন্য নির্বাচন হয়। পরে আইন সংশোধন করে ৫ বছরের মেয়াদ করা হয়; কিন্তু সে সময় আর কোনো নির্বাচন না হওয়ায় প্রথম নির্বাচিত প্রতিনিধিরাই ১৯৯৭ সাল পর্যন্ত ৯ বছর দায়িত্ব পালন করেন। এই আইনে ৫ বছর মেয়াদ শেষ হলেও নতুন পরিষদ প্রথম অধিবেশন না বসা পর্যন্ত পুরোনো পরিষদের কার্যক্রম চালিয়ে যাওয়ার বিধান রয়েছে।

জানা গেছে, অন্তর্বর্তীকালীন পরিষদের নামে ৩৩ জন সদস্যের স্থলে মাত্র চারজন করে সদস্য দিয়ে তিন পার্বত্য জেলা পরিষদ চলে ২০১৫ সাল পর্যন্ত। পরে আইন সংশোধন করে ২০১৫ সাল থেকে ৩৩ জন সদস্যের স্থলে সরকার মনোনীত একজন চেয়ারম্যান ও ১৪ জন সদস্য দিয়ে পরিষদের কার্যক্রম চালানোর বিধান রাখা হয়। এই আইনে কতদিনের জন্য অন্তর্বর্তীকালীন পরিষদের মেয়াদ শেষ হবে এবং কতদিনের মধ্যে নির্বাচন অনুষ্ঠান শেষ করতে হবে, এ বিষয়ে সুস্পষ্ট ব্যাখ্যা নেই।

জানা গেছে, ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসার পর আইন সংশোধন করে পার্বত্য জেলা পরিষদগুলোতে মনোনয়নের মাধ্যমে দলীয় লোক দিয়ে পরিষদ পরিচালনার প্রথা শুরু হয়।

সর্বশেষ ২০২০ সালের ১৪ ডিসেম্বর পার্বত্য চট্টগ্রামবিষয়ক মন্ত্রণালয় পরিষদ-১ শাখা থেকে জারি করা প্রজ্ঞাপনে আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের দিয়ে রাঙামাটি, খাগড়াছড়ি ও বান্দরবানের অন্তর্বর্তীকালীন পরিষদ পুনর্গঠন করা হয়।

অনুসন্ধানে দেখা যায়, রাঙামাটি জেলা পরিষদের বর্তমানে চেয়ারম্যান রয়েছেন অংসপ্রু চৌধুরী; যিনি কাউখালী উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি। এর আগেও দলীয় বিবেচনায় তিনি দুবার জেলা পরিষদের সদস্য ছিলেন।

পরিষদের ১৪ সদস্য হলেন রাঙামাটি জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হাজী মুছা মাতব্বর, বরকল উপজেলার সাধারণ সম্পাদক সুবির কুমার চাকমা, কাপ্তাইয়ের সভাপতি অংসুসাইন চৌধুরী, জুরাছড়ির সভাপতি প্রবর্তক চাকমা, নানিয়ারচরের সাধারণ সম্পাদক ইলিপন চাকমা, রাঙামাটি জেলা যুবলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বিপুল ত্রিপুরা, লংগদু মহিলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি আসমা বেগম, রাজস্থলী উপজেলা আওয়ামী লীগের সদস্য নিউচিং মারমা, বিলাইছড়ির সদস্য রেমালিয়ানা পাংখোয়া ও কাপ্তাইয়ের সহসভাপতি দীপ্তিময় তালুকদার। জেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি ঝর্না খীসা, লংগদু আওয়ামী লীগের সহসভাপতি আব্দুর রহিম, বাঘাইছড়ির সহসভাপতি প্রিয়নন্দ চাকমা এবং আওয়ামী লীগ সমর্থক অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক বাদল চন্দ্র দে।

একইভাবে খাগড়াছড়ি জেলা পরিষদও রাজনৈতিক বিবেচনায় চলছে। বর্তমান খাগড়াছড়ি জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মংসুইপ্রু চৌধুরী জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক। অন্য সদস্যরাও কেউ জেলা কিংবা উপজেলা আওয়ামী লীগ ও মহিলা লীগের সভাপতি, সহসভাপতি, সাধারণ সম্পাদকসহ অনেকে আছেন।

বান্দরবান জেলা পরিষদের একই অবস্থা। বর্তমান চেয়ারম্যান ক্যাশৈহ্লা জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি। তিনি এ পর্যন্ত চারবার জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান হিসেবে নিয়োগ পেয়েছেন।

সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) খাগড়াছড়ির সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট নাসির উদ্দিন বলেন, ‘যে উদ্দেশ্যে পার্বত্য চট্টগ্রামের জেলা পরিষদগুলো গঠন করা হয়েছে, তা চরমভাবে ব্যাহত হচ্ছে। নির্বাচন হলে পাহাড়ে সম্প্রীতি আরও সুদৃঢ় হতো, উন্নয়ন আরও দৃশ্যমান হতো।’

পার্বত্য চট্টগ্রামবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব মোসাম্মদ হামিদা বেগম আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘তিন পার্বত্য জেলা পরিষদের নির্বাচন অনুষ্ঠানের এখনো কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি।’আজকের পত্রিকা

পোস্টটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরো
© All rights reserved © 2023 Chtnews24.com
Website Design By Kidarkar It solutions