ডেস্ক রির্পোট:- যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের নির্বাচনী সমাবেশে শনিবার হামলার ঘটনা ঘটেছে। এতে কানে গুলিবিদ্ধ হয়েছেন সাবেক রিপাবলিকান প্রেসিডেন্ট। এতে অল্পের জন্য প্রাণে বেঁচে গেছেন তিনি।
নভেম্বরে যুক্তরাষ্ট্রে নির্বাচন। এ নির্বাচনে জো বাইডেনের সবচেয়ে বড় প্রতিদ্বন্দ্বী ডোনাল্ড ট্রাম্প। তার ওপর এই হামলা নির্বাচনী প্রচারণায় ব্যাপক প্রভাব ফেলতে পারে। এমনকি এই হামলা মার্কিন নির্বাচনী প্রচারণাকে দিতে পারে নতুন আকার।
ব্রিটিশ সংবাদ মাধ্যম বিবিসির নর্থ আমেরিকা এডিটর সারাহ স্মিথ বলছেন, নির্বাচনী প্রচারে হামলায় ট্রাম্পের আহত হওয়া যুক্তরাষ্ট্রের নির্বাচনে মোড় ঘুরতে পারে। কারণ, গুলির পর রক্তাক্ত অবস্থায় মুষ্টিবদ্ধ হাত ওপরে তুলে হার না মানার ইঙ্গিত দেন ট্রাম্প। এছাড়াও সিক্রেট সার্ভিসের এজেন্টদের মাধ্যমে মঞ্চ থেকে চলে যাওয়ার ছবি কেবল ইতিহাস তৈরিই নয়– এসব ছবি আগামী নভেম্বরের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের গতিপথও পরিবর্তন করতে পারে।
রাজনৈতিক সহিংসতার এই জঘন্য হামলাটি আগামী নির্বাচনের প্রচারণায় অনিবার্যভাবে প্রভাব ফেলবে বলে জানান সারাহ স্মিথ।
ট্রাম্পের ওপর হামলা এবং রক্তাক্ত হওয়ার এসব ছবি খুব দ্রুতই সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করা হয়। এমনকি সাবেক এই মার্কিন প্রেসিডেন্টের ছেলে এরিক ট্রাম্পও এসব ছবি পোস্ট করেছেন। সেখানে ক্যাপশনে তিনি লিখেছেন, ‘আমেরিকার এই ধরনের যোদ্ধাই প্রয়োজন।’
হামলার পরপরই প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন টিভিতে হাজির হন। এরপর তিনি বলেন, আমেরিকায় এই ধরনের রাজনৈতিক সহিংসতার কোনো স্থান নেই। পরে তিনি রিপাবলিকান প্রতিদ্বন্দ্বীর সঙ্গে ফোনে কথা বলেন।
এছাড়া বাইডেনের নির্বাচনী প্রচারাভিযানসহ সব রাজনৈতিক বিবৃতি স্থগিত করেছে। ডেমোক্রেটরা তাদের টেলিভিশন বিজ্ঞাপনগুলোও সরিয়ে নেওয়ার জন্য কাজ করছে।
যুক্তরাষ্ট্রের রাজনীতিবিদরা বলছেন, গণতন্ত্রে সহিংসতার কোনো স্থান নেই। যদিও এসব রাজনীতিবিদ খুব কম সময়ই একে অন্যের সঙ্গে একমত হতে পারেন।
সাবেক প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা, জর্জ ডব্লিউ বুশ, বিল ক্লিনটন এবং জিমি কার্টার সবাই এই সহিংসতার নিন্দা জানিয়েছেন। তারা বলেছেন, হামলায় ট্রাম্প গুরুতরভাবে আহত হননি, এতেই তারা বড় স্বস্তি পেয়েছেন।
তবে ট্রাম্পের কিছু ঘনিষ্ঠ মিত্র এবং সমর্থক ইতোমধ্যেই এই সহিংসতার জন্য প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনকে দোষারোপ করছেন। এর মধ্যে একজন রিপাবলিকান কংগ্রেসম্যান সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম এক্সে দেওয়া এক পোস্টে, (ট্রাম্পকে) ‘হত্যার প্ররোচনা দেওয়ার’ জন্য প্রেসিডেন্ট বাইডেনকে অভিযুক্ত করেছেন।
সিনেটর জেডি ভ্যান্স বলেছেন, নির্বাচনী প্রচারণার সময় বাইডেনের রাখা বিভিন্ন বক্তব্য সরাসরি এই ঘটনা ঘটার পেছনে ভূমিকা রেখেছে।
অন্যান্য রিপাবলিকান রাজনীতিবিদরাও অনুরূপ কথা বলছেন, যা আমেরিকার রাজনীতির এই বিপজ্জনক সময়ে তাদের বিরোধীরা নিন্দা করবেন বলেই মনে হচ্ছে।
ইতোমধ্যেই এ ঘটনায় পরস্পরকে দোষারোপ করা শুরু করেছেন। এটি ধীরে ধীরে সংঘাতে রূপ নিতে পারে। আর এটি আগামী নভেম্বরের ভোটের আগে নির্বাচনী প্রচারণাকে কোথায় নিয়ে
যাবে তা দেখার বিষয়।