শিরোনাম
বাণিজ্য সম্ভাবনায় ‘সেভেন সিস্টার্স’ দুবাইয়ে বিপু-কাজলের ২০০ কোটির দুই ভিলা পাচারের ১৭ লাখ কোটি ফেরাবে কে,প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের দিকে তাকিয়ে সবাই শিক্ষার্থীদের পরিকল্পিতভাবে বিতর্কিত করার চেষ্টা করা হচ্ছে ঢাকা-দিল্লি পররাষ্ট্রসচিব বৈঠক ডিসেম্বরে, শেখ হাসিনার প্রত্যর্পণ নিয়ে আলোচনা হবে কি এবার মারা গেলেন পরীমণির প্রথম সিনেমার পরিচালক জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে স্থানীয় সরকার নির্বাচন আয়োজনের পরামর্শ সরাসরি ভোটে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের সুপারিশ, বদিউল বললেন, ‘বিবেচনায় রয়েছে’ বান্দরবানে নৌকা বাইচ দিয়ে ক্রীড়া মেলা শুরু রাঙ্গামাটিতে সাফজয়ী পাহাড়ের তিন কন্যাকে উষ্ণ সংবর্ধনা

প্রশাসনে উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ তদন্ত হয়, শাস্তি হয় না,দুর্নীতিবাজরাই প্রমোশনে এগিয়ে

রিপোর্টার
  • আপডেট সময় মঙ্গলবার, ২৫ জুন, ২০২৪
  • ১৭১ দেখা হয়েছে

ডেস্ক রির্পোট:- সচিবদের প্রতি প্রধানমন্ত্রীর ‘দুর্নীতির বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতি’ নির্দেশনা বাস্তবায়ন নেই। শুধু মাঠ প্রশাসন নয়, দুর্নীতির সঙ্গে জড়িয়ে পড়া প্রশাসনে উচ্চপদস্থ কর্মকর্তারাদের বিরুদ্ধে দুর্নীতি অভিযোগের তদন্ত করা হয়, কিন্তু কি ধরনের শাস্তি হয় তা প্রকাশ করা হয় না। আবার দুর্নীতির দায়ে অভিযুক্তরাই বার বার পদোন্নতি পাচ্ছেন। সা¤প্রতিক সময়ে উচ্চ পদস্থ বর্তমান ও সাবেক কর্মকর্তাদের দুর্নীতির ঘটনায় দেশে বিদেশে আলোচনা সমালোচনা চলছে। আর এসব ঘটনায় খোদ সরকারকে কিছুটা হলেও বিব্রতকর পরিস্থিতির মুখোমুখি হতে হচ্ছে। সরকারের দায়িত্বশীল সূত্রগুলো বলছে, সরকারি কর্মকর্তা কর্মচারীদের মধ্যে শুদ্ধি অভিযান পরিচালনা করা হবে। কারা অবৈধভাবে সম্পদ বানিয়েছে, কারা বেপরোয়া ভাবে দুর্নীতি করছে সে ব্যাপারে সব তথ্য উদ্ধার করা হবে এবং পুরো প্রশাসনের কর্মকর্তা কর্মচারীদেরকে জবাবদিহিতার আওতায় আনতে হবে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দুর্নীতির বিরুদ্ধে শূন্য সহিষ্ণুতা নীতি ঘোষণা করেছেন।

জানতে চাইলে আন্তর্জাতিক দুর্নীতি-বিরোধী সংস্থা ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি) নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, দুর্নীতির দায়ে যাদের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে তাদের অনেকেই প্রজাতন্ত্রের নিম্নপদস্থ কর্মচারী। কোন মন্ত্রণালয়ে বা সরকারি সংস্থায় দুর্নীতির জন্য উচ্চ পদস্থ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে মামলা দায়েরের নজির দেখা যায় না। সরকারি ও স্বায়ত্বশাসিত কিছু প্রতিষ্ঠানে ব্যাপক দুর্নীতি থাকলেও সেইসব প্রতিষ্ঠানে কর্মরত শীর্ষ কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে মামলা হবার নজির নেই।

গত রোববার সরকারি কর্মকর্তাদের সম্পদের হিসাব প্রদান প্রসঙ্গে জানতে চাইলে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেন, প্রত্যেক সরকারি কর্মকর্তা চাকরিতে প্রবেশের সময় সম্পদে হিসাব দাখিল করে থাকেন এবং সময় সময় তারা সেটা জমাও দেন। এ নিয়ে নতুন করে কোনো আইন করার প্রয়োজন নেই।

এ বিষয়ে পিএমআরএসের চেয়ারম্যান ও সাবেক সচিব মো. ইসমাইল জবিউল্লাহ বলেন, প্রশাসনের রন্ধ্রে রন্ধ্রে দলীয় কর্মকর্তাদের বসানোর কারণেপ্রশাসনে উচ্চপদস্থ কর্মকর্তারা দুর্নীতিতে জড়িয়ে পড়ছে। এ কারণে তাদের বিরুদ্ধের অভিযোগ তদন্ত হয়। কিন্তু তাদের শাস্তি দেয়া হয় না। তাদের আবার প্রমোশন দিচ্ছে বারবার। এ জন্য দুনীতির তথ্য প্রকাশ পাচ্ছে।

জনপ্রশাসন বিশেষজ্ঞ ও জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সাবেক অতিরিক্ত সচিব ফিরোজ মিয়া বলেন, এমন দুর্নীতির ঘটনায় দুর্বল শাস্তি দিলে দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তারা দুর্নীতি করতে আরও উৎসাহিত হবে। দুর্নীতির বিরুদ্ধে ১৯৮৫ সালের শৃঙ্খলা ও আপিল বিধিমালা কঠোর ছিল। ওই বিধিমালা বহাল থাকলে দুর্নীতিবাজ প্রমাণিত হওয়া কর্মচারীকে বাধ্যতামূলক অবসরে পাঠাতে হতো। কিন্তু ২০১৮ সালে বিধিমালাটি দুর্বল করে ফেলায় দুর্নীতি করেও কঠোর শাস্তি পাচ্ছে না দুর্নীতিবাজরা। এটা প্রশাসনের জন্য ইতিবাচক ফল আনবে না।

দেশে বর্তমানে প্রায় ১৫ লাখ সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারী আছেন। চাকরিজীবীর জবাবদিহি নিশ্চিত করতে আচরণ বিধিমালায় এ নিয়ম যুক্ত করা হয়। সরকারি কর্মচারীদের প্রতি পাঁচ বছর পরপর সম্পদের হিসাব জমা দেওয়ার বিধান ১৯৭৯ সালের সরকারি কর্মচারী কর্মকর্তা চাকরি বিধিমালা অনুযায়ী প্রতিবছর সম্পদের বিবরণ দাখিল করা সরকারি কর্মকর্তা এবং কর্মচারীদের জন্য বাধ্যতামূলক। কিন্তু প্রশাসনের কর্মকর্তারা এই নিয়ম মানছেন না। ফলে একের পর এক উচ্চপদস্থ থেকে শুরু করে মাঝারি পর্যায়ের কর্মকর্তাদের নিয়ে অনিয়ম ও দুর্নীতির ঘটনা প্রকাশ্য হচ্ছে। সা¤প্রতিক সময়ে উচ্চ পদস্থ বর্তমান ও সাবেক কর্মকর্তাদের দুর্নীতির ঘটনায় দেশে বিদেশে আলোচনা সমালোচনা চলছে। আর এসব ঘটনায় খোদ সরকারকে কিছুটা হলেও বিব্রতকর পরিস্থিতির মুখোমুখি হতে হচ্ছে। পাশাপাশি জনপ্রশাসনের পদস্থ কর্মকর্তাদের বেপরোয়া দুর্নীতির কারণে সরকারের স্বচ্ছতা এবং জবাবদিহিতা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছে অনেকেই। তাদের মতে, বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বে থাকা পদস্থ কর্তাব্যক্তিদের অতীত রেকর্ড, তাদের সম্পদ এবং আয়-ব্যয়ের উৎস সম্পর্কে তথ্য যাচাই বাছাই করা উচিত। তাছাড়া খোদ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দুর্নীতি দমনে ব্যবস্থা নিতে সচিবদের প্রতি নির্দেশ প্রধানমন্ত্রীর থাকলেও তা বাস্তবায়ন হচ্ছে না। প্রশাসনে গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বে থাকা ব্যক্তিরা লাগামহীন দুর্নীতি করেছেন, বিপুল বিত্ত-বৈভবের মালিক হয়েছেন। তাদের এই অবৈধ কর্মকান্ড সরকারের ওপর এক ধরনের নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে। এটি সরকারের নীতি নির্ধারক মহলও অনুভব করছে। দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) এসব কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে দুর্নীতি, অনিয়ম ও অবৈধ সম্পদের অনুসন্ধানে তদন্তে নেমেছে। পরবর্তীতে রহস্যজনক কারণে তদন্তের কার্যক্রম থমকে গেছে। তাই লোক দেখানো শুধু অনুসন্ধানই হয়, শাস্তি হয় না বলে সংশ্লিষ্টিএকটি সূত্রে এ তথ্যে জানা গেছে।

সরকারের দায়িত্বশীল সূত্রগুলো বলছে, সরকারি কর্মকর্তা কর্মচারীদের মধ্যে শুদ্ধি অভিযান পরিচালনা করা হবে। কারা অবৈধভাবে সম্পদ বানিয়েছে, কারা বেপরোয়া ভাবে দুর্নীতি করছে সে ব্যাপারে সব তথ্য উদ্ধার করা হবে এবং পুরো প্রশাসনের কর্মকর্তা কর্মচারীদেরকে জবাবদিহিতার আওতায় আনতে হবে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দুর্নীতির বিরুদ্ধে শূন্য সহিষ্ণুতা নীতি ঘোষণা করেছেন। ২০২৪ সালের নির্বাচনে আওয়ামী লীগের ইশতেহারে দুর্নীতির বিরুদ্ধে যুদ্ধের ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। আওয়ামী লীগ দুর্নীতির বিরুদ্ধে কথা বলছে এর আগে থেকে। ২০১৮ সালে নির্বাচনের পর শেখ হাসিনা তৃতীয়বারের মতো প্রধানমন্ত্রী হন। দায়িত্ব গ্রহণ করে তিনি জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় গিয়েছিলেন এবং সেখানে তিনি সরকারি কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করেন। তাদের উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে প্রধানমন্ত্রী সাফ জানিয়ে দিয়েছিলেন যে, সরকারি কর্মকর্তা কর্মচারীদের বেতন ভাতা বাড়ানো হয়েছে, এখন আর দুর্নীতি বরদাস্ত করা হবে না। কিন্তু প্রধানমন্ত্রীর এই সতর্কবার্তাকে আমলে নেননি অনেক সরকারি কর্মকর্তারা। তারা তাদের আখের গোছানোর জন্য অবৈধ পন্থাকে বেছে নিয়েছেন। একের পর এক তাদের দুর্নীতি বিবরণ গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে।

গত ৫ ফেব্রুয়ারি প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত সচিব সভায় দুর্নীতি দমনে ব্যবস্থা নিতে সচিবদের প্রতি নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। প্রশাসনের শীর্ষ কর্মকর্তা সচিবদের নিয়ে অনুষ্ঠিত এই বৈঠক নির্ধারিত কোনো আলোচ্য বিষয় ছিল না। তবে বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলাচনা হলেও ওই সভায় দুর্নীতির বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতি অনুসরণ করা হবে বলে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন। ওই বৈঠকে ১৫ থেকে ১৬ জন সচিব বক্তব্য দেন। ১১ জন সচিব সংশ্লিষ্ট বিষয়ের ওপর আলোচনা করেন। তার ভিত্তিতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দুর্নীতি দমনে ব্যবস্থা নেওয়াসহ একগুচ্ছ নির্দেশনা দেন। ওইদিন বিকেলে সচিবালয়ে সংবাদ সম্মেলনে বিষয়বস্তু সাংবাদিকদের সামনে তুলে ধরেন মন্ত্রিপরিষদ সচিব মো. মাহবুব হোসেন। মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, দুর্নীতির বিরুদ্ধে প্রধানমন্ত্রী ‘জিরো টলারেন্সের’ কথা বলেছেন। তিনি বলেছেন, দুর্নীতি দমনের দায়িত্ব শুধু দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) না। দুর্নীতি নিরসন ও প্রতিরোধের দায়িত্ব প্রতিটি মন্ত্রণালয়েরও। তাই যেখানে যেখানে ‘সার্ভিস পয়েন্ট’ আছে, সেখানে নজরদারি বা ভিন্নতর কৌশল অবলম্বন করে যে প্রক্রিয়া নেওয়া দরকার, তা নিয়ে দুর্নীতি দমনকে নির্দেশনা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী।

সরকারের দায়িত্বশীল একাধিক সূত্র বলছে, সা¤প্রতিক সময়ে সাবেক পুলিশপ্রধান বেনজীর আহমেদ, এনবিআরের কর্মকর্তা মতিউর রহমানের দুর্নীতির ঘটনায় সকলকে হতবাক করে দিয়েছে। এই পরিস্থিতিতে সরকার প্রশাসনে কারা দুর্নীতি করছে এবং কীভাবে দুর্নীতি করছে সে ব্যাপারে একটি স্বচ্ছ তদন্ত করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে। দু বছর আগে সরকারের পক্ষ থেকে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল যে সরকারি কর্মকর্তা কর্মচারীদের আয়ের বিবরণ প্রকাশ করতে হবে। তাদের সম্পদের বিবরণ প্রতি বছর দাখিল করতে হবে। কিন্তু দুই বছরেও এই সিদ্ধান্ত বাস্তবায়িত হয়নি। শেষ পর্যন্ত উচ্চ পদস্থ কিছু কর্মকর্তাদের মধ্যে এক ধরনের অনীহার কারণেই সেই সিদ্ধান্ত বাস্তবায়িত হয়নি। প্রশ্ন উঠেছে-প্রশাসনে যদি সততা এবং ন্যায় নিষ্ঠা না থাকে তাহলে সরকারের ভাবমূর্তি প্রশ্নবিদ্ধ হতে বাধ্য। পাশাপাশি সরকারের ভাবমুর্তি নষ্ট হবে।

গত ২০১৮ সালে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে অভিযোগের নথি অনুযায়ী মাঠ প্রশাসনের প্রায় এক হাজার কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ঘুষ, অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ রয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর কার্যলয়ে সংযুক্ত যুগ্ম সচিব মো. মনির হোসেনের বিরুদ্ধে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় ও মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে বরিশাল বিভাগীয় কমিশনারকে তদন্ত করতে চিঠি দেয়া হয় গত বছরের ৬ আগস্ট। গাজীপুরের সাবেক জেলা প্রশাসক এ এ আলম, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক বেগম ফারজানা মান্নানের বিরুদ্ধে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে গত বছরের ৩১ আগস্ট ঢাকা বিভাগীয় কমিশনারের কাজে তদন্ত প্রতিবেদন চাওয়া হয়। অথচ এখন তা আসেনি। নরসিংদীর সাবেক জেলা প্রশাসক আবু হেনা মোর্শেদ জামান বর্তমানে স্থানীয় সরকার বিভাগের সচিব তার বিরুদ্ধে তদন্ত করছেন ঢাকা বিভাগীয় কমিশনার। কিশোরগঞ্জের সাবেক ডিসি মো. সিদ্দিকুর রহমানের বিরুদ্ধে দুর্নীতির তদন্ত করছেন ঢাকা বিভাগীয় কমিশনার। বান্দরবান পার্বত্য জেলার ডিসি দিলীপ কুমার বণিকের বিরুদ্ধে অভিযোগ তদন্ত করছেন চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিশনার। গাইবান্ধার সাবেক জেলা প্রশাসক মো. আব্দুস সামাদের বিরুদ্ধে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় (স্মারক নম্বর-৪৮৭) গত বছরের ২৬ এপ্রিল এবং বর্তমান রংপুরের জেলা প্রশাসক মুহাম্মদ ওয়াহিদুজ্জামানের বিরুদ্ধে গত বছরের ৯ সেপ্টেম্বর তদন্ত করতে দেয়া হয়েছে রংপুর বিভাগীয় কমিশনারকে। কুড়িগ্রামের সাবেক জেলা প্রশাসক বর্তমানে টাইঙ্গালের ডিসি নুরুল ইসলামের বিরুদ্ধে অভিযোগ তদন্ত করছেন রংপুর বিভাগীয় কমিশনার। জয়পুরহাটের সাবেক জেলা প্রশাসক মো. আ. রহিমের বিরুদ্ধে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় (স্মারক নম্বর-২২৭) গত বছরের ১৪ মে রাজশাহী বিভাগীয় কমিশনারকে তদন্ত করতে দেয়। কুড়িগ্রামের সাবেক ডিসি সুলতানার বিরুদ্ধে অভিযোগ তদন্ত করে সাময়িব বরখাস্ত পযন্ত করা হয়। পরে তাকে আবার পদোন্নতি দেয়া হয়েছে। এখনো তার বিরুদ্ধে তদন্ত জানানো হয়। লালমনিরহাটের সাবেক জেলা প্রশাসক এবং হাবিবুর রহমানের বিরুদ্ধে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় (স্মারক নম্বর-২২৪) ওই বছরের ১৪ মে রংপুর বিভাগীয় কমিশনারকে তদন্তের দায়িত্ব দেয়। চট্টগ্রামের সাবেক ডিসি মো.সামসুল আরেফিন, সাবেক অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক আব্দুল জলিল এবং লক্ষীপুরের সাবেক ডিসি এ কে এম টিপু সুলতানের বিরুদ্ধে অভিযোগ তদন্তের দায়িত্ব দেয়া হয় চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিশনারকে। সিলেটের সাবেক জেলা প্রশাসক মো. জয়নাল আবেদীনের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ (স্মারক নম্বর-১৭৩) ওই বছরের ১৫ মার্চ তদন্ত করতে দেয় সিলেট বিভাগীয় কমিশনারকে। গত ১০ বছরেও কোনো প্রতিবেদন আলোর মুখ দেখেনি। কিন্তু এসব কর্মকর্তাদের দেয়া হয়েছে পদোন্নতি করা হয়েছে বদলী। আবার বর্তমানে সেই কর্মকর্তারা অনেকেই হয়েছে সচিব ও ডিজি। গত ১২ বছরে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়, মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ এবং জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে এ সংক্রান্ত অভিযোগের পাহাড় জমে আছে। তবে এর ব্যতিক্রমও আছে। এ সরকারের আমলে কোনো কোনো ডিসি অফিস ও উপজেলা মাঠ প্রশাসনের কাজের সুনামও রয়েছে। তারা দায়িত্বশীল ভাবে কাজও করছেন। এছাড়া আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সাবেক সচিব শেখ মোহাম্মদ সলীম উল্লাহ বিরুদ্ধে অনেক অভিযোগ থাকলেও তার বিরুদ্ধে তদন্ত হয়নি বলে জনপ্রশাসন মন্ত্রনালয় সূত্রে জানা গেছে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক সরকারের ঘনিষ্ট আছেন একাধিক কর্মকর্তা অনেকেই সরকারের লেবাস নিয়ে কৌশলে অনিয়ম ও দুর্নীতির মাধ্যমে বিপুল অর্থ সম্পদের মালিক হতে চাইছেন। এরা দুর্নীতি করার জন্য সরকারের ছত্রছায়ায় এসেছেন। আর তাদের কারণেই সরকারের অর্জিত সাফল্য অনেকাংশে ¤øান হয়ে যাচ্ছে। অথচ তারাই সরকারের উচ্চ পদে থেকে অনিয়ম এবং দুর্নীতি করে দেশে বিদেশে সম্পদ গড়ে তুলেছেন।

সূত্র মতে, বর্তমান সরকারের সাবেক ও বর্তমান সচিবের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ অনুসন্ধান করছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। এদের মধ্যে বর্তমান ও সাবেক সচিব কয়েকজন তালিকায় রয়েছেন। পৃথক পৃথক দুর্নীতির অভিযোগে এদের বিরুদ্ধে অনুসন্ধান করা হচ্ছে। গত ২০১৪ সালে দায়িত্বে থাকা দায়িতত্বে থাকা একাধিক সাবেক সচিব ও অতিরিক্ত সচিব রয়েছেন। তারা সরকারের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রণালয় ও প্রকল্পে নিয়োজিত ছিলেন। এছাড়া বর্তমান একটি মন্ত্রণালয়ে সচিবের দায়িত্বে রয়েছেন এমন এক কর্মকর্তার অভিযোগ নিয়ে দুদক তন্ত করছে। স¤প্রতি (২৫ মে) দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)’র চেয়ারম্যান দুর্নীতি দমন কমশিনরে (দুদক) চেয়ারম্যান মোহাম্মদ মঈনউদ্দীন আবদুল্লাহ হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড পীস ফর বাংলাদেশ (এইচআরপিবি) আয়োজতি এক সেমিনারে বলেছেনে, দুর্নীতি জিইয়ে রেখে উন্নয়ন করলে সেটি টেকসই হবে না। নাগরকিরা যদি দায়িত্ব পালনে সচেতন হন এবং পারবিারকি পর্যায়ে দুর্নীতির বিরুদ্ধে ভ‚মিকা রাখেন তাহলে ফলাফল হবে আশাপ্রদ। সরকারি প্রতিষ্ঠানে যদি সঠিকভাবে দায়ত্বি পালন হয়, তাহলে দুদকে অভিযোগই আসবে না।ইনকিলাব

পোস্টটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরো
© All rights reserved © 2023 Chtnews24.com
Website Design By Kidarkar It solutions