শিরোনাম
বাণিজ্য সম্ভাবনায় ‘সেভেন সিস্টার্স’ দুবাইয়ে বিপু-কাজলের ২০০ কোটির দুই ভিলা পাচারের ১৭ লাখ কোটি ফেরাবে কে,প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের দিকে তাকিয়ে সবাই শিক্ষার্থীদের পরিকল্পিতভাবে বিতর্কিত করার চেষ্টা করা হচ্ছে ঢাকা-দিল্লি পররাষ্ট্রসচিব বৈঠক ডিসেম্বরে, শেখ হাসিনার প্রত্যর্পণ নিয়ে আলোচনা হবে কি এবার মারা গেলেন পরীমণির প্রথম সিনেমার পরিচালক জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে স্থানীয় সরকার নির্বাচন আয়োজনের পরামর্শ সরাসরি ভোটে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের সুপারিশ, বদিউল বললেন, ‘বিবেচনায় রয়েছে’ বান্দরবানে নৌকা বাইচ দিয়ে ক্রীড়া মেলা শুরু রাঙ্গামাটিতে সাফজয়ী পাহাড়ের তিন কন্যাকে উষ্ণ সংবর্ধনা

পিএসসির প্রশ্নফাঁস কেলেঙ্কারি রেলওয়ের প্রশ্ন কেনেন ১৩ কোটি টাকায়!

রিপোর্টার
  • আপডেট সময় বৃহস্পতিবার, ১১ জুলাই, ২০২৪
  • ১০৭ দেখা হয়েছে

ডেস্ক রির্পোট:- পিএসসির প্রশ্নফাঁস কেলেঙ্কারির ঘটনায় কেঁচো খুঁড়তে সাপ বেরিয়ে আসছে। প্রশ্ন ফাঁসের সঙ্গে খোদ পিএসসির একাধিক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা জড়িত বলে সিআইডির তদন্তে জানা গেছে। প্রশ্ন ফাঁসের কেলেঙ্কারির ঘটনায় পিএসসির অনেক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা আছেন আতঙ্কে। তদন্তকারী কর্মকর্তারা এসব কর্মকর্তাকে নজরদারিতে রেখেছেন। প্রশ্ন ফাঁস মামলার সিআইডির তদন্তকারী কর্মকর্তারা পিএসসির একজন সিনিয়র সদস্যকে জিজ্ঞাসাবাদ করতে পারেন বলে জানা গেছে।

কারণ ওই সদস্যের গাড়িচালককে জিজ্ঞাসাবাদ করতে গিয়ে যে চাঞ্চল্যকর তথ্য পাওয়া গেছে, তা যাচাই-বাছাই করতে তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে। এই চক্রের অন্যতম হোতা আবেদ আলী সাম্প্রতিক সময়ে রেলওয়ের সাব-অ্যাসিস্ট্যান্ট ইঞ্জিনিয়ার পদে নিয়োগ পরীক্ষার যে প্রশ্নপত্র ফাঁস করেছেন, সেই প্রশ্ন তিনি পিএসসির এক কর্মকর্তার কাছ থেকে ১৩ কোটি টাকায় কিনেছিলেন। ওই কর্মকর্তা আবার তার লোকজনকে ১৩ কোটি টাকার ভাগ দিয়েছিলেন বলে জানা গেছে।

আবেদ ১৩ কোটি টাকা দিয়ে প্রশ্নপত্র কিনে তিনি বিভিন্ন জনের কাছে বিক্রি করেছেন। প্রশ্নের বিনিময়ে নিয়েছেন ১ থেকে ৩ কোটি টাকা। প্রশ্ন ফাঁস এবং এই কাজকে জোরদার করতে আবেদ নিজেই ৯টি হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ তৈরি করেছিলেন। এসব গ্রুপে নিজেদের গোপন তথ্য তারা শেয়ার করতেন। এই ৯ গ্রুপে কখন কোন পরীক্ষা হবে, প্রশ্ন কে তৈরি করবে, কার কাছ থেকে প্রশ্ন আনা হবে, প্রশ্ন নিয়ে আসতে অসুবিধা হলে কাকে তাদের ভাষায় (মেডিসিনের ভাগ) অর্থাৎ টাকার ভাগ লাগবে তা তারা শেয়ার করতেন। এই শেয়ার হওয়া কথাগুলো তারা আবার দ্রুতই মুছে দিতেন। যাতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে গ্রেপ্তার হলে কেউ যাতে বুঝতে না পারে। ঢাকা, নারায়ণগঞ্জ, মুন্সীগঞ্জ ও চট্টগ্রাম এলাকায় তার হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ চালু ছিল। এই গ্রুপের সদস্যদের ধরতে অভিযান চালাচ্ছে সিআইডির বিশেষ টিম।

সোমবার দিনভর রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে আবেদ আলীসহ মোট ১৭ জনকে গ্রেপ্তার করে সিআইডি। প্রশ্ন ফাঁসের ঘটনায় ওই দিন রাতে রাজধানীর পল্টন থানায় বাংলাদেশ সরকারি কর্ম কমিশন আইনে সিআইডির উপপরিদর্শক নিপ্পন চন্দ্র চন্দ বাদী হয়ে মামলা করেন। মামলায় ৩১ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাতপরিচয় ৫০-৬০ জনকে আসামি করা হয়েছে।

গ্রেপ্তাররা হলেন পিএসসির উপপরিচালক মো. আবু জাফর ও মো. জাহাঙ্গীর আলম, সহকারী পরিচালক মো. আলমগীর কবির, অফিস সহায়ক খলিলুর রহমান ও অফিস সহায়ক (ডিসপ্যাচ) সাজেদুল ইসলাম, সাবেক সেনাসদস্য নোমান সিদ্দিকী, ঢাবির সাবেক শিক্ষার্থী বর্তমানে মিরপুরের ব্যবসায়ী আবু সোলায়মান মো. সোহেল, অডিটর প্রিয়নাথ রায়, ব্যবসায়ী মো. জাহিদুল ইসলাম, নারায়ণগঞ্জ পাসপোর্ট অফিসের নিরাপত্তা প্রহরী শাহাদাত হোসেন, ঢাকার ইমিগ্রেশন ও পাসপোর্ট অফিসে কর্মরত মো. মামুনুর রশীদ, শহিদ সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালের মেডিকেল টেকনিশিয়ান মো. নিয়ামুন হাসান, ব্যবসায়ী সহোদর সাখাওয়াত হোসেন, সায়েম হোসেন ও লিটন সরকার।

এ বিষয়ে সিআইডির জনসংযোগ বিভাগের এসপি আজাদ রহমান জানান, মামলার এজাহারে থাকা অন্য পলাতক আসামিদের ধরতে অভিযান চলছে।

মামলার তদন্তের সঙ্গে সম্পৃক্ত সিআইডির একাধিক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, ধূর্ত-প্রকৃতির আবেদ অনেক দিন আগে থেকে এই প্রশ্ন ফাঁস চক্রের সঙ্গে জড়িত। আবেদ আলী প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে দাবি করেছেন যে তিনি জোট সরকারের সময় বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা ভোগ করেছেন। রাকিব নামে বেসরকারি ব্যাংকের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার মাধ্যমে জেলে থাকা এক প্রভাবশালী ব্যক্তির সঙ্গে তার সম্পর্ক গড়ে উঠেছিল।

তিনি তার নাম ভাঙিয়ে বিভিন্ন স্থানে সুযোগ-সুবিধা নিয়েছেন। তবে তিনি এও দাবি করেছেন যে জোট সরকার চলে যাওয়ার পরও তিনি বর্তমান সরকারের একাধিক ভিআইপির সঙ্গে সম্পর্ক গড়ে তুলে বিভিন্ন অপর্কম করেছেন। তিনি দাবি করেছেন, তিনি সবাইকে টাকা দিয়ে ম্যানেজ করেছেন।

সূত্র জানায়, আবেদের সঙ্গে পিএসসির আরও তিন গাড়িচালকের সঙ্গে সম্পর্ক রয়েছে। যারা পিএসসির বিভিন্ন কর্মকাণ্ডের ব্যাপারে আবেদকে তথ্য দিয়ে সহযোগিতা করেছেন। আবেদের কাছে ওই তিনজন গাড়িচালকের নাম জানতে পেরে সিআইডির তদন্তকারী কর্মকর্তারা তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করেন। তারা আবার কিছু চাঞ্চল্যকর তথ্য দিয়েছেন। তাদের তথ্যগুলো এখন যাচাই করা হচ্ছে।

তদন্তকারীদের ধারণা, এই ঘটনার সঙ্গে বড় বড় রাঘববোয়াল জড়িত থাকতে পারেন। তাদের আইনের আওতায় আনা হতে পারে।

সিআইডির একাধিক কর্মকর্তা জানান, মামলার এজাহারে থাকা নামীয় আরও ১৪ জন আসামিকে ধরতে সাঁড়াশি অভিযান চালাচ্ছে সিআইডির বিশেষ টিম। ঢাকা ও ঢাকার বাইরের বিভিন্ন জেলায় তাদের ধরতে অভিযান চলছে। তবে অনেক আসামি মোবাইল ফোন বন্ধ করে দেওয়ায় তাদের অবস্থান নির্ণয় করতে পারছে না সিআইডি। প্রথাগত সোর্স এবং বিভিন্ন জেলায় এসপিদের কাছে পলাতকদের বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য পাঠানো হয়েছে, যাতে তাদের দ্রুতই গ্রেপ্তার করা যায়।

পোস্টটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরো
© All rights reserved © 2023 Chtnews24.com
Website Design By Kidarkar It solutions