বান্দরবানের রুমা-থানচি পুরোপুরি বিপদমুক্ত না হওয়া পর্যন্ত যৌথ বাহিনীর অভিযান চলবে

রিপোর্টার
  • আপডেট সময় শুক্রবার, ২৮ জুন, ২০২৪
  • ৮৫ দেখা হয়েছে

বান্দরবান:- বিজিবি’র মহাপরিচালক মেজর জেনারেল মোহাম্মদ আশরাফুজ্জামান সিদ্দিকী বলেছেন, বান্দরবানে এখনো যৌথ বাহিনীর অপারেশন চলছে। ইতিমধ্যে অনেক সফলতাও এসেছে। রুমা–থানচি পুরোপুরি বিপদমুক্ত ও জনসাধারণের জন্য সম্পূর্ণ নিরাপদ না হওয়া পর্যন্ত যৌথ বাহিনীর অভিযান চলবে। বিচ্ছিন্ন সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর অপরাধ বন্ধ না হওয়া পর্যন্ত অপারেশন চলমান থাকবে।
তিনি গতকাল বৃহস্পতিবার সাতকানিয়ায় বায়তুল ইজ্জত বর্ডার গার্ড ট্রেনিং সেন্টার এন্ড কলেজে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে ১০১ তম রিক্রুট ব্যাচের সমাপনী কুচকাওয়াজ পরিদর্শন ও অভিবাদন গ্রহণ শেষে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে এসব কথা বলেন। অপর এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, বিজিবি যে কোনো মূল্যে দেশের অখণ্ডতা ও সীমান্তে নিরাপত্তা রক্ষার জন্য বদ্ধ পরিকর। সেন্টমার্টিন বিষয়ে গুজব ছড়ানো হচ্ছে। এটা আসলেই গুজব। আর গুজব প্রতিরোধের মূলনীতি হলো গুজবে কান দেবেন না। আমারও অনুরোধ আপনারা গুজবে কান দেবেন না। আমি যেদিন দেখলাম বিষয়টি নিয়ে অনেকে অপপ্রচারের চেষ্টা করছে এর পরের দিনই আমি সেন্টমার্টিনে গিয়েছি। আমি সেখানে ঘুরে দেখেছি। সেখানে দায়িত্বরত বিজিবি সদস্যদের সাথে মতবিনিময় করেছি। সবাইকে সাবধান করে সব কিছু শেষ করে প্রমাণ করার চেষ্টা করেছি যে, এগুলো গুজব। প্রকৃত পক্ষেই গুজব। মিয়ানমারে বিজিপি এবং বিদ্রোহী দলের সাথে যুদ্ধ চলছে। নাফ নদীর তীরবর্তী এলাকায় তারা দুই দলের মধ্যে তুমুল যুদ্ধ চলছে। যখন দুইটি দলের মধ্যে যুদ্ধ চলে তার পাশাপাশি যে কেউ থাকলেতো গোলাগুলি হতে পারে। তাদের মধ্যে প্রথম যখন যুদ্ধ শুরু হয়েছিল তখন তুমব্রু ও ঘুমধুম সীমান্তে গোলাগুলি এদিকে এসেছিল। এটা আমাদের দেশের উপর কোনো কিছু নয়। এটা তাদের অভ্যন্তরীণ বিষয় নিয়ে গোলাগুলি। তবে তাদের গুলি আমাদের ট্রলারের দিকেও গেছে। আমরা বিজিপি এবং বিদ্রোহী দুই দলকে পরিস্কার ভাবে জানিয়ে দিয়েছি আমাদের ট্রলারে যেন এ ধরনের কিছু না হয়। বিষয়টি নিয়ে আমরা নিশ্চিত করেছি। ওইদিক দিয়ে যেসব ট্রলার যাবে তারা যেন বাংলাদেশের পতাকা উঁচু করে যায়। সেক্ষেত্রে কোনো অসুবিধা হবে না। এরপরও আমরা সাবধানতা অবলম্বন করেছি। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে বিকল্প পথে সেন্টমার্টিনে ট্রলার ও জাহাজ যাচ্ছে। একান্তই প্রয়োজনীয় কোনো কাজে না হলে শুধুমাত্র ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা এড়িয়ে যাওয়ার চেষ্টা করতে বলা হয়েছে। এরপর থেকে আর গোলাগুলি হয় না। এটা প্রমাণ করে বিষয়টি গুজব ছিল।

বর্ডার গার্ড ট্রেনিং সেন্টার এন্ড কলেজের বীর উত্তম মজিবুর রহমান প্যারেড গ্রাউন্ডে অনুষ্ঠিত কুচকাওয়াজ পরিদর্শন ও নবীন সৈনিকদের অভিবাদন গ্রহণ শেষে প্রধান অতিথির বক্তব্যে বিজিবি মহাপরিচালক বলেন, শৃঙ্খলাই হচ্ছে সৈনিকের মূলনীতি। আদেশ ও কর্তব্য পালনে যে কখনো পিছপা হয় না সে–ই প্রকৃত সৈনিক, বীর যোদ্ধা। সীমান্তের অতন্দ্র প্রহরী বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের প্রধান দায়িত্ব হচ্ছে সীমান্ত প্রহরার মাধ্যমে দেশের সার্বভৌমত্ব ও অখণ্ডতা রক্ষা করা। বিজিবি হবে সীমান্তের নিরাপত্তা ও আস্থার প্রতীক। এজন্য নবীন সৈনিকদেরকে তিনি সততা ও সত্যবাদিতা, আনুগত্য, নিষ্ঠা এবং শৃঙ্খলার সাথে দায়িত্ব পালন করার নির্দেশ দেন। নবীন সৈনিকদের কুচকাওয়াজ পরিদর্শন ও অভিবাদন মঞ্চে বর্ডার গার্ড ট্রেনিং সেন্টার এন্ড কলেজের কমান্ড্যান্ট ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এ বি এম নওরোজ এহসান ও লে. কর্নেল মো. মনিরুল ইসলাম উপস্থিত ছিলেন।

বিজিবির মহাপরিচালক মেজর জেনারেল মোহাম্মদ আশরাফুজ্জামান সিদ্দিকী নবীন ১০১ তম রিক্রুট ব্যাচের সমাপনী কুচকাওয়াজ পরিদর্শন ও অভিবাদন গ্রহণ শেষে শারীরিক উৎকর্ষতায় সেরা নবীন সৈনিক (পুরুষ) মো. আবু হুরায়রা, একই বিষয়ে (মহিলা) ছাবাতুন উল্লাহ জীম, ফায়ারিংয়ে মো. শাহিন উদ্দিন ও সর্ববিষয়ে সেরা নবীন সৈনিক মো. মিনহাজ হোসেন রাফিকে ক্রেস্ট প্রদান করেন।

উল্লেখ্য, ১০১ তম রিক্রুট ব্যাচে ৫২০ জন পুরুষ ও ৩৬ জন মহিলা দীর্ঘ ২৪ সপ্তাহের প্রশিক্ষণ শেষ করে কুচকাওয়াজের মাধ্যমে সৈনিক জীবনে পদার্পন করেন।

পোস্টটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরো
© All rights reserved © 2023 Chtnews24.com
Website Design By Kidarkar It solutions